কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচনে শেষ চার কেন্দ্রের ভোট গণনা ও ফল ঘোষণার আগে রিটার্নিং অফিসারের মোবাইলে কথা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
ওই সময় বারবার কাদের সঙ্গে ফোনে কথা হচ্ছিল? এমন প্রশ্নের জবাবে জেলা নির্বাচন কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে রিটার্নিং অফিসার শাহেদুন্নবী চৌধুরী বলেন, তখনকার পরিস্থিতি সম্পর্কে আমি ফোনে কথা বলছিলাম সিইসি, ডিসি ও এসপির সঙ্গে। অন্য কারোর ফোন আসেনি।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণায় দেরি হওয়ার পেছনে ঝড় বৃষ্টি, বিদ্যুৎ চলে যাওয়া ও দুই পক্ষের গোলযোগকে দায়ী করেছেন রিটার্নিং অফিসার।
তিনি বলেন, এসব কারণে চারটি কেন্দ্রের ফল আসতে দেরি হয়েছে। প্রিজাইডিং অফিসারদের ফল তৈরিতে বিলম্ব হয়েছে।
আধা ঘণ্টার বেশি কেন ভোটের ফলাফল ঘোষণা স্থগিত ছিল? জবাবে রিটার্নিং অফিসার বলেন, এটার পেছনে অন্য কোনো কারণ ছিল না। পরিস্থিতি প্রতিকূলে ছিল বিধায় সময় লেগেছে৷ দুই পক্ষই অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করে৷
মনিরুল হক সাক্কুর অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, পরাজিত প্রার্থী চাইলে আইনের আশ্রয় নিতে পারেন। তবে নতুন করে ফলাফল দেওয়া সম্ভব নয়। ফল ঘোষণার সময় তারা কেন অভিযোগ জানাননি। কারণ তাদের হাতে তো রেজাল্ট শিট ছিল।
প্রসঙ্গত, কুসিক নির্বাচনে ফল ঘোষণার শেষ সময়ে এসে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কুর সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক হট্টগোল শুরু হয়। ফল ঘোষণার আগে দুই প্রার্থীরই জয়ী হওয়ার গুজব ছড়িয়ে এই হট্টগোল হয়। এ কারণে কুমিল্লা জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তন থেকে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা প্রায় এক ঘণ্টা বন্ধ রাখা হয়।
উল্লেখযোগ্য কোনো সংঘাত-সহিংসতা ছাড়াই বুধবার শেষ হয় কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ভোটগ্রহণ। সকাল ৮টায় ভোট শুরু হয়ে শেষ হয় বিকাল ৪টায়। উৎসবমুখর পরিবেশেই এই নির্বাচন হয়েছে। ভোট শেষে তিন মেয়র প্রার্থীই সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তারা গণমাধ্যমকে বলেছেন, ভোট সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে। এজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সব সদস্যসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদও দিয়েছেন তারা।
বুধবার শেষ মুহূর্তে নানা নাটকীয়তার পর কুসিক নির্বাচনে নতুন নগরপিতা পায় আওয়ামী লীগ। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে মাত্র ৩৪৩ ভোটে জয় পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রিফাত।বুধবার রাত সাড়ে ৯টায় কুমিল্লা শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণ থেকে রিটার্নিং কর্মকর্তা বেসরকারিভাবে এ ফল ঘোষণা করেন। চূড়ান্ত ফলে আরফানুল হক রিফাত নৌকা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৫০ হাজার ৩১০ ভোট।
তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র মেয়রপ্রার্থী (বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত) মনিরুল হক সাক্কু টেবিল ঘড়ি প্রতীকে ৪৯ হাজার ৯৬৭ ভোট পেয়েছেন। বিএনপির বহিষ্কৃত আরেক নেতা নিজাম উদ্দিন কায়সার ঘোড়া প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ২৯ হাজার ৯৯ ভোট।রাতে ফল ঘোষণার শেষ সময়ে সৃষ্ট উত্তেজনা ছাড়া সারা দিন শান্তিপূর্ণভাবে উৎসবমুখর পরিবেশে শেষ হয় কুসিকের ভোটগ্রহণ।