শ্যামনগর প্রতিনিধি: শ্যামনগরে সাবেক ও বর্তমান আওয়ামীলীগ দুই ইউপি সদস্যের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে আমির আলী (২৮) নামের এক যুবক নিহত হয়েছে। শুক্রবার বিকালে উপজেলার রমজাননগর ইউনিয়নের টেংরাখালী গ্রামে ঐ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় উভয় পক্ষের অন্তত ২৩ জন আহত হয়। যার মধ্যে ১৭ জনকে শ্যামনগর হাসপাতাল ও সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে আব্দুল কাদের ও আব্দুস সোবহান নামের দু’জনের অবস্থা সংকটাপন্ন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায় শুক্রবার সকালে সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল বারীর সমর্থক নাদের আলীকে মারধর করে বর্তমান ইউপি সদস্য আব্দুল হামিদ লাল্টুর লোকজন। ঐ ঘটনার জেরে শুক্রবার বিকালে রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় আব্দুল বারীর কর্মী সমর্থকরা আব্দুল হামিদ লাল্টুর লোকজনকে গালিগালাজ করে। এসময় দু’পক্ষ বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়লে মুহুর্তের মধ্যে তা সংঘর্ষে রুপ নেয়। খবর পেয়ে আব্দুল হামিদ লাল্টু ছেলে মোখলেছুর রহমান মিলন, মেহেদি হাসান ও ভাই আনিছুর রহমানসহ ৩০/৩৫ জন কর্মী সমর্থক নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌছে সংঘর্ষে যোগ দেয়। এক পর্যায়ে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে ঢুকে সেখানে অবস্থানরত আব্দুল বারীর কয়েক সমর্থককে কুপিয়ে আহত করে। খবর পেয়ে রায়নগর নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
দু’পক্ষের সংঘর্ষে ২৩ জন মারাত্মকভাবে আহত হলেও আব্দুল হানান (৪০), ইব্রাহিম গাজী(৩০), আক্তার হোসেন (৩১), ইসমাইল হোসেন (৩৪), ইমাম আলী (২৭), নাছির উদ্দীন (২৮), সোবহান মোল্যা (৩৮), আব্দুস সাদেক (৪১), আলাউদ্দীন (২৭), মেহেদী হাসান বাবু(২৩), আব্দুল আজিজ (৫০), সিরাজ হোসেন (৪০), হাফিজুর রহমান, (৪০), মুকুল মোল্যা (৩৮), ফারুক গাজী (২৭)সহ ১৭ জনকে শ্যামনগর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে সংঘর্ষের সময় আহতদের শ্যামনগর হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসকরা আব্দুল বারীর ভাতিজা টেংরাখালী গ্রামের আবুল গাজীর ছেলে আমির হোসেনকে মৃত ঘোষণা করে। এছাড়া অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় আব্দুস সাকাতের ছেলে আব্দুল কাদের (৩৬) ও আব্দুস সোবহান (৫০)কে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
সংঘর্ষের বিষয়ে জানার জন্য আব্দুল হামিদ লাল্টুর ব্যক্তিগত মুটোফোনে যোগাযোগ করা হলে তার ভাই পরিচয়ে এক ব্যক্তি দাবি করেন মেম্বরকে মারতে বারী লোকজন নিয়ে এসেছিল। এখবরে গ্রামবাসী বাইরে বের হয়ে এসে বারীর লোকজনের নিয়ে আসা লাঠিশোটা দিয়ে তাদেরকে পিটিয়ে এলাকা থেকে তাড়িয়ে দেয়।
সাবেক ইউপি সদস্য ও ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সভাপতি আব্দুল বারী জানান, বিনা উস্কানীতে লাল্টু মেম্বর ও তার ছেলেদের নেৃতত্বে তার লোকজনের উপর হামলা করা হয়। সুন্দরবনের আত্মসমর্পনকারী কয়েক বনদস্যুকে নিয়ে লাল্টু তার লোকজনের উপর হামলা করে- দাবি করে তিনি বলেন, আহতদের হাসপাতালে নেয়ার পথেও তার লোকজনকে মারধর করা হয়েছে। তার ১৬ জন কর্মী সমর্থক আহত হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
এবিষয়ে রায়নগর নৌ-পুলিশ ফাড়ীর ইনচার্জ তারক বিশ^াস জানান, সংঘর্ষের খবরে ঘটনাস্থল পৌছে আহতদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ কাজী ওয়াহিদ মুর্শেদ জানান, খবর পেয়ে পুলিশ হাসপাতালে পৌছে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছে।