করোনার ধকল কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই হিমায়িত চিংড়ি রপ্তানিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব পড়েছে। সাড়ে ৫ মাস ধরে রাশিয়া ও ইউক্রেনে চিংড়ি রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। ইউরোপের অন্য দেশগুলোতেও কমেছে রপ্তানি। এতে বিপাকে পড়েছেন খুলনা অঞ্চলের রপ্তানিকারকরা।
রপ্তানিকারকরা জানান, করোনার কারণে ২০২০ সালের মার্চ থেকে গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চিংড়ি রপ্তানিতে ছিল মন্দা অবস্থা। সেই ধকল পুরোপুরি কাটিয়ে ওঠার আগেই শুরু হয় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এ কারণে রপ্তানি করা যায়নি প্রায় ৪৬ কোটি টাকার চিংড়ি।
মৎস্য পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে রাশিয়ায় রপ্তানি হয়েছিল ৭৩১ টন চিংড়ি, যার দাম ৫৮ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। ২০২১-২২ অর্থবছরে রপ্তানি হয়েছে ২৪০ টন, যার দাম ২০ কোটি ২৬ লাখ টাকা। ২০২০-২১ অর্থবছরে ইউক্রেনে রপ্তানি হয়েছিল ১১৯ টন চিংড়ি, যার দাম ১১ কোটি টাকা। ২০২১-২২ অর্থবছরে রপ্তানি হয়েছে ২৯ টন, যার দাম ৩ কোটি ২১ লাখ টাকা।
বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএফইএ) সহসভাপতি হুমায়ুন কবীর বলেন, যুদ্ধের কারণে রাশিয়া ও ইউক্রেনে চিংড়ি রপ্তানি বন্ধ। এর আগে খুলনার ২ জন রপ্তানিকারক রাশিয়ায় ১ কোটি টাকার চিংড়ি পাঠালেও সেই টাকা পাননি। রাশিয়ার ব্যাংকগুলোর ওপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে আটকে গেছে সেই টাকা।
বিএফএফইএর পরিচালক মো. রেজাউল হক বলেন, যুদ্ধের কারণে ইউরোপের দেশগুলোর অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। সে কারণে ইউরোপে হিমায়িত চিংড়ি রপ্তানি আগের তুলনায় কিছুটা কমেছে।
খুলনার মৎস্য পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ বিভাগের উপপরিচালক মো. আবু ছাইদ বলেন, যুদ্ধের প্রভাব খুলনা অঞ্চলের হিমায়িত চিংড়ি রপ্তানি খাতে পড়েছে। মৎস্য অধিদপ্তর সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি রপ্তানি আয় বাড়াতে তৎপর। রপ্তানিকারকরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হন সে বিষয়েও মৎস্য বিভাগ সচেষ্ট রয়েছে। বকেয়া টাকা ফেরত পেতে মৎস্য অধিদপ্তর পদক্ষেপ নেবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।