সব কিছুরই শেষ থাকে। পশ্চিমা আধিপত্যও এর বাইরে নয়। চলতি ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘর্ষ শেষ না হলেও, অন্য একটি জিনিসের সমাপ্তি উদিয়মান।
বিশ্বের মোড়ল পশ্চিমাদের আধিপত্য। এই যুদ্ধের মাধ্যমে ধীর গতিতে হলেও, শেষ হয়ে আসছে পশ্চিমা আধিপত্য। ওপর দিকে দিন দিন আধিপত্য বাড়ছে চীনের। এমনটাই মনে করেন সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার।
শিরোনামে শনিবার ডিচলে ফাউন্ডেশনের বার্ষিক অনুষ্ঠানে নিজ বক্তব্যে এমন মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধ দেখিয়ে দিচ্ছে পশ্চিমা আধিপত্যের অবসান এবং চীনের উত্থান ঘটছে।
‘ইউক্রেনের পর, পশ্চিমা নেতৃত্বের জন্য এখন কী শিক্ষণীয়?’ সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্ব দ্বিমেরুকেন্দি ক হবে এবং সম্ভাব্য বহু মেরুকেন্দি কও হতে পারে। চলতি শতাব্দীতে যে ভূ-রাজনৈতিক পরিবর্তন চীন থেকে আসবে, রাশিয়া থেকে নয়।’
রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের কারণে মারা গেছে হাজার হাজার মানুষ। পশ্চিমা বিশ্ব এবং রাশিয়ার সম্পর্কেও পড়েছে এর ছাপ। ১৯৬২ সালের কিউবান মিসাইল সংকটের পরে এই প্রথম দেখা গেল এমন চিত্র। মানুষ ভেবেছিলেন পারমাণবিক যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে বিশ্ব।
প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মতে, বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে রাশিয়ার সঙ্গে অর্থনৈতিক যুদ্ধে জড়াতে চায় পশ্চিমা বিশ্ব। অপর দিকে ক্রেমলিন জানিয়েছে, চীন ও ভারতের মতো শক্তির দিকে ঝুঁকবে রাশিয়া।
ব্লেয়ারের মতে, ইউক্রেন যুদ্ধে চীনের থেকে যেমন যুক্তিসঙ্গত ব্যবহার আশা করেছিল তা পায়নি পশ্চিমা দেশগুলো। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিংপিং বরাবরই সমর্থন করে গেছেন পুতিনকে। শুধু তাই নয়, রাশিয়ার ওপর জারি করা নিষেধাজ্ঞাগুলোকে ক্ষমতার অপব্যবহারের আখ্যাও দিয়েছেন তিনি।
করোনাভাইরাসের মহামারি এবং ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে পাশ্চাত্যের জনগণের একটা বিরাট অংশের জীবনমানে পতন ঘটেছে। টনি ব্লেয়ার বলেন, পাশ্চাত্যের রাজনীতি গোলযোগপূর্ণ, অতিমাত্রায় দলীয়, কুৎসিত, অনুৎপাদনশীল এবং সামাজিক মাধ্যম থেকে ইন্ধনপ্রাপ্ত যার প্রভাব পড়ছে অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে।
তিনি বলেন, ইউক্রেনে রাশিয়া যে সামরিক অভিযান শুরু করেছে তারপর পাশ্চাত্যের পুনরুজ্জীবনের পথ খুলে যাওয়া উচিত। ব্লেয়ার অনেকটা ভবিষ্যদ্বাণীর ধাঁচে আরও বলেন, ‘আমরা পাশ্চাত্য রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক আধিপত্যের অবসানের দিকে এগিয়ে চলেছি।’
তিনি আগের কথার সঙ্গে আরও বলেন, ‘আমাদের উচিত প্রতিরক্ষা খাতে আরও খরচ বাড়ানোর এবং সামরিক শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখা। যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্রদেশগুলোর নিজেদের এমনভাবে গড়তে হবে যাতে যেকোনো জায়গায় ঘটা যেকোনো ধরনের সংঘর্ষ অথবা সংকট মোকাবিলার সামর্থ্য তাদের থাকে।