নতুন শিক্ষাক্রমের অনেক শক্তিশালী ও ইতিবাচক দিক রয়েছে, কিন্তু সেগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা যাবে কি না, সেটি বড় প্রশ্ন। সম্ভাবনাময় এই শিক্ষাক্রমটি বাস্তবায়নে যেসব চ্যালেঞ্জ তৈরি হবে, সেগুলো কার্যকরভাবে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হলে নানাবিধ ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে সবচেয়ে বড় শঙ্কার জায়গা হলো এর বাস্তবায়ন-প্রক্রিয়া। গত দুই দশকে একাধিক শিক্ষাক্রম তৈরি করা হয়েছে, কিন্তু প্রতিবারই বাস্তবায়ন-প্রক্রিয়া হোঁচট খেয়েছে। একটি শিক্ষাক্রমের নানা উপাদান থাকে। বছরের প্রথম দিন পাঠ্যপুস্তক বিতরণে বাংলাদেশ বড় আকারে সাফল্য দেখিয়েছে, কিন্তু ব্যর্থতা রয়েছে শিক্ষক নির্দেশিকা যথাসময়ে তৈরি ও বিতরণে। শিক্ষকদের মানসম্মত প্রশিক্ষণ, তাদের জীবনমান উন্নয়ন তথা আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করা সময়ের দাবি। আমাদের শিক্ষক সমাজ আজও পূর্ণাঙ্গ (শতভাগ) উৎসব ভাতা থেকে বঞ্চিত, পান নামমাত্র চিকিৎসা ভাতা ও বাড়িভাড়া। তবে এই শিক্ষকদের বঞ্চিত করে কীভাবে নতুন শিক্ষাক্রম সহজে বাস্তবায়ন হবে তা ভাবনার বিষয়! সাম্প্রতিক সময়ের পাঠ্যপুস্তকগুলোতে বিষয়বস্তু ও উপস্থাপনায় উন্নতি ঘটলেও নানা সমালোচনা রয়েছে। খুব কম সময়ে পাঠ্যপুস্তক তৈরি ও তা যথাযথভাবে সম্পাদনা না করার অভিযোগ রয়েছে এনসিটিবির প্রতি, যার প্রভাব পড়ে বইয়ের মানের ওপর।
নতুন শিক্ষাক্রমে যা থাকছে (এক নজরে) :
ক) ২০২৩ সাল থেকে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সপ্তাহে (শুক্র ও শনিবার) দু’দিন ছুটি থাকবে। খ) পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। অর্থাৎ, দশম শ্রেণির আগে কোনো কেন্দ্রীয় বা পাবলিক পরীক্ষা নেই। গ) তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্তও কোনো পরীক্ষা থাকবে না। ঘ) চতুর্থ শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ৪০ আর একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে ৩০ শতাংশ মূল্যায়ন হবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। ঙ) বিজ্ঞান, মানবিক ও বিজনেস স্টাডিজ বলতে মাধ্যমিকে কোনো বিভাগ থাকবে না। এটি চালু হবে এইচএসসিতে। চ) দশম শ্রেণির পাঠ্যসূচির উপরই বোর্ড পরীক্ষায় এসএসসির ফল হবে। ছ) প্রাক্-প্রাথমিকের শিশুদের জন্য আলাদা বই থাকবে না, শিক্ষকেরাই শেখাবেন। জ) প্রাথমিকে পড়তে হবে আটটি বই। ঝ) নতুন শিক্ষাক্রমে প্রাক্-প্রাথমিক থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ১০ ধরনের শেখার ক্ষেত্র ঠিক করা হয়েছে। এগুলো হলোঃ-
১) ভাষা ও যোগাযোগ, ২) গণিত ও যুক্তি, ৩) জীবন ও জীবিকা, ৪) সমাজ ও বিশ্ব নাগরিকত্ব, ৫) পরিবেশ ও জলবায়ু, ৬) বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, ৭) তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি, ৮) শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য এবং সুরক্ষা, ৯) মূল্যবোধ ও নৈতিকতা ১০) শিল্প ও সংস্কৃতি।
এখন দেখা যাচ্ছে আমাদের কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে যে সকল সাবজেক্ট পড়ানো হয় উপরের নতুন বিষয়ের সাথে সে সকল সাবজেক্টের সরাসরি কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তবে, প্রশ্ন হলো কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা গ্রাজুয়েটরা কি স্কুলে চাকরি করবেন না? করলে কোন বিষয়ের শিক্ষক হবেন? একমাত্র গণিত ছাড়া আর সব বিষয়ই স্নাতকদের বেসিক ডিগ্রির আওতার বাইরে! এ ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোই বা কোন বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগ দেবে?
নতুন শিক্ষাক্রমের বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিষয়ে পাঠ দানের জন্য কি পদার্থ বিজ্ঞান না ফলিত পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন না ফলিত রসায়ন, জীববিদ্যা না প্রাণিবিদ্যার প্রার্থীকে নিয়োগ দেবে? আর কোন বিষয়ের প্রার্থীই বা এ পদের জন্য দরখাস্ত করবেন? একইভাবে সব বিষয়ের ক্ষেত্রেই নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠান ও গ্র্যাজুয়েটরা দারুণ বিপত্তির মুখোমুখি হবেন। বিষয়ভিত্তিক গ্রাজুয়েটদের চাকরির সুযোগ পাঁচ-ছয়গুণ কমে যাবে। অতএব, সময় থাকতেই বিষয়টি নিয়ে সব মহলের চিন্তাভাবনা করা দরকার। বিশেষ করে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়ভিত্তিক শিক্ষার্থীদের সোচ্চার হওয়া দরকার।
আর একটি প্রশ্ন হলো- বর্তমান শিক্ষাক্রমের মাধ্যমিকের দশটি বিষয়ে কী নতুন বই দেয়া হবে? নাকি আগের বই ব্যবহার করা হবে? কেননা, এখানে এক নম্বরে ভাষা ও যোগাযোগ নামে একটি বিষয় রয়েছে। তাহলে কোন ভাষা বা কী কী ভাষা? কতটি ভাষা শেখানো হবে? ইত্যাদি প্রশ্ন থেকেই যায়। জীবন ও জীবিকা বিষয়ে পাঠদান করবেন কারা? কোন সাবজেক্টের শিক্ষক? পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ে পড়ানোর জন্য শিক্ষক পাওয়া যাবে তো? কী হবে ধর্মশিক্ষার? শিক্ষাক্রমের ৯ নম্বরে মূল্যবোধ ও নৈতিকতা বিষয় রাখা হয়েছে, ধারণা করা হচ্ছে- আগের ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষার স্থলে এটা বসবে। কিন্তু ধর্ম (ইসলাম, হিন্দু, খ্রিস্ট বা বৌদ্ধ) শব্দ বাদ দেয়ার যৌক্তিকতা কী? তবে কী ধর্মহীন শিক্ষা ব্যবস্থার দিকে যাচ্ছি আমরা।
নতুন শিক্ষাক্রমের আর একটি অসংঙ্গতি হলো- প্রাক-প্রাথমিকে কোনো বই থাকবে না। আবার প্রথম শ্রেণীতে আটটি বই। সব কিছু কি অসংলগ্ন মনে হচ্ছে না? প্রথম শ্রেণীতে সর্বোচ্চ চারটি বই থাকা দরকার। তাহলে বাংলা, ইংরেজি ও ধর্মীয় বইয়ের বর্ণমালা শিক্ষা এবং গণিতের সংখ্যার ধারণা দেয়া যাবে। প্রথম শ্রেণীতে আটটি বই দিয়ে যে বোঝা বাড়ানোর আয়োজন করা হয়েছে তা শিশুদের মেধা বিকাশের অন্তরায় হয়ে দাঁড়াবে। শিশুদের মেধা বিকাশের স্বার্থে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত ছয়টি বইয়ের অতিরিক্ত পড়ানো উচিত নয়।
এই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে মূল ও বড় ভূমিকা পালন করবেন শিক্ষকেরা। কিন্তু তাঁদের যথাযথভাবে তৈরি না করে শিক্ষাক্রম চালু করা হলে হিতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রয়োজন অনুসারে দ্রুত যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন। জাতীয় শিক্ষানীতিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর যে অনুপাত নির্ধারণ করা হয়েছে, সেই অনুসারে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যোগ্য শিক্ষক রয়েছে কি না, তা দ্রুত যাচাই করা এবং সে অনুসারে শিক্ষক নিয়োগ করা প্রয়োজন। নিয়োগের পাশাপাশি তাঁদের যথাযথ প্রশিক্ষণও দিতে হবে। না হলে নতুন শিক্ষাক্রম সফলভাবে বাস্তবায়ন করা যাবে না।
নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে সর্বাগ্রে মনে রাখতে হবে, জাতির মেরুদ- তৈরির শিক্ষা যেনো নিশ্চিত হয়। যে শিক্ষা গ্রহণ করে একজন শিক্ষার্থী সমাজ, রাষ্ট্র তথা নিজের জন্য কিছু করতে পারে না সেই শিক্ষা তার জন্য আশীর্বাদের বদলে অভিশাপ হয়ে দাঁড়ায়। শিক্ষা বলতে যেনো এটা বুঝায়, যা একজন মানুষকে তার নিজের ব্যক্তিত্ব ও অস্তিত্বের জন্য এবং সমাজ কল্যাণের জন্য দক্ষ করে তোলে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলেও সত্য যে, আমাদের বর্তমান মুখস্থনির্ভর শিক্ষাব্যবস্থা শিক্ষার্থীদের মাঝে সেই দক্ষতা সৃষ্টিতে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।
নতুন শিক্ষাক্রমে দশম শ্রেণি পর্যন্ত একই বা অভিন্ন বিষয় পড়ার সিদ্ধাটি একদিকে প্রশংসিত হচ্ছে, অন্যদিকে সমালোচিত হচ্ছে। বর্তমানে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত সবাইকে একই বা অভিন্ন বিষয় পড়তে হয়। এনসিটিবি জানাচ্ছে, এই সিদ্ধান্তে একটি নির্দিষ্ট স্তর পর্যন্ত সবাইকে সমভাবে দক্ষ করে গড়ে তোলার সুযোগ থাকবে। সবাইকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত অভিন্ন বিষয় পড়াতে গিয়ে বিজ্ঞানের আবশ্যকীয় অনেক বিষয়বস্তু ছেঁটে ফেলতে হয়েছে, যেটি দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতির কারণ হতে পারে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহ এমনিতেই কম। প্রতিবছর বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী কমছে। যেখানে প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ব সামনে রেখে, বিশেষত চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের জন্য শিক্ষার্থীদের উপযোগী করে গড়ে তুলতে বিজ্ঞানের প্রতি অধিক গুরুত্ব প্রদান করা প্রয়োজন, সেখানে কেন বিজ্ঞানের প্রতি গুরুত্ব কমানো হলো, তা বোধগম্য নয়।
তবে, তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত কোনো বার্ষিক পরীক্ষা না থাকার সিদ্ধান্ত প্রশংসনীয়। এই পরিসর পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত বাড়ানো যেতে পারে। ২০২৩ সাল থেকে প্রাথমিক সমাপনী ও জেএসসি/জেডিসি পরীক্ষাও থাকছে না। সে হিসেবে শিক্ষার্থীরা প্রথম বড় আঙ্গিকে পরীক্ষা দেবে এসএসসিতে। সেখানে শুধু দশম শ্রেণির বিষয়বস্তুর ওপর পরীক্ষা হবে। নবম শ্রেণির পাঠ্যবিষয় বাদ রেখে শুধু দশম শ্রেণির ওপর পরীক্ষা যৌক্তিক হচ্ছে কি না সেটি নিয়ে ভাবনার অবকাশ রয়েছে। তাছাড়া, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে দুটো পাবলিক পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত সচেতন অভিভাবক মহলকে অস্বস্তিতে ফেলেছে। অর্থাৎ শিক্ষার্থীদের দশম, একাদশ ও দ্বাদশ পরপর তিন বছর তিনটি পাবলিক পরীক্ষা দিতে হবে। পাবলিক পরীক্ষার সংখ্যা কমানোর কথা প্রায়ই বলা হচ্ছে নানা মহল থেকে। সরকারও প্রাথমিক সমাপনী ও জেএসসি পরীক্ষা বাতিল করার কথা বলছে। সেখানে এইচএসসিতে পাবলিক পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানোর কোনো যুক্তিসঙ্গত উত্তর পাওয়া যাচ্ছে না। এতে শিক্ষার্থীদের ওপর চাপ পড়বে, শিক্ষার্থীরা আরও বেশি করে পরীক্ষামুখী হবে। লেখাপড়ার আয়োজন হবে গৌণ, বাড়বে প্রাইভেট বা কোচিংয়ে পড়ার হার। সব মিলিয়ে এ সিদ্ধান্তটি মাধ্যমিক শিক্ষায় খারাপ ফল বয়ে আনতে পারে।
কারিকুলাম প্রণয়নের চেয়ে বাস্তবায়ন বেশি গুরুত্বপূর্ণ :
শিক্ষাক্রম পরিমার্জন ও বাস্তবায়ন সাধারণত ১০-১২ বছরের ব্যবধানে করা হয়। বাংলাদেশে কুদরাত-ই-খুদা শিক্ষা কমিশন (১৯৭২-৭৪) রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রথমবার শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যসূচি প্রণয়নের (১৯৭৬-৮০) পর তা দুবার (১৯৯১-৯৫ ও ২০১২) পরিমার্জন করা হয়েছে। প্রথম ও দ্বিতীয় অবর্তনের শিক্ষাক্রম পরিমার্জন ও বাস্তবায়নের মধ্যে ১৫-১৬ বছরের ব্যবধান ছিল। কিন্তু তৃতীয় আবর্তনের (২০১১-১৩) মাত্র আট বছর পর চতুর্থবারের মতো শিক্ষাক্রম পরিমর্জনের কাজ শুরু হয়েছে। এর দুটি প্রধান উদ্দেশ্য : ১. জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় (২০১৬-২০৩০) বিধৃত শিক্ষার লক্ষ্যগুলো (এসডিজি-৪) অর্জনের চেষ্টা এবং ২. বিশ্বব্যাপী স্কুলশিক্ষাকে যোগ্যতাভিত্তিক করার ঢেউকে ধারণ করা। নতুন কারিকুলাম প্রণয়নে ২০১৭ সালে কাজ শুরু করে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড। এবং ২০২২-এ পাইলটিং ও ২০২৩ সালে বাস্তবায়ন শুরু হয়ে ২০২৫ সালে শেষ হবে।
শিক্ষাক্রমের খসড়া রূপরেখাকে খুবই ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘এই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন হলে শিক্ষা হবে আনন্দময়, শিক্ষার্থীদের মধ্যে থাকবে না পরীক্ষাভীতি। যেখানে প্রাক-প্রাথমিক থেকে ধাপে ধাপে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পৌঁছানোর একটি রূপরেখা দেওয়া হয়েছে। এর ফলে কোচিং ও গাইড বাণিজ্য বন্ধ হবে, মুখস্থনির্ভর শিক্ষার পরিবর্তে প্রায়োগিক শিক্ষা গুরুত্ব পাবে। শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষার্থী হয়ে গড়ে উঠবে। এ উদ্যোগকে বাস্তবায়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন জরুরি। এজন্য সবার শুরুতে মানবসম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে। বাড়াতে হবে শিক্ষকদের বেতন। পাশাপাশি শিক্ষা ব্যবস্থার প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার, ক্ষমতায়ন ও অর্থায়নে মনোযোগী হতে হবে। শিক্ষকের ক্ষমতায়নে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে।’
শিক্ষার্থীদের বছরে ৩৬৫ দিনের মধ্যে সরকারি এবং দু’দিন করে সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে ১৩৭ দিন বাদ দিলে ১৮৫ কর্মদিবস পাওয়া যাবে। এ সময়ের মধ্যে প্রাক-প্রাথমিক স্কুলে প্রতিদিনি আড়াই ঘণ্টা, প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণিতে সাড়ে তিন ঘণ্টা, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে চার ঘণ্টা, ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণিতে পাঁচ ঘণ্টা, নবম ও দশম শ্রেণিতে সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা এবং একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা শিখনঘণ্টা নির্ধারণ করা হয়েছে। কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষায়ও নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। মূল বিষয়গুলো সবারই এক থাকবে, শিখনকালীন মূল্যায়ন ও সামষ্টিক মূল্যায়নও এক থাকবে। একই প্রক্রিয়ায় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। তবে মাদ্রাসা ও কারিগরির ক্ষেত্রে নতুন কিছু বিষয় যুক্ত হতে পারে। ১২০টি দেশের শিক্ষাক্রম পর্যালোচনা করে দেশে নতুন এই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। শিক্ষাবিদ ও সংশ্লিষ্ট সকলে এটিকে মাইলফলক হিসেবে দেখছেন।
বিলাল মাহিনী / পরীক্ষক : ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা। প্রভাষক : গাজীপুর রউফিয়া কামিল মাদরাসা, প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী সম্পাদক : সিংগাড়ী আঞ্চলিক গণগ্রন্থাগার ও ভৈরব সংস্কৃতি কেন্দ্র। জীবন সদস্য- নওয়াপাড়া ইনস্টিটিউট, অভয়নগর, যশোর ।