সরকারের পতনে সবাইকে রাজপথে নামার প্রস্তুতির ডাক দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে দলের নেতা-কর্মীদের প্রতি বিএনপি মহাসচিব এই আহবান জানান।
তিনি বলেন, আপনারা রাস্তা দখল করতে রাজি আছেন? রাস্তায় না নামলে কিছু হবে, রাস্তা দখল করে হবে। আপনারা সবাই রেডি হয়ে যান, তৈরি হয়ে যান। আমরা এই ফ্যাসিস্ট কর্তৃত্ববাদী সরকারকে টেনে হিচড়ে নামাবো এবং আমরা জনগনের সরকার প্রতিষ্ঠা করব-এটা হোক আজকে আমাদের শপথ।
এই সময়ে কর্মীরা ‘হরতাল, হরতাল’ শ্লোগান দিতে থাকলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘হরতাল দিও। আগে রাস্তা দখল করো।’
মির্জা ফখরুল বলেন, আর আমাদের কোনো সময় দেয়া চলবে না। এখন আমাদের দাবি একটাই- একদফা এক দাবি হাসিনা তুমি করে যাবে। আসুন সেই এক দফা দাবি আদায় করার লক্ষ্যে, জনগনের সরকার প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে, জনগনের প্রতিনিধিদেরকে পার্লামেন্টে পাঠানোর লক্ষ্যে, আমাদের গণতন্ত্রের প্রতীক দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যিনি আমাদেরকে নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং এখন সুদূর ৮ হাজার মাইল দূর থেকে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সেই নেতৃত্ব দিচ্ছেন আমরা ঐক্যবদ্ধ হই। আমরা বিশ্বাস করি, তার সফল নেতৃত্বে এদেশের মানুষের আশা-আকাংখা প্রতিফলিত হবে এবং দেশকে অবশ্যই অবশ্যই মুক্ত করতে সক্ষম হবো।
আগামী বৃহস্পতিবার থেকে বিএনপির অঙ্গ সহযোগী সংগঠনগুলো বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে বলেও জানান তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, প্যালেস্টাইনে যেমন মায়ের বুক খালি হলে মা বুক চাপড়ায়, গত ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশের চিত্র এমন। আমি যখন আব্দুর রহিমের নিথর দেহ দেখলাম তখন তার মা বুক চাপড়াচ্ছে। প্যালেস্টাইনের মায়েরাও এমন করে।
তিনি আরও বলেন, হারিকেন ধরার সময় এসেছে সরকারের। কিন্তু তারা এই হারিকেন ধরার সময়ও পাবে না। তারা পেছনের রাস্তা দিয়ে পালানোর সময়ও পাবে না। কারণ স্বৈরশাসকরা পালাতে চায়, কিন্তু জনগণ তাদের পালাতে দেয় না।
ঢাকা মহানগর বিএনপি উত্তর-দক্ষিনের উদ্যোগে ভোলায় পুলিশের গুলিতে স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল রহিম নিহত হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই বিক্ষোভ সমাবেশ হয়। রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে কয়েক হাজার নেতা-কর্মী এতে অংশ নেন।
স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, এখনো সময় আছে সরকারকে বলব, পদত্যাগ করুন, সংসদ বাতিল করুন, নির্দলীয় সরকার গঠন করে আপনারা কেটে পড়ুন। তাই না হলে শ্রীলংকার মতো জনগন রাস্তায় নেমে আপনাদের বিদায় করবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভোলার আবদুল রহিম দখলদার সরকারের গুলিতে মৃত্যবরণ করেছে। রহিম তুমি বিজয়ের চেতনা আগামী দিনে, রহিম তুমি মুক্তির চেতনা আগামীদিনের, রহিম তুমি গণতন্ত্রের চেতনা আগামী দিনের, রহিম তুমি স্বাধীনতার চেতনা আগামী দিনের। তোমার মৃত্যু আমরা বৃথা যেতে দেবো।
তিনি বলেন, রহিমের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের জনগনের মালিকানা ফিরে পাওয়ার আরেকটা শপথ আমাদের নিতে হবে। এটা বিএনপির যুদ্ধ নয়, এটা বাংলাদেশের জনগনের যুদ্ধ। এই যুদ্ধ আমাদের করতে হবে।
মহানগর উত্তরের আহবায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব আমিনুল হক ও রফিকুল আলম মজনুর পরিচালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে বিএনপির শামসুজ্জামান দুদু, আবদুস সালাম, আবদুস সালাম আজাদ, কামরুজ্জামান রতন, এবিএম মোশাররফ হোসেন, মীর সরফত আলী সপু, সাইফুল আলম নিরব, ইকবাল হোসেন শ্যামল, মহানগর বিএনপির ইশরাক হোসেন, ইউসুফ মৃধা, যুব দলের সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, মোনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবক দলের মোস্তাফিজুর রহমান, মহিলা দলের নিলোফার চৌধুরী মনি, হেলেন জেরিন খান, ওলামা দলের শাহ নেসারুল হক, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, শহিদুল ইসলাম বাবুল, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ, মতস্যজীবী দলের আবদুর রহিম, জাসাসের জাকির হোসেন রোকন, শ্রমিক দলের মোস্তাফিজুল করীম মজুমদার, ছাত্র দলের কাজী রওনা্কুল ইসলাম শ্রাবন ও সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।