অনলাইন ডেস্ক: বাংলাদেশ ল’ইয়ার্স কাউন্সিলের উদ্যোগে হাইকোর্ট বিভাগে নতুন তালিকাভুক্ত আইনজীবীদের সংবর্ধনা প্রদান করা হয়েছে। গতকাল সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়াতনে এই সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুর রউফ।তিনি বলেন, একজন ভালো আইনজীবী হতে হলে পড়ালেখার কোনো বিকল্প নেই। নতুন আইনজীবীদের সব সময় বই পড়তে হবে। সব বিষয়েই ধারণা থাকতে হবে। বই কেনার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। তিনি বলেন, সিনিয়রদের জুনিয়রকে নিজের সন্তানের মতো ভালোবাসতে হবে। না হলে বার সমৃদ্ধ হবে না, আর বার সমৃদ্ধ না হলে বেঞ্চও সমৃদ্ধ হবে না। এভাবে বার ও বেঞ্চের পারস্পারিক সহযোগিতার মাধ্যমে বিচার কাজকে সামনে এগিয়ে নিতে হবে। তবেই মানুষের ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে।
ল’ইয়ার্স কাউন্সিলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট মো: জসিম উদ্দিন সরকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিচারপতি ফরিদ আহমেদ। ঢাকা বারের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি অ্যাডভোকেট এস এম কামাল উদ্দিন ও ল’ইয়ার্স কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুর রাজ্জাকের সঞ্চালনায় আরো বক্তৃতা করেন, ল’ইয়ার্স কাউন্সিলের সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, সহসভাপতি অ্যাডভোকেট মশিউল আলম, সাবেক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট গিয়াস উদ্দিন মিঠু, ল’ইয়ার্স কাউন্সেলের কোষাধ্যক্ষ অ্যাডভোকেট ইউসুফ আলী, সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সহসভাপতি অ্যাডভোকেট ড. গোলাম রহমান ভূঁইয়া, অ্যাডভোকেট আব্দুল বাতেন, সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি অ্যাডভোকেট জালাল উদ্দিন, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট সাইফুর রহমান, অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম খন্দকার, ল’ইয়ার্স কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মঈন উদ্দিন, কাউন্সিলের প্রচার ও আইটি সম্পাদক অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, অফিস সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবু বাক্কার সিদ্দিক, অ্যাডভোকেট শফিকুর রহমান। হাইকোর্ট বিভাগে নতুন তালিকাভুক্ত আইনজীবীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- ঢাকা বার অ্যাসোসিয়েশনের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট মুজাহিদুল ইসলাম, লক্ষ্মীপুর বারের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট শাহাদাত হোসেন, সিলেট বারের অ্যাডভোকেট আবদুর রব, অ্যাডভোকেট রেজাউল হক রিয়াজ, অ্যাডভোকেট আবদুল্লাহ আল মামুন রাসেল, অ্যাডভোকেট আমিমুল এহসান, অ্যাডভোকেট মুনতাকা নুসরাত খান, কুমিল্লার অ্যাডভোকেট ইয়াকুব আলী, অ্যাডভোকেট বেলায়েত হোসেন সুজা, অ্যাডভোকেট আব্দুল হাই চৌধুরী। অনুষ্ঠানে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বার থেকে হাইকোর্টে তালিকাভুক্ত হওয়া বিপুলসংখ্যক আইনজীবী অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানটি একটি নবীন-প্রবীণের মিলনমেলায় পরিণত হয়। প্রধান অতিথিসহ অতিথিবৃন্দ তালিকাভুক্ত আইনজীবীদের ক্রেস্ট ও উপহার সামগ্রী তুলে দেন। পরে তারা ফটো সেশনে অংশগ্রহণ করেন।
বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুর রউফ বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে আইনবিষয়ক পড়াশুনা আরো ব্যবহারিক করার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, পেশায় যোগদান করার পরই মূলত পড়াশুনা শুরু হয়। নবীনদের মনে রাখতে হবে গোলাপ পেতে হলে বিছানা ছাড়তে হবে। আর বিছানা চাইলে গোলাপ ছাড়তে হবে।
বিচারপতি ফরিদ আহমেদ বলেন, যারা এখানে নতুন যুক্ত হলেন এটা শুরু মাত্র। তারা একটি বিশাল সাগরে এসে পড়লেন। এখন প্রতিনিয়ত শিখতে হবে। আর অবশ্যই নিয়মনীতি মেনে চলতে হবে, নীতিভ্রষ্ট হওয়া যাবে না। তিনি বলেন, বর্তমানে অনেক আইনজীবী নিজেরা মামলা পরিচালনা করতে চান না। সিনিয়রদের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন। এটা ঠিক নয়। এ কারণে আইন পেশার মান কমে যাচ্ছে। কোর্ট অঙ্গন কলুষিত হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কেউ কিছু বলছে না। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। ফরিদ আহমেদ বলেন, ভালো আইনজীবী হতে হলে জ্ঞান অর্জনের কোনো বিকল্প নেই। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন বিষয় শিখতে হবে। আইনজীবী পেশাকে ব্যবসা হিসেবে মনে করলে হবে না।
অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় নিজেদেরকে যোগ্য ও দক্ষ আইনজীবী হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। এ ক্ষেত্রে ল’ইয়ার্স কাউন্সিলের পক্ষ থেকে কর্মসূচি নেয়া হচ্ছে। সৎ ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন সরকার বলেন, ইসলাম হচ্ছে মানুষের জন্য পরিপূর্ণ জীবনবিধান। আল্লাহর হুকুমে পরিচালিত মুমিনের প্রতিটি কাজই হচ্ছে ইবাদত। সততার সাথে আইন পেশায় টিকে থাকার জন্য পরিশ্রম করতে হবে।