তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা সুলতানা কামালরা মানবাধিকার কর্মী নয়, আওয়ামী অধিকার রক্ষার কর্মী বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
বুধবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে শিক্ষক কর্মচারী ঐক্য জোট আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
ইন্ডিয়া টুডেতে সাক্ষাৎকার দেয়া সুলতানা কামালের বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘যখন ভোলায়, যশোরে, মুন্সিগঞ্জে ও নারায়ণগঞ্জে বিএনপির-যুবদলের কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে তখন আপনি (সুলতানা কামাল) কোথায় ছিলেন? আপনারা প্রতিবাদ করলেন না। আপনারা কিসের মানবাধিকার কর্মী! আপনারা আওয়ামী অধিকার কর্মী। আপনি আওয়ামী লীগের স্বার্থের যে অধিকার সেই অধিকারের কর্মী।’
রিজভী বলেন, এ দেশের জনগণের যে অধিকার সেটি আপনার মাথায় নেই। আপনি চান ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকুক। আওয়ামী লীগ যেভাবে বিএনপি নেতাকর্মীদের নির্যাতন ও গুম করছে তা চলতে থাকুক। তাই অন্য দেশে সাক্ষাৎকার দিয়ে ফ্যাসিবাদকে টিকিয়ে রাখতে চান। তিনি সুলতানা কামালের ওই বক্তব্যের ধিক্কার ও প্রতিবাদ জানান।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, ‘আরেকজন বুদ্ধিজীবী মুনতাসির মামুন বলেছেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকলে এ দেশের অনেকেই দেশে থাকতে পারবে না। কেন থাকতে পারবে না? জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় ছিলেন আপনি চাকরি করেননি? বেগম জিয়া ক্ষমতায় থাকাকালীন আপনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। এসব কথা বলে আপনি দেশবিরোধী কাজ করেছেন।
রিজভী বলেন, ‘সুলতানা কামালদের কোনো সাক্ষাৎকার বা মুনতাসির মামুনের কোনো বিবৃত্তি এ দেশের স্বাধীনতাকামী মানুষকে, গণতন্ত্রকে বিচলিত করতে পারবে না বরং তারা আজ দালাল হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে। তারা এ দেশের সাংস্কৃতি চায় না। অন্য কোনো দেশের সাংস্কৃতি এ দেশের জনগণের মধ্যে ঢুকিয়ে দিতে চায়।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, বিএনপি’র নেতাকর্মীদের ওপর এত নির্যাতন নিপীড়ন করার পরেও বিএনপি জেগে উঠে কী করে। বিএনপিকে কবরে পাঠাচ্ছে সেখান থেকেও জেগে উঠছে কী করে? এটা সরকারকে আরো প্রতিহিংসা পরায়ণ করছে। এরসাথে সুর মিলিয়ে বুদ্ধিজীবীরাও একই কোরাস গাইছেন।
রিজভী আরো বলেন, ‘ইডেন কলেজের বিষয় নিয়ে ইনডাইরেক্টলি তিনি সাফাই গাইছেন। দীর্ঘ দিন ধরে বিভিন্ন সমস্যা চলে এলেও এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি। এখন একটি প্রতিষ্ঠানকে ক্রীতদাসের বাজারে পরিণত করা হয়েছে। আর সুলতানা কামালরা এজেন্ট হয়ে কাজ করছেন।’
তিনি বলেন, আওয়ামী সরকার নাৎসিবাদ, ফ্যাসিবাদ ও খুনের রাজত্ব কায়েম করেছে। বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ, সুলতানা কামাল ও মুনতাসির মামুন ছাড়া আর কারো কণ্ঠ থাকবে না এমনটাই তারা মনে করেন।
শিক্ষক কর্মচারী ঐক্য জোটের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফৎ আলী সফু, সহ-প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামিমুর রহমান শামিম প্রমুখ বক্তব্য দেন।