সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের পাঁচটি পৃথক পয়েন্টের বেড়িবাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। স্থানীয়দের দেয়া তথ্যমতে, হাজরাখালী বশিরের গেট, কোলা মধ্যপাড়া জামে মসজিদ, বিছট খেয়াঘাট, বিছট মোড়লবাড়ির সামনে ও কুড়িকাহুনিয়া লঞ্চ টার্মিনালের দক্ষিণ পাশে এই ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভরা পূর্ণিমার গোনে ভাঙন দেখা দেওয়ায় নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন সেখানকার মানুষ।
স্থানীয় বাসিন্দা মিলন বিশ্বাস জানান, প্রতাপনগর ইউনিয়নের শ্রীপুর কুড়িকাহুনিয়া লঞ্চ ঘাটের দক্ষিণ অংশের শেষ সীমানায় প্রায় দুই শত ফুট বেড়িবাঁধে ভয়াবহ ফাটল ও ধ্বস দেখা গেছে। যেকোন মুহূর্তে সম্পূর্ণ বেড়িবাঁধ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে প্লাবিত হতে পারে গোটা এলাকা। ভাঙন ও প্লাবন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন এলাকাবাসী। ভরা পূর্ণিমার গোনে নদীর স্রোতের সারাসরি আঘাতে প্রতিনিয়ত বেড়িবাঁধের কোন না কোন স্থানে এ ধরনের ভাঙন হচ্ছে। জোয়ারের সময় নদীর পানি বৃদ্ধিসহ ঝড়োহাওয়ায় তুফানের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত করে চলেছে পাউবোর বেড়িবাঁধ।
তিনি আরও জানান, ঘুর্ণিঝড় আম্ফানের পর প্রায় দুটি বছর নদীর জলে প্লাবিত ছিল প্রতাপনগর। শ্রীপুর কুড়িকাহুনিয়া লঞ্চ ঘাটের দক্ষিণ অংশের শেষ সীমানার এ অংশে ভাঙন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে যেকোন মুহূর্তে ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হতে পারে।
স্থানীয়রা আরও জানান, শুধু কুড়িকাহুনিয়া নয়, এলাকার হাজরাখালী বশিরের গেট, কোলা মধ্যপাড়া জামে মসজিদ, বিছট খেয়াঘাট, বিছট মোড়লবাড়ির সামনেও একই অবস্থা বিরাজ করছে। দিনে ভাটা থাকায় ভাঙন তেমন বোঝা যায় না। রাতে নদীতে জোয়ার সৃষ্টি হলে বোঝা যায় পানির দাপট। পানির দাপুটে ভয়ঙ্কর শব্দে নির্ঘুম রাত কাটাতে হচ্ছে।
এমন আতঙ্কের কথা উল্লেখ করে সাতক্ষীরা জেলা পরিষদ সদস্য প্রার্থী তোষিকে কাইফু বলেন, পাঁচটি পয়েন্টে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন কবলিত এলাকায় বিরাজ করছে আতঙ্ক। শনিবার (৮ অক্টোবর) দিনগত রাতে এসব এলাকার বেড়িবাঁধে নতুন করে ধ্বস নেমেছে। কান্ট্রি সাইডে জিও টিউব দেওয়ার পাশাপাশি রিভার সাইটে হাজার হাজার জিও বস্তা ভর্তি বালু দিয়ে ডাম্পিং না করলে ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি হবে আশঙ্কা করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, এখনো পর্যন্ত মোবাইল ফোনে দায়িত্বশীল কাউকে পায়নি। কিছু বলার নেই, কে কার কথা শোনে। বাঁধ ভাঙার আগে থেকে সিরিয়াস হলে ভাঙন রোধ করা সম্ভব।
প্রতাপনগর ইউপি চেয়ারম্যান আবু দাউদ বলেন, বেড়িবাঁধে ভাঙনের বিঢয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। সোমবার থেকে পাউবো জিও বস্তা দিয়ে ভাঙন রোধে কাজ করবে বলে আশ্বস্ত করেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সকশনাল অফিসার (এসও) আলমগির কবির জানান, ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন শেষে পর্যাপ্ত জিও বস্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আপাতত জিও বস্তা দিয়ে ভাঙন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।