তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না : মির্জা ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন- দেশের মানুষ এখন আর শান্তিতে নেই। নতুন করে তেলসহ অন্যান্য জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। মানুষ খুব কষ্টে আছে। সরকার দেশে ভয়াবহ এক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। গত ১৪ বছর ধরে অত্যাচারের স্টিম রোলার চালিয়ে শেখ হাসিনার সরকার দেশকে তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত করেছে। এই সরকারের বিচার হবে জনতার আদালতে। মানুষের অধিকার হরণ করার জন্য এই বিচার হবে। এদের ছাড়া হবে না।

আজ বিকালে সিলেটের আলীয়া মাদ্রাসা ময়দানে বিএনপি’র বিভাগীয় গণ-সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিলেট জেলা বিএনপি’র সভাপতি আব্দুল কাইয়ূম চৌধুরী। এতে বক্তৃতা করেন স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, সিলেটের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, এম ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর লুনা প্রমুখ।

মির্জা ফখরুল বলেন, ইলিয়াস আমাদের মাঝে নেই।

সে বেঁচে আছে কিনা, বেঁচে থাকলে কোথায় আছে আমরা জানি না। কিন্তু ইলিয়াস আলীর স্ত্রী দমে থাকেননি। তিনি নেতাকর্মীদের নিয়ে লড়াইয়ে আছেন। তিনি বলেন-নতুন করে সরকার মামলা মামলা খেলা করছে। হঠাৎ করে মামলা দিচ্ছে। সরকার আবারো মিথ্যা মামলা করে অনেককেই কারাগারে বন্দি করে রেখেছে।
স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন- ‘সুদের টাকা দেয়ার সামর্থ বর্তমান কোষাগারে নেই। আজ গণতন্ত্র গুম হয়ে গেছে ইলিয়াস আলীর মতো। আমরা গণতন্ত্রের সঙ্গে এম ইলিয়াস আলীকে খুঁজছি। আমার ভোট আমি দেবো, যাকে খুশী তাকে দেবো- আমরা সেই আন্দোলনই করছি। আজ আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অন্য দেশে আছেন। তিনি কী সাধ করে আছেন। তিনি জীবনের ঝুঁকির কারণে দেশে আসছেন না। তাকে বেআইনীভাবে গ্রেপ্তার করে কোমরের হাড় ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে।’ তিনি বলেন- ‘১০ই ডিসেম্বর যাক তারপর খেলায় নামবো আমরা। এই সরকার জনগণের নয়। এ কারণে সরকারকে আর ক্ষমতায় রাখা যায় না। সাহস থাকলে পদত্যাগ করে নির্বাচন করুন। দেখবেন কী হয়।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া বাংলাদেশের কোনো নির্বাচন হবে না এবং এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের এখন যারা বিরোধিতা করবে তারা গণশত্রু হিসেবে ধিকৃত হবে এবং তাদের চিহ্নিত করা হবে গণশত্রু হিসেবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়া সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের যে বিধান সন্নিবেশিত করেছিলেন সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না।

তিনি বলেন, ‘সরকার লম্বা লম্বা কথা বলে। তারা বলে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। কোন সংবিধান? যে সংবিধান কাটাছেঁড়া করেছো। তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করেছো। সে সংবিধান আমরা মানি না।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের দফা এক, দাবি এক- এ সরকারের পদত্যাগ। শেখ হাসিনার পদত্যাগ। আর এর ফয়সালা হবে রাজপথে। রাজপথেই সরকারকে পরাজিত করে জনগণের সরকার করবো।’

‘অবিলম্বে শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে। সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে এবং মধ্যবর্তী বা নির্বাচনকালীন সময়ের জন্য কেয়ারটেকার সরকার করতে হবে,’ বলেন তিনি।

তিনি বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের বিচার হতে জনতার আদালতে এবং এ বিচার হবে ভোট চুরি ও ডাকাতির জন্য।

সিলেট অঞ্চলের বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর গুমের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, তার দলের শত শত নেতাকর্মী খুন ও গুমের শিকার হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘কিন্তু এখন মানুষ জেগে উঠেছে। আর হুমকি দিয়ে লাভ হবে না। দাবি আদায় না করে মানুষ আর ঘরে ফিরে যাবে না। আমাদের লক্ষ্য একটাই- ভোটের অধিকার ফিরিয়ে নেয়া।’

তিনি সব রাজনৈতিক দলকে এ দাবি আদায়ে রাজপথে নেমে আসার আহ্বান জানান এবং বলেন, তারা সবাই মিলেই লড়াইয়ের মাধ্যমে সরকারকে পরাজিত করবেন।

Check Also

আশাশুনিতে কর্মী সম্মেলনে আওয়ামী লীগকে জামায়াত নেতার কঠোর হুঁশিয়ারি বার্তা

স্টাফ রিপোর্টার:আশাশুনিতে ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর নিজস্ব কার্যালয় আলামিন …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।