ইব্রাহিম খলিল: সমাজের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী তথা দুস্থ, বিধবা, প্রতিবন্ধী ও বৃদ্ধ মানুষকে সহায়তা করার জন্য সরকার সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় যে মাসিক ভাতা চালু করেছিল, সব মহলেই তা প্রশংসিত হয়। কিন্তু সরকারি আরও অনেক কর্মসূচির মতো এ ক্ষেত্রেও তালিকায় নয়ছয় বন্ধ করা যায়নি। যাঁরা ভাতা পাওয়ার যোগ্য, তাঁদের বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে অনেক অযোগ্য ব্যক্তিকে।
সাতক্ষীরা জেলায় ৩৫ হাজার ৮৭৯জন প্রতিমাসে ৮৫০ টাকা করে প্রতিবন্ধী ভাতা পাচ্ছেন। যাঁরা ভাতা পাওয়ার যোগ্য, তাঁদের বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে অনেক অযোগ্য ব্যক্তিকে। তালিকায় নয়ছয় বন্ধ করা যায়নি। এমন প্রতারণার ঘটনা ঘটেছে সাতক্ষীরা বিভিন্ন এলাকায়।
এদিকে সাতক্ষীরা কালীগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আব্দুল্যাহ আল মামুনসহ পাঁচ কর্মচারীকে ৩৫০০ ভাতাভোগীর টাকা অন্যের মোবাইলে প্রেরণ করার ঘটনায় বরখাস্ত করা হয়েছে।
নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক এক উপকারভোগী সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিবন্ধী না হয়েও অনেকে ভাতা পাচ্ছেন। এসব তালিকা তৈরি করে থাকেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি তথা ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যরা।
সাতক্ষীরায় সরকারি সেবার আওতায় বিভিন্ন ক্যাটাগরির ভাতা ভোগীর সংখ্যা প্রায় এক লক্ষ ৯১ হাজার ৪৬৪ জন। এদের মধ্যে বয়স্ক আছে ১ লক্ষ ৬ হাজার ৭৭০জন, বিধবা ও বিপতœীক ৪৮ হাজার ৭৮২ জন, প্রতিবন্ধী ৩৫ হাজার ৮৭৯ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গ বা হিজড়া আছে ৩৩ জন।
জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলার এক লক্ষ ৯১ হাজার ৪৬৪জন ভাতা ভোগীর মধ্যে বয়স্ক, বিধবা ও হিজড়ারা প্রতিমাসে পাঁচশো করে নগদ টাকা পান এবং বাকি প্রতিবন্ধীরা পান প্রতিমাসে আটশো পঞ্চাশ টাকা।
এছাড়া জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে সরকার বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীদের এককালীন অর্থ সহায়তা করে থাকেন। তার মধ্যে কিডনি, হার্ড, লিভার, ফিসচুলাসহ আরও অনেক রোগে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য এই এককালীন অর্থ সহায়তা প্রদান করেন।
গ্লোবাল প্লাটফর্মের এসোসিয়েট ট্রেনার যুব প্রতিনিধি তরিকুল ইসলাম অন্তর বলেন, সামাজিক কর্মসূচির আওতায় প্রতিবন্ধী ভাতা সহ বিভিন্ন বিভিন্ন ভাতার যাচাই বাছাই কমিটিতে যুবদের অন্তর্ভুক্ত করা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা মনে করি ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা বিভিন্ন উপ-কমিটিতে যুবদের সংযুক্ত করা হলে ভালো হয়।
জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সন্তোষ কুমার নাথ বলেন, সরকার সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে সমাজের অবহেলিতদের ভাতা দিয়ে স্বাবলম্বি করা চেষ্টা করছে। সেই আওতায় এই ভাতা গুলো প্রদান করেন। এছাড়া সমাজসেবা অধিদপ্তরের জেলা উপজেলার সকল কার্যালয়ে বিভিন্ন ট্রেডে শিক্ষীত বেকার যুবাদের প্রশিক্ষণ প্রদান করেন।
তিনি আরও বলেন, সরকারের দেওয়া বিভিন্ন ভাতাভোগীদের সিলেক্ট করার জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, পৌরসভার মেয়র, কাউন্সিলর, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেম্বরদের সমন্নয়ে কমিটি গঠিত হয়। সেখানে যুবদের অন্তর্ভুক্তির কোন সুযোগ নেই। তবে সরকার যদি যুবদের কমিটিতে অন্তর্ভুক্তির সুযোগ দেয় তবে তাদেরকে নেওয়া হবে কোন বাঁধা ছাড়া।