সাতক্ষীরার তালা উপজেলার মাগুরা বারুইপাড়া মানে পানের উৎপাদনের কারখানা বললে ভুল হবে না। কারণ মাগুরা বারুইপাড়ায় দীর্ঘকাল ধরে চাষীরা পান চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। ধনী-গরীব সকলেই পান চাষের উপর ভরসা করে থাকেন। পানের দাম কম হলে চাষীদের মাথায় কাজ করে না। কারণ পান চাষ করতে যে খরচ তাতে যদি পানের দাম ভাল না পাওয়া যায় তখন চাষীদের সব স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। অভাব আর অনটনে দিন কাটে তাদের।
বুধবার মাগুরা বারুইপাড়ায় ঢুকতেই চোখে পড়ে চৈতন্য দাশ নামের এক ব্যক্তির। পানের বরজে পান তুলছিলেন তিনি। কথা হয় পান চাষী চৈতন্য দাশের সঙ্গে। তিনি জানান, এ বছর দেখছি পানের ভালো ফলন হয়েছে। আবার দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে।
তিনি জানান, এ বছর ১০ কাঠা জমিতে বরজ করেছি। প্রায় ১ লাখের উপরে খরচ হয়ে গেছে। এই পর্যন্ত প্রায় ৩০/৪০ হাজার টাকা বিক্রয় করেছি। ‘আল্লাহ’ যদি কোন বিপদ-আপদ না দেয় তাহলে হয়ত লাভের মুখ দেখতে পাব। তিনি জানান, গত বছর মহামারী করোনার কারণে সব কিছু এলোমেলো হয়ে হেছে। শুধু পান চাষী নয়, সমস্ত বিশ্বে একই অবস্থা বিরাজ করছে। গত বছরের তুলনায় এবার পানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। অনুরুপভাবে দামও ভালো। প্রতি পন পানের দাম ১শত টাকা। আর ছোট পান পর্যায় ক্রমে ৫০-৪০-৩০ টাকা দরে পন বিক্রয় হচ্ছে।
পান চাষী চৈতন্য দাশ আক্ষেপ করে বলেন, সারা জীবন পানের চাষ করে গেলাম। কিন্তু সরকার এত লোকের অনেক কিছু অনুদান দেয় আমি এই পর্যন্ত সরকারি কোন অনুদান পাইনি।
চৈতন্য দাশ জানান, সারা জীবন চাঁদকাটি বাজারে সন্ধ্যার সময় পান নিয়ে খুচরা বিক্রয় করি। আর যেদিন বেশি পান তুলি সেদিন পাটকেলঘাটা বা কপিলমুনি হাটে নিয়ে বিক্রয় করে জীবিকা নির্বাহ করি।
তিনি আরও জানান, বাবা মাত্র সামান্য জমি রেখে গেছেন তাতে কীভাবে সংসার চলে। এক পুত্র অনার্স পড়ে আর এক কন্যা এসএসসি ফলপ্রার্থী। সংসারে অনেক খরচ। কীভাবে চলব। সবই এই পানের উপরই ভরসা। এ ব্যাপারে তিনি সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।