ক্ষমতাসীন সরকারের ব্যর্থতার কারণেই মানুষ জেগে উঠেছে। এ সরকারের পতন বেশি দূরে নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এবং সাবেক মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রী আবদুল্লাহ আল নোমান।
শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের তৃতীয় তলার মিলনায়তনে এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
‘প্রাণি খাদ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি : বিপর্যস্ত পোল্ট্রি ও ডেইরি খামার’ এই সেমিনারের আয়োজন করে এগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এ্যাব), ঢাকা মহানগর উত্তর শাখা।
তিনি বলেন, সরকারের ব্যর্থতার কারণেই জিনিস পত্রের দাম বেড়েছে। দেশে মারাত্মক সঙ্কট দেখা দিয়েছে। সে কারণেই মানুষ জেগে উঠেছে। এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ না নেয়ার ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, তারা দিনের ভোট রাতে করেছে। নির্বাচনী ব্যাবস্থাকে ধ্বংস করেছে। ইনশাআল্লাহ আমরা আন্দোলনে জয়ী হবে।
নোমান বলেন, আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় সমাবেশ হবে। সেখানে সরকারের পরিবর্তন ঘটাবে সেটা আমরা বলতে পারি না। কিন্তু দেশের মানুষ সরকারের পরিবর্তন চায়। তাদের প্রত্যাশা বিএনপির প্রতি বেশি। ইনশাআল্লাহ সরকারের পতন হবে। তাদের পতন বেশি দূরে নয়।
আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, সরকার যাবে আসবে। কিন্তু দেশের উন্নয়নের জন্য রফতানিমুখী উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে। তা না হলে সঙ্কটের সমাধান হবে না।
দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শাসনামলে গবেষণা কেন্দ্রগুলোকে সংস্কার ও আধুনিক করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার সরকার ধান ও চাল উৎপাদনের লক্ষ্যে সিরাজগঞ্জে বিদ্যুৎ প্রকল্প করেছেন। যে কারণে উত্তরবঙ্গের ৯০ শতাংশ এলাকায় ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি ট্যাক্স মওকুফ করেছিলেন। কৃষির সেচের জন্য খাল খনন করেছিলেন। ফলে খাদ্য উৎপাদন দ্বিগুণ হয়েছিলো।
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, বিএনপির আমলে জনসংখ্যার অনুপাতে খাদ্য উদ্বৃত্ত ছিল। আওয়ামী লীগ যা বলে তা সঠিক নয়। খালেদা জিয়ার শাসনামলে খাদ্য উদ্বৃত্ত ছিল। ফিশারিজ ও পোল্ট্রি শিল্পের বিকাশ ঘটেছিল।
নোমান বলেন, আজ মানুষ জেগেছে। তাদেরকে ঘুমাতে দেয়া যায় না। তাদেরকে আরো উজ্জীবিত করতে হবে। আমরা বিজয়ের মুখোমুখি। ইনশাআল্লাহ আমাদের জয় হবে।
বিএনপির এই ভাইস চেয়ারম্যান বলেন,লাইভস্টক সেক্টরের দিকে সরকারই ভালোভাবে নজর দেয় না। কিন্তু বিএনপির আমলে অনেক কাজ করা হয়েছে এই খাতে। সিলেটে ও চট্টগ্রামে ভেটেরিনারি কলেজ করা হয়েছে। পরে বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে। কৃষিবিদদেরকে আরো ভালোভাবে এগিয়ে যেতে হলে সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে।
ডা: ফরহাদ হালিম ডোনার বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের লক্ষ্যে নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন। তিনি পোল্ট্রি ও ফিশারিজ শিল্পের বিকাশে ভুমিকা রেখেছিলেন। খাল কেটে কৃষিতে সেচের ব্যবস্থা করেছিলেন। তার আমলে বাংলাদেশ চাল রফতানি করেছিল। অথচ বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের অপরিকল্পিত মেগা প্রজেক্টের কারণে দেশের অর্থনীতি আজ ঝুঁকিপূর্ণ। অসংখ্য টাকা দেশ থেকে পাচার হওয়ার কারণে দেশের ব্যাংকিং খাত আরো ঝুঁকিতে। এলসি খুলতে পারছে না। তিনি নিজেদের মর্যাদা রক্ষায় যার যার অবস্থান থেকে প্রতিবাদ প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
ঢাকা মহানগর উত্তর এ্যাব‘র সভাপতি কৃষিবিদ শফিউল আলম দিদারের সভাপতিত্বে সেমিনারে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আহসানুল হক। এ্যাব ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ সানোয়ার আলমের পরিচালনায় সেমিনারে বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, এ্যাবের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কৃষিবিদ রাশিদুল হাসান হারুন, সদস্য সচিব ড. জি কে এম মোস্তাফিজুর রহমান, বিএনপির সহ-প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, কৃষিবিদ বি এম আলমগীর কবির, কৃষিবিদ ইয়ার মাহমুদ, কৃষিবিদ ডা: শাহাদাত হোসেন পারভেজ, কৃষিবিদ ডা: আবদুর রহমান নূরী, ডা: মোজাম্মেল হক সোহেল, আবু হেনা মোস্তফা কামাল পান্না, কৃষিবিদ ড. আকিকুল ইসলাম আকিক, কৃষিবিদ এ কে এম আনিসুজ্জামান, অধ্যাপক ড. আসাবুল হক আশা, কৃষিবিদ শেখ মো: শফি শাওন, কৃষিবিদ নূরুন্নবী ভূঁইয়া শ্যামল, কৃষিবিদ ড. শফিকুল ইসলাম শফিক, কৃষিবিদ খন্দকার আসাদুজ্জামান কিটোন প্রমুখ।