ক্রাইমবাতা রিপোট:সাতক্ষীর: সাতক্ষীরায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বাড়ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিরোধী দলের রাজনৈতিক কার্যক্রমে বাঁধা দেওয়া হচ্ছে। ভয়ের সংস্কৃতির কারণে মানুষ আতঙ্কে রয়েছে। জনপ্রতিনিধিদের গ্রেপ্তার করে ২৪ ঘন্টার মধ্যে আদালতে সোপর্দ না করে দুই তিন দিন পরে বিস্ফোরক দ্রব্য এবং মাদকসহ বিভিন্ন হয়রানিমূলক মামলা দিয়ে চালান দেওয়া হচ্ছে। সাতক্ষীরায় মানবাধিকার পরিস্থিতির অগ্রগতি হয়নি বরং অবনতি হয়েছে বলে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) এর এইচআরডি নেটওয়ার্ক সদস্যরা। রিপোটে বলা হয়েছে, গত তিন মাসে জেলায় ৯টি হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে ৬১জনের। এর মধ্যে পুলিশ অপমৃত্যু সন্দেহে ১৯টি মরহেদ উদ্ধার করেছে।
এদিকে সাতক্ষীরা আশাশুনি উপজেলা জামায়াতের আমীর শোভনালি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা আবুবক্করসহ অর্ধশতাধী নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। বুধবার রাত দেড়টার দিকে শোভনালি ইউনিয়ন পডিরষদের চেয়ারম্যান মাওলানা আবুবক্করকে তার বসুখালি বাড়ি থেকে আটক করে পুলিশ। পরে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে নাশকতা সৃষ্টি ও পরিকল্পার অভিযোগে তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পেপ্ররণ করা হয়। আশাশুনি থানায় দায়ের করা মামলা মামলা নং ২৮৩/২২। এ মামলায় সাতক্ষীরা আশাশুনি উপজেলা জামায়াতের আমীর শোভনালি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা আবুবক্করসহ বিএনপি জামায়াতের ২০ জনসহ অজ্ঞান ব্যক্তিদের আসামী করা হয়। এমামলায় শোভনালি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা আবুবক্ককে এক নম্বও আসামী করা হয়েছে। এছাড়া আশাশুনি থানা জামায়াতের সাবেক সেক্রেটারী আলমগীর হোসেন, সদর জামায়াতের সেক্রেটারী আব্দুল হাইসহ বিএনপি জামায়াতের ১৫ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।
সাতক্ষীরার কলারোয়া ও শ্যামনগর উপজেলায় অভিযান চালিয়ে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর ২০ নেতা–কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার (০৬ ডিসেম্বর) থেকে বৃহষ্পতিবারমকাল পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর মধ্যে নাশকতার প্রস্তুতির অভিযোগে কলারোয়া থেকে বারজন ও নাশকতার মামলায় শ্যামনগর থেকে আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কলারোয়া থেকে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কাছ থেকে ছয়টি হাতবোমা উদ্ধার করা হয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ।
কলারোয়া থেকে গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন জামায়াতের কলারোয়া উপজেলার সাবেক আমির মাওলানা ওমর আলী (৬৩) ও ঝিকরা গ্রামের জামায়াত নেতা রোকন আশফাকুর রহমান (৫২)।কলারোয়া উপজেলার চন্দনপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আশরাফুজ্জমান (৫৬), ফয়জুল্লাহপুর এলাকার বিএনপি কর্মী মাহবুবুর রহমান (৩৪), ওফাপুর এলকার যুবদল কর্মী আবু বক্কর সিদ্দিক (২৭), কামারালি এলাকার উপজেলা বিএনপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম। শ্যামনগর থেকে গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন উপজেলার নুরনগর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সভাপতি মোবারক হোসেন, জামায়াতের কর্মী বাকি বিল্লাহ (৪৩) আকরাম হোসেন (৪৫)।
এদিকে দেবহাটায় ১২ জন, সদরে ১০ জন,কালিগঞ্জে ৮ জনকে আটক করা হয়েছে।
সংশৃষ্টদের অভিযোগ বলেন, পুলিশ বিএনপি ও জামায়াত নেতাকমীদের বাড়ি বাড়ি অভিযান চালাচ্ছে। শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নূরুল ইসলাম বলেন, পুলিশের করা নাশকতার মামলায় বিএনপি ও জামায়াতের তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
কলারোয়া থানার ওসি নাসির উদ্দীন মৃধা বলেন, গতকাল গভীর রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারে, কলারোয়া আলিয়া মাদ্রাসার পাশে জামায়াত ও বিএনপি নেতা-কর্মীরা নাশকতার পরিকল্পনা করছেন। এ সময় পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাঁদের ঘেরাও করে আটক করে। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ছয়টি হাতবোমা উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগে করা মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এর আগে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার দুই ইউপি চেয়ারম্যানকে আটক করে নিয়ে যায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। সোমবার ৫ ডিসেম্বর দুপুরের দিকে ইউনিয়ন পরিষদের নিজ নিজ কার্যালয় থেকে তাদেরকে তুলে দেওয়া হয়। আটককৃতরা হলেন, ধানদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের বিএনপি সমর্থিত চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীন হোসেন ও ইসলামকাটি ইউনিয়নের জামায়াত সমর্থিত চেয়ারম্যান অধ্যাপক গোলাম ফারুক।
আটকের ঘটনায় সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতের পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। একই সাথে তাদের মুক্তির দাবী জানিয়েছে।
Check Also
যশোর বেনাপোল দিয়ে ভারতে প্রবেশের সময় কলারোয়ার আ’লীগ কাউন্সিলর গ্রেপ্তার
নিজস্ব প্রতিনিধি :- সাতক্ষীরা: যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভার …