সাতক্ষীরায় আইন না মেনে একের পর এক ভরাট করা হচ্ছে পুকুর। পরিবেশ অধিদপ্তরের আইনকেও বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানো হচ্ছে। স্থানীয় কতিপয় জনপ্রতিনিধির হস্তক্ষেপ থাকায় পুকুরগুলো ভরাটে মানা হচ্ছে না আইন।
গত ১ বছরে সাতক্ষীরা শহরের প্রায় ২০ টি পুকুর ভরাট করা হয়েছে। এরই মধ্যে সাতক্ষীরা শহরের সুলতানপুরেই ৫ থেকে ৭টি পুকুর ভরাট করা হয়েছে। স্থানীয়রা পরিবেশ অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করলেও কৌশলে রাতারাতি সে সব পুকুর ভরাট করে ফেলা হয়। পরবর্তীতে তাদের বিরুদ্ধে কোন ধরনের ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়নি বলে জানা গেছে।
এদিকে, সুলতানপুরের মিসেস নাজনিন বেগম এর মালিকানাধীন পুকুরটি পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি ছাড়াই মাটি ভরাট শুরু করেন তার স্বামী মীর গোলাম মোস্তফা। এবিষয়ে স্থানীয়রা ১৬ অক্টোবর ২২ তারিখে পরিবেশ অধিদপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ২১ ডিসেম্বর২২ তারিখে পরিবেশ অধিদপ্তর সাতক্ষীরার সহকারী পরিচালক সরদার শরীফুল ইসলাম সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন করে সত্যতা পেয়ে তাদের কে মাটি ভরাট করতে নিষেধ করলেও মিসেস নাজনিন বেগম সে নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করে আবারো মাটি ভরাট শুরু করলে গত ২১ ডিসেম্বর সহকারী পরিচালক শরীফুল ইসলাম পরিবেশ সংরক্ষণ আইন১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১০) এর ৬(ঙ) দ্বারা এবং বাংলাদেশ জীব বৈচিত্র্য সংরক্ষণ আইন,২০১৭ লংঘন এর অভিযোগে আগামী ২৬ ডিসেম্বরের মধ্যে পুকুরের মাটি অপসারন পূর্বক লিখিতভাবে অবহিত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
কিন্তু সে নির্দেশ উপেক্ষা করে ২২ ডিসেম্বর সকালে ট্রালিতে করে মাটি এনে পুকুরে ফেলা হয়। যদিও স্থানীয়দের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পরিবেশ অধিদপ্তর ও থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পুকুরে মাটি ভরাট বন্ধ করে দিয়েছেন। তবে এলাকাবাসী আশংকা করছেন রাতের আঁধারে মাটি ফেলে পুকুরটি যে কোন সময় ভরাট করা হতে পারে। অনেকে বলছেন কতিপয় জনপ্রতিনিধির ইন্ধনে আইন অমান্য করে এসব পুকুর রাতারাতি ভরাট করা হচ্ছে।
সুলতানপুর এলাকাবাসী জানান বর্তমানে প্রচন্ড পানি সংকটে রয়েছেন তারা। অত্র এলাকায় মাত্র কয়েকটি পুকুর ছিলো। কিন্তু রাতারাতি সেগুলো ভরাট করে চড়া দামে বিক্রয় করে দিয়েছেন মালিকরা। নাজনিন বেগমদের পুকুর থেকে পানি সংগ্রহ করে প্রয়োজন মিটাচ্ছিলেন তারা। কিন্তু সেটিও ভরাটের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া পুকুর ভরাটের কারনে বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতার আশংকা করছেন অনেকেই।