কুলিয়ারচরে আ’লীগের ২ নেতাসহ ৫ জনের রহস্যজনক মৃত্যু
- কুলিয়ারচর (কিশোরগঞ্জ) সংবাদদাতা
- ১৬ জানুয়ারি ২০২৩, ১৬:০৭, আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২৩, ১৫
- কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে অ্যালকোহল সেবনে আওয়ামী লীগের দুই নেতাসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া একজন লাইফ সাপোর্টে রয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় গুঞ্জন সৃষ্টি হয়েছে।
সোমবার (১৬ জানুয়ারি) বিকেল ৫টা ১০মিনিটের সময় কুলিয়ারচর উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়-সংলগ্ন চায়ের দোকানদার মো: লিটন মিয়া (৪৫) ভাগলপুর জহুরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে মারা যান। এর আগে অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় সেবনে তিন আওয়ামী লীগ নেতার মধ্যে দু`জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া একজন লাইফ সাপোর্টে রয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় গুঞ্জন সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, এ ঘটনায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক নেতা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে রয়েছেন। এছাড়া তাদের গাড়ি চালকসহ এক চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কুলিয়ারচর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক-১ মো: গিয়াস উদ্দিন (৫৫), সাংগঠনিক সম্পাদক-২ মো: জহির রায়হান জজ (৫৫) এবং সদস্য ও কুলিয়ারচর পৌরসভার প্যানেল মেয়র মো: হাবিবুর রহমান (৫৫), তাদের গাড়িচালক মো: শাহজাহান (৫২) ও কুলিয়ারচর বাজারস্থ অন্তর হোমিও হলের সত্ত্বাধিকারী ডা: গোবিন্দ চন্দ্র বিশ্বাস (৫০) ও উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়-সংলগ্ন চায়ের দোকানদার মো: লিটন মিয়া (৪৫) অ্যালকোলহ জাতীয় পানীয় সেবনের পর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদের উদ্ধার করে ভাগলপুর জহুরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে গেলে সোমবার ভোর ৪টায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক-২ মো: জহির রায়হান জজ ও ভোর ৪টা ৩৫মিনিটে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক-১ মো: গিয়াস মারা যান। এরপর সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে ডা: গোবিন্দ চন্দ্র বিশ্বাসও একই হাসপাতালে মারা যায়। এর আগে শনিবার রাতে গিয়াস উদ্দিন ও জহির রায়হান জজের গাড়িচালক মো: শাহজাহান মিয়া তার নিজ বাড়িতে মারা যায়। এছাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও পৌরসভার প্যানেল মেয়র মো: হাবিবুর রহমান ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে রয়েছেন।
ডা: গোবিন্দ চন্দ্র বিশ্বাসের ছোট ভাই কুলিয়ারচর গ্লোরিয়াস হাই স্কুলের সহকারী শিক্ষক আনন্দ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, তার বড় ভাই দীর্ঘ দিন ধরে পারিবারিকভাবে দুশ্চিন্তায় ভুগছিলেন। এসব দুঃশ্চিন্তা থেকে স্টোক করে তিনি মারা গেছেন।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক-১ মো: গিয়াস উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক-২ মো: জহির রায়হান জজ ও সদস্য মো: হাবিবুর রহমান পরস্পর ভালো বন্ধু ছিলেন। তাদের ছাত্র রাজনীতি দিয়ে এক সাথে পথ চলা। দলীয় কর্মকাণ্ডসহ সালিশ দরবারও করতেন একসাথেই। দুই বন্ধু চলেও গেলেন একসাথে। বন্ধুত্বের বন্ধনে থেকে গেল মৃত্যুকালেও।
এদিকে তাদের মৃত্যুর সঠিক কারণ এখনো কোনো দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করতে পারেনি। তবে স্থানীয়দের মধ্যে গুঞ্জন চলছে যে মদের বিষক্রিয়ায় তাদের মৃত্যু হয়েছে।
এ ব্যাপারে কুলিয়ারচর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা চারজনের মৃত্যু ঘটনা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, অ্যালকোহল জাতীয় কিছু সেবনে তাদের মৃত্যু হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাদের একজন লাইফ সাপোর্টে আছেন। তদন্ত চলছে। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।