খুলনায় সমাবেশকে সফল করাল লক্ষ্যে সাতক্ষীরায় বিএনপির প্রস্তুতি সভায় ব্যাপক কুন্দাকুন্দি হয়েছে। কুন্দাকুন্দি এক পর্যায়ে মল্লযুদ্ধে রূপ নেয়। ঠেলাঠেলি করতে গিয়ে আহত হয়েছেন কেউ কেউ। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা শামসুজ্জামান দুদুর উপস্থিতিতে এ ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার বিকেলে সাতক্ষীরার আমতলা মোড়স্থ একটি কমিটিউনিটি সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ যেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সভায় উপস্থিত একাধিক নেতা জানান, সাতক্ষীরার একটি কমিউিনিটি সেন্টারে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে জেলা বিএনপির আহবায়ক এড: সৈয়দ ইফতেখার আলীর সভাপতিত্বে সভা শুরু হয়। আগামী ৪ ফেব্রæয়ারি খুলনার বিভাগীয় সমাবেশের জন্য সাতক্ষীরায় এ প্রস্তুতি সভা হচ্ছিল। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে আমন্ত্রিত নেতাদের বাইরে বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী সভায় উপস্থিত ছিলেন। একপর্যায়ে বক্তব্য দিতে উঠেন জেলা বিএনপির সদস্য আইনুল ইসলাম নান্টা। বক্তব্যের একপর্যায়ে তিনি সভার প্রধান অতিথির সামনে জেলা বিএনপির বর্তমান সংকট নিয়ে খোলামেলা বক্তব্য দিতে শুরু করেন। আইনুল ইসলাম নান্টা তার অনির্ধারিত বক্তব্যে বলেন, বর্তমানে জেলায় বিভিন্ন পর্যায়ের যে কমিটি হচ্ছে, তার অধিকাংশ পকেট কমিটি। এমনকি কমিটি বাণিজ্যেরও অভিযোগ করেন তিনি।
তার বক্তব্যের বিপরীতে কড়া ভাষায় সভার সঞ্চালক জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুল আলিম নেতা-কর্মীদের অতীত ঘটনা মনে করিয়ে দিয়ে বলেন, পাল্টাপাল্টি এমন অবস্থা চলতে থাকলে আমান হত্যার মতো ঘটনা ঘটতে পারে সাতক্ষীরায়। তার এই বক্তব্যের পরপরই শুরু হয় হৈ-চৈ, হট্টগোল ও চেয়ার ছোড়া-ছুড়ি। এসময় ধাক্কা-ধাক্কি ও ঠেলাঠেলির ফলে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়। পরিস্থিতি শান্ত করতে শামসুজ্জামান দুদুর বারবার আহবান সত্বেও পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে থাকে। একপর্যায়ে সদর থানার পরিদর্শক তারেকের নেতৃত্বে একদল পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এসময় পুলিশকে বেধড়ক লাটিচার্জ করতে দেখা যায়।
পুলিশ পরিদর্শক তারেক বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে যেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে।
সভায় অপ্রীতিকর পরিস্থিতির দায় কার, এমন প্রশ্নের জবাবে হাবিবুল ইসলাম হাবিব গ্রæপের অন্যতম নেতা জেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক তারিকুল হাসান বলেন, আব্দুল আলিমের দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্যের জেরে আজকে কেন্দ্রীয় নেতার উপস্থিতিতে এমন অঘটন ঘটলো। আব্দুল আলিম তার বক্তব্যে বলেছেন, অবস্থা যেদিকে যাচ্ছে, তাতে আমান হত্যার মতো ঘটনা ঘটতে পারে। তার এই বক্তব্যের পরপরই উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। তিনি আগামীতে দায়িত্বশীল নেতাদের আরও সংযত আচরণের পরামর্শ দেন।
এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুল আলিম বলেন,এটা উল্লেখ করার মতো তেমন বিষয় নয়। নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝিতে সামান্য উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল।
বিএনপি নেতা-কর্মীরা জানান, অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রধান অতিথি আসার পর শান্তিপূর্নভাবে সভা চলছিলো। এসময় সাতক্ষীরা বিএনপির সদস্য সচিব চেয়ারম্যান আব্দুল আলিমের একটি বক্তব্যকে ঘিরে বিএনপির একটি পক্ষ উত্তেজিত হয়ে পড়ে। এসময় তারা আব্দুল আলিমকে আক্রমন করার চেষ্টা করলে তা দুইপক্ষের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করে।
জেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক তারিকুল হাসান জানান, আব্দুল আলিমের দায়িত্ব জ্ঞানহীন বক্তব্যের জেরে আজকে কেন্দ্রীয় নেতার উপস্থিতিতে এমন অঘটন ঘটলো। আব্দুল আলিম তার বক্তব্যে বলেছেন, অবস্থা যেদিকে যাচ্ছে, তাতে আমান হত্যার মতো ঘটনা ঘটতে পারে। তার এই বক্তব্যের পরপরই উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। তিনি আগামীতে দায়িত্বশীল নেতাদের আরও সংযত আচরণের পরামর্শ দেন।
এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম বলেন, এটা উল্লেখ করার মতো তেমন বিষয় নয়। নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝিতে সামান্য উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির জাতীয় নির্বাহ কমিটির সদস্য সাবেক এমপি কাজী আলাউদ্দিন, নির্বাহী কমিটির সদস্য ডাঃ শহিদুল আলম, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আব্দুর রউফ, শেখ তারিকুল হাসান, হাবিবুর রহমান হাবিব, মৃনাল কান্তি রায় প্রমুখ।
উল্লেখ্য: সাতক্ষীরা জেলা বিএনপি স্পষ্টত দু’ভাগে বিভক্ত। একটির নেতৃত্বে রয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিব। তিনি জেলে যাওয়ার পর ওই অংশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন জেলা বিএনপির যুগ্নআহবায়ক চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ ও তারিকুল হাসান। অপরগ্রæপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, জেলা বিএনপির আহবায়ক অ্যাড. সৈয়দ ইফতেখার আলী ও সদস্য সচিব আব্দুল আলিম। এই দু’গ্রæপের দ্ব›দ্ব বেশ পুরনো। অতীতে এই দু’গ্রুপের দ্বদ্ধে শিল্পকলা একাডেমিতে খুন হন জেলা মৎস্যজীবী দলের সাধারণ সম্পাদক আমান উল্লাহ আমান। বর্তমানে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি গুলো দু’গ্রুপের ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় পালন করতে দেখা যায়।