শ্যামনগর প্রতিনিধি: শ্যামনগরে জাতীয় পতাকা স্ট্যান্ড ভাংচুরসহ উপড়ে ফেলার দায় বুদ্ধি প্রতিবন্ধী চল্লিশোর্ধ্ব বয়সী স্থানীয় এক ব্যক্তির উপর চাপানোর চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের দ্বন্দ্বের জেরে ঘটনাটি ঘটলেও তৃতীয় পক্ষের কাঁধে দায় চাপিয়ে পার পেতে চাইছে অভিযুক্তরা।
গত ১২ থেকে ১৪ জানুয়ারির মধ্যবর্তী সময়ে উপজেলার ১২২নং খোলপেটুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঘটনাটি ঘটলেও সম্প্রতি বিষয়টি প্রকাশ পায়। স্ট্যান্ড ভাংচুরের জন্য বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ স্থানীয়দের দায়ি করলেও গ্রামবাসীদের দাবি কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্ব থাকায় ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে। প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে চক্রান্তের অংশ হিসেবে বিবাদমান দু’পক্ষ এমন কান্ড ঘটিয়েছে বলে দাবি করেছে স্থানীয়দের অনেকে। এঘটনায় বিদ্যালয়ের প্রধান ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক ও স্থানীয়দের পক্ষ থেকে শ্যামনগর থানায় পৃথক দুটি অভিযোগ করা হয়েছে।
জানা গেছে গত ১৫ জানুয়ারি সকালে বিদ্যালয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলনকালে দেখা যায় পূর্ব নির্দিষ্ট জায়গাতে পতাকা স্ট্যান্ড নেই। ভাঙচুরের পর একেবারে গোড়া থেকে পতাকা স্ট্যান্ড উপড়ে ফেলা হয়েছে। খোঁজাখুজির এক পর্যায়ে অনতিদুরের একটি ব্যক্তি মালিনাকানাধীন পুকুর থেকে ভাংচুরকৃত অবস্থায় স্ট্যান্ডটি উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে ১২২নং খোলপেটুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে বিরোধ চলছে। স্থানীয় একটি পক্ষের সাথে প্রধান শিক্ষকের বিরোধ থাকায় দু’পক্ষ বিভিন্ন সময়ে পরস্পরকে দায়ি করে নানান অভিযোগ তুলে আসছে। স্থানীয়রা আরও জানায় উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের নির্দেশনায় লম্বা সময় পর সম্প্রতি বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করা হয়েছে। উক্ত কমিটিতে দাতা সদস্য হিসেবে হোসেন আলী নামের একজনকে অন্তর্ভুক্তির পর দু’পক্ষের বিরোধ চরমে পৌছে। এ ঘটনার জেরে বিদ্যালয়ের জাতীয় পতাকার স্ট্যান্ড ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি স্থানীদের। তাদের অনেকের অভিযোগ নিজেরা ঝামেলা এড়াতে এখন স্থানীয় বুদ্ধি প্রতিবন্ধী রাজন খানের উপর দায় চাপিয়ে পার পেতে চেষ্টা করছে।
এদিকে পতাকা স্ট্যান্ড ভাংচুরসহ ফেলে দেয়ার ঘটনায় পরস্পরকে দায়ি করেছে বিদ্যালয় কতৃপক্ষ ও স্থানীয়রা। প্রতিপক্ষকে হয়রানী ও ঘায়েল করতে স্ট্যান্ড ভাংচুরের দায় একে অন্যের উপর চাপানোর চেষ্টা করছে।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো: দেলোয়ার হোসেন জানান ১২ জানুয়ারী বিকালে বিদ্যালয় বন্ধ করে বাড়িতে ফেরার পর ১৫ জানুয়ারী সকালে বিষয়টি তিনি বুঝতে পারেন। কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হতে না পারায় স্থানীয় এক এনজিও প্রধান মাহমুদুল হাসান ও তার লোকজন এমন ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারেন। এবিষয়ে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে শ্যামনগর থানায় সাধারণ ডায়েরী করেন বলেও জানান।
তবে পতাকা স্ট্যান্ড ভাঙার অভিযোগ অস্বীকার করে মাহমুদুল হাসান জানান প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্থানীয়রা বিভিন্ন সময়ে নানান অনিয়মের অভিযোগ জানিয়ে আসছে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে। কয়েকটি ঘটনায় তদন্ত পর্যন্ত হয়েছে। এমনকি স্থানীয় গ্রামবাসীর চাপে পড়ে দীর্ঘদিনের আহবায়ক কমিটি ভেঙে দিয়ে সম্প্রতি বিদ্যালয়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে হয়েছে। এসব কারনে ক্ষুব্ধ হয়ে তাদের ফাঁসাতে একটি পক্ষ এমন কান্ড ঘটিয়েছে। এঘটনায় গ্রামবাসীদের পক্ষ থেকে শ্যামনগর থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয় বলেও তিনি দাবি করেন।
দু’পক্ষের অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে শ্যামনগর থানার উপ-পরিদর্শক আশরাফ হোসেন জানান বিষয়টি তদন্তের পর্যায়ে রয়েছে। দু’পক্ষের সাধারণ ডায়েরীর প্রেক্ষিতে বিজ্ঞ আদালতের অনুমতি চাওয়া হয়েছে।