পানি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি তেল ব্যবহারে সবাইকে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে হিসাব করে না চললে বিপদ আসার সম্ভাবনা আছে বলে সতর্ক করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, সবকিছুর দাম বেড়েছে। সবাইকে অনুরোধ করবো কৃচ্ছ্রতা সাধন করতে হবে, সাশ্রয়ী হতে হবে। পানি, বিদ্যুৎ, জ্বালানি তেল ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে। সামনে যাতে বিপদ না হয় সেজন্য সবাইকে হিসাব করে চলার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। তবে হিসাব করে না চলছে সামনে বিপদ আসার সম্ভাবনা আছে।
আজ দুপুরে পাতাল রেল ও দ্বিতীয় মেট্রো রেল (এমআরটি লাইন-১)-এর নির্মাণ কাজের উদ্বোধন উপলক্ষে পূর্বাচলের ৪ নম্বর সেক্টরে আয়োজিত এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে সকাল ১১টায় এমআরটি লাইন-১ নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, অনেক দেশে খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশে যাতে এই অবস্থা না হয়।. আমাদের এক ইঞ্চি জমি যেন অনাবাদি না থাকে। এখন পর্যন্ত সব কিছু ম্যানেজ করে যাচ্ছি, করে যাবো।
বিজ্ঞাপন
তবে আপনাদেরই সাশ্রয়ী হতে হবে।
তিনি বলেন, ২০১৮ সালে নির্বাচন, আমরা ঘোষণা দিয়েছিলাম যে সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ। বাংলাদেশ অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। আজকে আমি মনে করি, আমাদের যে প্রতিশ্রুতি আমরা একে একে তা রক্ষা করি। ২০০৮-এর নির্বাচনে প্রতিশ্রুতি ছিল ২০২১ এর মধ্যে রূপকল্প ২১ বাস্তবায়ন করবো। সেটা বাস্তবায়ন করেছি আর ২০১৮-এর নির্বাচনী ইশতেহার সেটা আজকে আমরা বাস্তবায়ন করেছি। ওই ইশতেহারে ছিল ঢাকা শহরকে যানজটমুক্ত করার জন্য আমরা মেট্রোরেল নির্মাণ করবো। আওয়ামী লীগ কথা দিলে কথা রাখে, আমরা সেই কথা রেখেছি।
আওয়ামী লীগ যখনই সরকারে আসে, দেশের মানুষের উন্নতি হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সারা দেশে যোগাযোগ নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে। সারা দেশে ১০০ সেতু, ১০০ রাস্তা নির্মাণ; এটা বোধ হয় কখনো কেউ করতে পারেনি। আওয়ামী লীগ সরকার আছে বলেই কিন্তু এটা সম্ভব হয়েছে। বাংলাদেশের জনগণ ২০১৪-তে আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছে, ২০০৮-এ ভোট দিয়েছে। ২০০৮-এর নির্বাচনটা যদি ধরেন, সেই নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করেছিল কিন্তু কয়টা সিট পেয়েছিল? ৩০০ সিটের মধ্যে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট অধিকাংশ সিট পায়। বিএনপি পেয়েছিল মাত্র ২৯টি সিট, আর একটি পরে উপনির্বাচনে এসেছিল। মাত্র ৩০টি সিট ২০০৮-এর নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোট পেয়েছিল।
তিনি বলেন, আমরা যে এত বছর কাজ করলাম, মানুষের উপকার করলাম, যার ফলে মানুষ আমাদেরকে ভোট দিচ্ছে। জনগণের আস্থা-বিশ্বাস আমরা পাচ্ছি। আমাদের কাজের মধ্য দিয়ে জনগণের মন জয় করেই আমরা ভোট পাচ্ছি। বগুড়া, চাঁপাইনবাবগঞ্জ যে নির্বাচন (বিএনপির ছেড়ে দেওয়া আসনে উপনির্বাচন) হয়ে গেল সেখানে নৌকা মার্কায় চাঁপাইনবাবগঞ্জে ২ প্রার্থী ছিল আর বগুড়ায় ১ প্রার্থী। ঠাকুরগাঁওয়ে দিয়েছিলাম মেনন সাহেবকে, সেখানে জাতীয় পার্টি জিতেছে। আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থী ছিল না। বগুড়ার কাহালু নন্দীগ্রামেও আমরা জাসদকে দিয়েছিলাম। জাসদও সেখানে জয়লাভ করেছে আর সদরে আওয়ামী লীগ জয়লাভ করেছে। নৌকা আজকে বগুড়ায় জয়লাভ করেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জেও জয়লাভ করেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমি জাতির জনকের কন্যা, মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনই আমার কাজ। বাংলাদেশের অগ্রগতি কেউ থামাতে পারবে না।
পাতাল রেলকে বাংলাদেশের উন্নয়নের মাইলফলক আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিছুক্ষণ আগে আমরা পাতাল রেলের কাজের উদ্বোধন করলাম। এর আগে আপনাদের উড়াল মেট্রোরেল উপহার দিয়েছি। এটা ওপর দিয়ে যাচ্ছে, এবার মাটির নিচ দিয়ে পাতাল রেল। বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় আরেকটি মাইলফলক স্থাপিত হলো।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি, জাইকার বাংলাদেশ অফিসের প্রতিনিধি ইচিগুচি তোমোহাইড।