আহত প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাককে (৪৬) সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি জানান, আজ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জয়নুল আবেদীনের অবসরজনিত বিদায় অনুষ্ঠান ছিল। অনুষ্ঠানে বিদায়ী শিক্ষককে দেওয়ার জন্য মানপত্র আনতে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকে নিয়ে উপজেলা সদরে যান তিনি। মানপত্রটি সংগ্রহ করে দুপুর ১২টার দিকে বিদ্যালয়ে পৌঁছান।
তিনি আরও জানান, দেরিতে মানপত্র আনায় ক্ষিপ্ত হয়ে বিদায়ী শিক্ষক জয়নুল আবেদীন তাকে গালিগালাজ ও মারধর শুরু করেন। এ সময় তার নির্দেশে তার দুই ছেলে গোলাম মোস্তফা (৩৬) ও মনিরুজ্জামান (৩২) এবং তার ভাতিজা লোহার রড, লাঠি নিয়ে তাকে বেধড়ক পেটাতে থাকেন। একপর্যায়ে তিনি রক্তাক্ত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এ সময় উপস্থিত শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবকরা হতচকিত হয়ে যান। তারা রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে তাড়াশ ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখান থেকে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
জন্তিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. মকবুল হোসেন বলেন, চোখের সামনে যা ঘটেছে তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। আমরা একজন শিক্ষককে প্রকাশ্যে পেটানোর সঙ্গে জড়িত শিক্ষক জয়নুল আবেদীন ও তার ছেলেদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
তালম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক বলেন, ঘটনাটিকে ন্যক্কারজনক। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক জয়নুল আবেদীনের মোবাইল ফোনে কল দিলে তার ছেলে গোলাম মোস্তফা রিসিভ করে দাবি করেন, আজ বিদ্যালয়ে বিদায় অনুষ্ঠানের একটা প্রোগ্রাম ছিল। কিন্তু প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি সে অনুষ্ঠান বাদ দিয়ে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন। এরপর তারা দুপুর ১টার দিকে ফিরে আসেন। তাদের এই দেরিতে আসার কারণেই স্থানীয়দের সঙ্গে প্রধান শিক্ষকের একটা হট্টগোলে ও ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। কিন্তু আমরা তাকে মারধর করেছি এটা সত্য নয়।
তাড়াশ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মুসাব্বির হোসেন বলেন, আহত শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক আমার অফিসে এসেছিলেন। আমি তাকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি। অভিযোগ পেলে তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তাড়াশ থানার ওসি মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, আহত প্রধান শিক্ষক থানায় এসেছিলেন কিন্তু এখনও কোনও অভিযোগ দেননি। অভিযোগ দিলে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।