ঝালকাঠির রাজাপুরে পারিবারিক কলহের জেরে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে হাত-পা বেঁধে স্বামীকে হত্যা করেন স্ত্রী। স্বামী আউয়াল তালুকদারের মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর ৯৯৯-এ কল দেন স্ত্রী সাফিয়া বেগম। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে এবং সাফিয়া বেগমকে আটক করে।
রোববার দিবাগত রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে উপজেলার গালুয়া ইউনিয়নের মধ্য পুটিয়াখালি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত আউয়াল একই এলাকার মৃত আব্দুর রহমান তালুকদারের ছেলে এবং পেশায় ইজিবাইক চালক। তিনি দুই সন্তানের জনক। আটককৃত সাফিয়া বেগম শরিয়তপুরের নুরিয়া উপজেলার মৃত নজরুল ইসলাম মুন্সির মেয়ে। পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
৯ম শ্রেণিতে পড়ুয়া নিহতের ছেলে রাফিন বলেন, ৩ মাস আগে আঙ্গারিয়া গ্রামের এক নারীকে বিয়ে করে আমার বাবা। পরে কিস্তি উঠানোর কথা বলে মায়ের স্বাক্ষর নিয়ে ৪ শতাংশ জমি লিখে দেন তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে। গত সপ্তাহখানেক আগে বিষয়টি জানতে পেরে এ নিয়ে প্রায়ই বাবা-মায়ের মধ্যে মারামারি হতো। রোববার ছাগলে গাছ খাওয়া নিয়ে রাত আনুমানিক ১০টার দিকে আমার মাকে মারধর করে বাবা।
পরে রাতে খাবার খেয়ে সবাই ঘুমিয়ে গেলে বাবাকে জবাই করে মা।
সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার (রাজাপুর সার্কেল) মাসুদ রানা জানান, গোপনে দ্বিতীয় বিয়ে করা ও প্রথম স্ত্রীর জমি দ্বিতীয় স্ত্রীর নামে লিখে দেয়া নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহ দেখা দেয়। এসবের জেরে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে হাত-পা বেঁধে রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে স্বামী আউয়াল তালুকদারকে ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে-এমনটাই স্বীকারোক্তি দিয়েছেন স্ত্রী সাফিয়া বেগম। হত্যার পর ৯৯৯-এ কল দিয়ে পুলিশ খবর দেন তিনি নিজেই।
ঝালকাঠি জেলা পুলিশ সুপার আফরুজুল হক টুটুল ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের জানান, ইতিমধ্যেই আউয়ালের স্ত্রীকে আটক করা হয়েছে। আমাদের তদন্তে আরো কিছু তথ্য পাওয়া গেছে যেটা পরবর্তীতে জানানো হবে। পারিবারিক কলহের জেরে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে।
এ ঘটনায় নিহতের ভাই আবুল হোসেন তালুকদার বাদী হয়ে অভিযুক্ত সাফিয়ার নামে হত্যা মামলা দায়ের করবেন।