নির্বাচন কমিশন (ইসি) চিঠির জবাবে বিএনপি বলেছে যে, তারা আলোচনায় যাবে না। নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে ফয়সালা না হওয়া পর্যন্ত আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ইসির সঙ্গে আলোচনা করা অনর্থক বলে জানিয়েছে দলটি।
নির্বাচন কমিশন থেকে বৃহস্পতিবার পাঠানো চিঠি পাওয়ার কথা নিশ্চিত করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমাদের অবস্থান খুবই পরিষ্কার যে, নির্বাচন কমিশনের কোনো আলোচনায় যাব না আমরা।
তিনি বলেন, নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে ফয়সালা না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করা অর্থহীন। এই সরকারের অধীনে কোনো নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না বলেই আমরা মনে করি।
এর আগে বৃহস্পতিবার বিএনপিকে হঠাৎ করেই সংলাপে বসার আমন্ত্রণ জানিয়ে চিঠি দেয় ইসি। ওই সংলাপে বিএনপির সমমনা দলগুলোও অংশ নিতে পারবে বলে জানানো হয়।
এদিন বিকালে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে আমন্ত্রণ জানিয়ে চিঠি দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
চিঠিতে ইসির পক্ষ থেকে বৈঠকের কোনো সময় ও এজেন্ডা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়নি। বিএনপি সংলাপে বসতে সম্মত হলেই সময় নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলেও সিইসির চিঠিতে বলা হয়।
এদিকে বিএনপির দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচন কমিশন থেকে বৃহস্পতিবার বিকালে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের দপ্তরে চিঠি পৌঁছে দেয় ইসি। পরে সেখান থেকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে চিঠিটি পৌঁছে দেওয়া হয়।
কমিশন থেকে চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, একটি চিঠি এসেছে। তবে চিঠিটি দেখা হয়নি।
ইসির আমন্ত্রণে বিএনপি আলোচনায় যাবে কিনা- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, চিঠিতে কী আছে আগে দেখি, তার পর এ বিষয়ে বলা যাবে।
এর আগে বৃহস্পতিবার বিকালে বিএনপি মহাসচিবকে আমন্ত্রণ জানানোর বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টির (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে তার দলের অন্যান্য নেতা ও প্রয়োজনে সমমনা দলগুলোর নেতাসহ বাংলাদেশ ইলেকশন কমিশনের পক্ষ থেকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ডিও পত্রের মাধ্যমে আলোচনা ও মতবিনিময়ের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
ইসি সূত্র জানায়, বিএনপি ধারাবাহিকভাবে নির্বাচন ও ইসির সংলাপ বর্জন করার প্রেক্ষিতে বিশেষ এ সংলাপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশন গত ১৭ থেকে ৩১ জুলাই দেশের রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করে। গত ২০ জুলাই বিএনপির সঙ্গে সংলাপ থাকলেও দলটি তা বর্জন করে।
বিএনপি ছাড়াও আরও ৮টি দল ওই সংলাপ বর্জন করে। তবে নির্বাচন কমিশনে ৪০টি নিবন্ধিত দল থাকলেও শুধুমাত্র বিএনপি মহাসচিবকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ওই চিঠিতে প্রয়োজনে সমমনা দলের নেতাদের সংলাপে রাখার বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে।