সাতক্ষীরা পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র ফিরোজ হাসান জানান, পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদের বিরুদ্ধে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে গত ২৪ ডিসেম্বর সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি মামলা হয়। উচ্চ আদালতের নির্দেশে ২৪ জানুয়ারি ওই মামলায় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করেন তাজকিন। বিচারক মো. হুমায়ুন কবীর তাঁর জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। ৯ ফেব্রুয়ারি তিনি জামিনে মুক্তি পান।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের এক চিঠিতে ৬ ফেব্রুয়ারি তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পাশাপাশি ১ নম্বর প্যানেল মেয়র হিসেবে তাঁকে (কাজী ফিরোজ হাসান) ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব দেওয়া হয়। পাশাপাশি তাঁকে ও পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নাজিমউদ্দিনকে অর্থনৈতিক লেনদেন করারও ক্ষমতা দেওয়া হয়।
বরখাস্তকৃত মেয়র তাজকিন জানান, ৯ ফেব্রুয়ারি জেলা ও দায়রা জজ আদালত তাঁকে জামিনে মুক্তি দেন। ১৪ ফেব্রুয়ারি হাহকোর্ট তাঁর সাময়িক বরখাস্তের আদেশ তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন। আইনজীবী রুহুল কদ্দুস কাজলের মাধ্যমে এ সিদ্ধান্তের একটি চিঠিও হাতে পান তিনি। চিঠির অনুলিপি পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নাজিমউদ্দিন ও সচিব লিয়াকত হোসেনকে জানিয়ে তিনি ১৬ ফেব্রুয়ারি নিজ পদে যোগদান করতে যান। কিন্তু তাঁকে যোগদান করতে দেওয়া হয়নি।
ভারপ্রাপ্ত মেয়র ফিরোজ হাসান জানান, তাঁরা ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড, পূবালী ব্যাংক লিমিটেড ও সাউথ বাংলা অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড কর্মাস ব্যাংক লিমিটেড ও আল আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড ব্যাংকে কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের বেতন ও সার্বিক খরচ চালানোর জন্য ফেব্রুয়ারি মাসে প্রায় এক কোটি টাকার চেক পাঠান। কিন্তু টাকা না দিয়ে তাঁরা চেক প্রত্যাখান করেন। চেক প্রত্যাখান করা ও টাকা দিতে গড়িমসি করায় আজ পৌরসভার কর্মচারী ও কর্মকর্তারা তিনটি ব্যাংক অবরোধ করেন।
এ ব্যাপারে পূবালী ব্যাংকের সাতক্ষীরা শাখার ব্যবস্থাপক চন্দ্রশেখর রায় ও সাউথ বাংলা অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড কর্মাস ব্যাংক লিমিটেড নির্বাহী কর্মকর্তা সরফরাজ নেওয়াজ জানান, মন্ত্রণালয় অর্থনৈতিক লেনদেন করার জন্য যে প্রজ্ঞাপনবলে ভারপ্রাপ্ত মেয়র ও নির্বাহী প্রধান কর্মকর্তাকে ক্ষমতা দিয়েছিল, হাইকোর্ট বিভাগ ১৪ ফেব্রুয়ারি এক আদেশে তা তিন মাসের স্থাগিত করেন। ফলে তাঁরা চেকে টাকা দিতে পারছেন না।
সাতক্ষীরা পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নাজিমউদ্দিন বলেন, সোনালী ব্যাংক ফেব্রুয়ারি মাসে তাঁদের স্বাক্ষরে টাকা দিয়েছেন। সাউথ ইস্ট ব্যাংক লিমিটেড তাঁদের ব্যাংকে পৌরসভার অ্যাকাউন্টে থাকা ৭৯ লাখ ১৮ হাজার ৪৮৫ টাকা তিনটি পে-অর্ডারের মাধ্যমে ফেরত দিয়েছে। কিন্তু অন্য চারটি ব্যাংক টাকা না দিয়ে দেড় মাস ধরে বলে আসছে বিষয়টি তারা দেখছে।