মধুর পাশ নিয়ে সুন্দরবনে যাওয়ার পর ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়া ২৫ মৌয়ালকে আটক করে কারাগারে পাঠিয়েছে বনবিভাগের কর্মকর্তারা। সুন্দরবনের অভায়রণ্য ঘোষিত এলাকায় অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে মৌয়ালদের নামে মামলা দিয়ে শুক্রবার (৭ এপ্রিল) সাতক্ষীরা আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। এর আগে বৃহস্পতিবার বিকালে (এপ্রিল) পশ্চিম সুন্দরবনের হলদেবুনিয়া এলাকা বিভিন্ন খাল ও নদী হতে তাদের উদ্ধারের পর আটক করা হয়।
তবে বন বিভাগের দাবি সুন্দরবনের অভয়ারণ্য এলাকা থেকে আটক এসব বনজীবীর সুন্দরবনে প্রবেশের অনুমতি ছিল না। এসময় আটক জেলেদের নিকট থেকে তিনটি ডিঙি নৌকা উদ্ধারের দাবিও করেছে বনবিভাগের কর্মর্তারা।
আটককৃতরা হলো মোঃ আব্দুর রাজ্জাক, আফছার গাজী, শাহাদাৎ হোসেন, মোঃ হাকিম গাজী, সফিকুল ইসলাম, ইউনুস আলী সরদার, শহিদুল গাজী, কেরামত মিস্ত্রি, কামরুল ইসলাম, মোঃ ইদ্রীস আলী, মাকসুদুল আলম, মোঃ সাদ্দাম হোসেন, হযরত আলী শেখ, আবু হানিফা, হয়রত আলী, মোঃ আলাউদ্দীন মালী, কামরুল ইসলাম (২), আমজিয়াদ মালী, ইসমাইল হোসেন, মোঃ জুব্বার আলী, সামাদ আলী, সফেদ আলী গাজী, মনিরুল ইসলাম, শাহ আলম ও লিয়াকত হোসেন। এসব জেলেরা সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের ৯নং সোরা, চাঁদনীমুখা ও ডুমুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা।
আদালতে পাঠানোর আগে আটক জেলেরা জানায়, গত ২ এপ্রিল সাতক্ষীরা রেঞ্জের বুড়িগোয়ালীনি স্টেশন থেকে মধু আহরণের পাশ (অনুমতি) নিয়ে তারা সুন্দরবনে যায়। সিগনাল চলার এক পর্যায়ে ঝড়ের কবলে পড়ে বৃহস্পতিবার তারা পথ হারিয়ে ভারতীয় অংশে ঢুকে পড়ে। এসময় ভারতীয় সুন্দরবনের বনপ্রহরীসহ বিএসএফ সদস্যরা তাদের ধাওয়া করলে মধু সংগ্রহের সরঞ্জাম ফেলে জীবন নিয়ে তারা নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ছোট বড় দুটি নদী সাঁতরে হলদেবুনিয়া অংশে পৌঁছানোর পর বাংলাদেশের বনরক্ষীরা তাদের উদ্ধার করে বুড়িগোয়ালীনি স্টেশনে নেয়ার পর আটক দেখিয়েছে।
জেলেরা দাবি করেন, মহাজনের নিকট থেকে চড়াসুদে ঋণ নিয়ে মধু কাটতে সুন্দরবনে গিয়েছিল তারা। এখন সর্বস্ব হারিয়ে জেলের ঘানি টানার পর মহাজনের টাকা ফেরত দেয়া নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় পড়েছে। মৌসুমের শুরুতে এমন বিপদে পড়ার কারণে সারা বছর ধরে সাংসারিক ব্যয় নির্বাহ নিয়েও তারা বিপদগ্রস্থ হয়ে পড়েছে।
সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) ইকবাল হোসাইন চৌধুরী জানান, অভয়ারণ্য এলাকায় যেয়ে মাছ শিকারের সময় হলদেবুনিয়া স্টেশন ইনচার্জ মাহাবুবুর রহমানের নেতৃত্বে ২৫ জনকে আটক করা হয়। অনুমতিপত্র না থাকার পরও তারা সুন্দরবনে প্রবেশ করার পাশাপাশি নিষিদ্ধ অভয়ারণ্যে যাওয়ার কারণে তাদের বিরুদ্ধে বন আইনে মামলা দিয়ে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।