ক্ষমতা দখল নয় জামায়াতে ইসলামী আল্লাহর সন্তুষ্টি অনর্জনের মাধ্যমে কল্যাণ রাষ্ট্র গড়তে চাই: অধ্যাপক মুজিবুর রহমান#
যারা শিশা ঢালা প্রাচীরের ন্যায় সংবদ্ধ ভাবে আল্লাহর রাস্তায় সংগ্রাম করেন আল্লাহ তাদেরকে জান্নাত দিবেন:# আল্লাহর আইন দিয়ে দেশ শাসন করলে শান্তি আসবে# নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধির কারণে দেশের মানুষ দুর্বিসহ জীবন কাটাচ্ছে#
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর, সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান
বলেছেন, আল্লাহ তাদেরকে ভাল বাসেন, যারা শিশা ঢালা প্রাচীরের ন্যায় সংবদ্ধ ভাবে আল্লাহর রাস্তায় সংগ্রাম করেন। এ কাজটি আল্লাহর কাছে সব চেয়ে প্রিয়। যারা এ কজটি করেন আল্লাহ তাদের গুণাহ সমূহ মাফ করে দিবেন, তাদেরকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি দিবেন এবং তাদেরকে জান্নাতের মেহমান হিসেবে কবুলণ করবেন। যারা এই তিনটা জিনিস পেয়ে সন্তুষ্ট হবেন আল্লাহ তাদের কাছে দুনিয়ার ক্ষমতা দিবেন। তিনি বলেন ক্ষমতা দখল নয় নিয়ম তান্ত্রিকপন্থায় আল্লাহর পথে যোগ্য লোক তৈরি করার মধ্য দিয়ে জামায়াতে ইসলামী আল্লাহর সন্তুষ্টি অনর্জ করতে চাই।
মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সাতক্ষীরা জেলা শাখার উদ্যোগে আয়োজিত ভার্চয়ালি আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, দুনিয়াতে আল্লাহর দেওয়া বিধান অনুযায়ী নবী ও রাসুল গণ কাজ করে গেছেন। নবীগণের কাজের ধারাবাহিকতায় আল্লাহর জমিনে সেই কাজ করছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। জামায়াতের সদস্যগণ সেই কাজের বাস্তব সাক্ষী। সদস্য হওয়ার পর সদস্যের মর্যাদা রক্ষা, সদস্য পদের মানোবনতি রোধ করা এবং মানের ক্রমোন্নতির জন্য চেষ্টা-ফিকির করতে হবে। কোনো অবস্থাতেই হারামের সাথে সম্পৃক্ত হওয়া যাবে না। মানুষের অধিকার ও কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠা করার চলমান আন্দোলনকে বেগবান করতে হবে। কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠা ছাড়া দেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও অধিকার বঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
জামায়াত আমীর বলেন, আল্লাহর আইন দিয়ে দেশ শাসন করলে শান্তি আসবে। কারণ আল্লাহর আইনে কোনো ভুল নেই। কিন্তু মানুষের তৈরি আইনে ভুল আছে। আমরা দেশের ১৮ কোটি মানুষকে সুখে রাখতে সৎ লোকের শাসন ও আল্লাহর আইন কায়েম করতে চাই।
সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতের আমীর মুহাদ্দিস রবিউল বাশারের সভাপতিত্বে ও জেলা সেক্রেটারী মাওলানা আজিজুর রহমানের সঞ্চালনায় ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন দলটির কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারী হামিদুর রহমান আজাদ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মুহাম্মদ উজ্জত উল্লাহ ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারী মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক। সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, নায়েবে আমীর অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম মুকুল, সহকারী সেক্রেটারী প্রভাষক ওবায়দুল্লাহ, প্রভাষক ওমর ফারুক, রুহুল আমিন, জাহিদুল ইসলাম, খোরশেদ আলমসহ অনেকে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক মুজিবুর আরো বলেন, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধির কারণে দেশের মানুষ দুর্বিসহ জীবন কাটাচ্ছে। মানুষ সীমাহিন কষ্টে আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকারের লোকজন কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে বিদেশে পাচার করেছে। দেশের বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্ট স্কুল, কলেজ ব্যাংকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দখল করে দখলবাজ সরকারে পরিণত হয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার। তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৫১ বছর চলছে.. কিন্তু, গণতন্ত্র ,ভাতের অধিকার,ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। মাঝে মাঝে গণতন্ত্রের দেখা মিললেও এদেশের মানুষ বেশিরভাগ সময় গণতন্ত্রের সুফল পায়নি। এজন্য সরকারকে গণতন্ত্র পুনপ্রতিষ্ঠা আহ্বান জানান তিনি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে হামিদুর রহমান আজাদ বলেন, সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালাচ্ছে। রোজার মানুষদের অব্যাহত গ্রেফতার করে গায়েবী মামলায় কারাগারে আটকিয়ে রাখছে। তাদেও জানান উচিৎ জামায়াত এদেশে অপরিচিত কোন দল নয়। আন্দোলন সংগ্রামের দীর্ঘ ইতিহাস আছে জামায়াতের। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে সত্য কথা বলা যায় না। গলা টিপে ধরে যা স্বৈরশাসন। এরশাদের শাসনামলকেও ম্লান করে দিয়েছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অধ্যক্ষ ইজ্জত উল্লাহ বলেছেন, সত্য পথে চলা, সত্য কথা বলা, সত্যকে ধারণ করা ঈমানের দাবি। এই দাবি পূরণে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। পৃথিবীর কোনো স্বৈরাচার সত্যবাদীদেরকে সহ্য করতে পারে না। এজন্য তারা রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে হকপন্থীদের নির্মূল করতে চায়। কিন্তু হকপন্থীদের নির্মূল করা যায় না। ভয় এবং আতঙ্কগ্রস্থ না হয়ে স্বৈরাচার সরকারের বিরুদ্ধে দেশবাসীকে জাগানোর জন্য ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক বলেছেন আমাদের পরিবার আমাদের জন্য নেয়ামত। ইসলামী পরিবার গঠনের জন্য আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, প্রত্যেক জনশক্তির পরিবার হবে শরিয়তের নির্দেশনার আলোকে এক একটি মডেল পরিবার। মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক বলেন, সংগঠনের মূল দায়িত্ব হলো- জনশক্তির মান উন্নয়ন করা এবং এলাকার পরিবেশ ও সাংগঠনিক অবস্থার সমন্বয়ে একটি মজবুত সংগঠনের ভীত রচনা করা। সংগঠনের সেই মজবুত ভীত রচনায় তিনি সবাইকে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।প্রেসবিজ্ঞপ্তি।