অপহরণের দায়ে অভিযুক্ত ভারতের সাবেক একজন রাজনীতিক ও তার ভাইকে টেলিভিশনে সাক্ষাৎকার দেয়ার সময় সরাসরি গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এর মধ্যে আতিক আহমেদ ছিলেন পুলিশি প্রহরায়। তার বিরুদ্ধে হত্যা ও অবমাননার অভিযোগ আছে। তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন। এ সময় একটি অস্ত্র তাক করা হয় তার মাথায়।
কয়েক রাউন্ড গুলি করার পর তিনজন ব্যক্তি, যারা নিজেদেরকে সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দিচ্ছিলেন, তারা দ্রুততার সঙ্গে আত্মসমর্পণ করেন। তাদেরকে নিরাপত্তা হেফাজতে নেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় একজন পুলিশ সদস্য ও একজন সাংবাদিক আহত হয়েছেন। স্থানীয় মিডিয়াকে উদ্ধৃত করে এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। এর কয়েকদিন আগে আতিক আহমেদের টিনেজ ছেলেকে পুলিশ গুলি করে হত্যা করে।
এরও আগে পুলিশ থেকে নিজের জীবনের ওপর হুমকি আছে বলে দাবি করেছিলেন আতিক আহমেদ। ভিডিওতে দেখা গেছে আতিক আহমেদ এবং তার ভাই আশরাফ একটি হাসপাতালে যাচ্ছিলেন মেডিকেল চেকআপের জন্য।
বিজ্ঞাপন
হাসপাতাল থেকে সামান্য দূরে তারা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। এখানেই তাদেরকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। একটি হত্যা মামলায় জড়িত থাকায় আতিক আহমেদের টিনেজ ছেলে আসাদ এবং অন্য একজন পুলিশের খাতায় ওয়ান্টেড। এ সপ্তাহের শুরুর দিকে তাকে পুলিশ হত্যা করেছে। একে বলা হয়েছে শুটআউট।
ফুটেজে দেখা যায় আতিক আহমেদের কাছে জানতে চাওয়া হয় তার ছেলের দাফন অনুষ্ঠানে তিনি যোগ দিয়েছিলেন কিনা। এ সময় টিভির ক্যামেরা সচল ছিল। তাতে আতিক আহমেদকে তার জীবনের শেষ শব্দ বলতে শোনা যায়। তিনি পুলিশের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন- তারা আমাদেরকে নিয়ে যায়নি। তাই আমি যেতে পারিনি।
উল্লেখ্য, আতিক আহমেদ একজন সাবেক এমপি। তার ভাই পুলিশি হেফাজতে ছিলেন। তাকে নেয়া হয়েছিল উত্তর প্রদেশের প্রয়াগরাজে। এখানেই আতিক আহমেদের বিরুদ্ধে হত্যা ও অবমাননার অভিযোগ বিচারাধীন। এর আগে অপহরণের দায়ে অভিযুক্ত হন আতিক আহমেদ। তখন ২০১৯ সালে তাকে জেল দেয়া হয়।
গত মাসে তিনি সুপ্রিম কোর্টে একটি পিটিশন দাখিল করেন। তাতে তিনি পুলিশের আচরণ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন। বলেন, তার জীবনের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে পুলিশ। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট সেই পিটিশন শুনানি করতে অস্বীকৃতি জানায়। উল্লেখ্য, উত্তর প্রদেশ শাসন করছে হিন্দুত্ববাদী জাতীয়তাবাদী দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। সেখানে এসব হত্যার সমালোচনা করছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। তারা বলছে, নিহতদের নিরাপত্তায় ঘাটতি ছিল।
এই প্রদেশে বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্ত কমপক্ষে ১৮০ জন মানুষকে ৬ বছরে হত্যা করেছে পুলিশ। বিরোধীরা বলছে, রাজ্যটিতে ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে পুলিশকে অভিযুক্ত করছে মানবাধিকার বিষয়ক কর্মীরা। তবে রাজ্য সরকার সেই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।