ক্রাইমবাতা ডেস্ক রিপোট: বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন ও ডিফেন্ডার মাসুরা পারভীন ঈদুল ফিতর উদ্যাপন করতে সাতক্ষীরার বাড়িতে এসেছেন। নিজ নিজ পরিবারের সঙ্গে গল্প, আড্ডা ও আনন্দে বেশ ভালো সময় পার করছেন এই দুই নারী ফুটবলার।
মাসুরা পারভীনের বাড়ি সাতক্ষীরা শহর থেকে চার কিলোমিটার দূরে বিনেরপোতা এলাকায়। আর সাবিনা খাতুনের বাড়ি সাতক্ষীরা শহরের মেহেদিবাগ এলাকায়। আজ শনিবার সকাল নয়টার দিকে মাসুরাদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাবার দোকানে বসে আছেন মাসুরা। তিনি বলেন, প্রচণ্ড গরম, বাবার দোকানের ভেতর কিছুটা ঠান্ডা। তাই দোকানে বসে আছেন।
মাসুরার পাশে বসে ছিলেন তাঁর ছোট বোন সুমাইয়া। দুই বোন বেশ আড্ডা-খুনসুটিতে মেতে ছিলেন। আলাপকালে মাসুরা জানালেন, ১৩ এপ্রিল রাতে ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরেছেন। বাড়ি এসে দুই বোনের জন্য গাউন কিনেছেন। বাবার জন্য কিনেছেন পাঞ্জাবি আর লুঙ্গি। মায়ের জন্য কিনেছেন শাড়ি। এ সময় পাশ থেকে বাবা রজব আলী বললেন, মাসুরা নিজের জন্য কিনেছেন অতি সাধারণ সালোয়ার-কামিজ। ঈদের জন্য অন্যান্য বাজারসদাই করেছেন। বাড়ি থেকে এখনো বের হননি।
ঈদের দিন কোথাও যাননি মাসুরা। অতিথি এলে নিজে হাতে আপ্যায়ন করেন। বাকি সময়টা মা–বাবা ও বোনদের সঙ্গেই ছিলেন। ঈদের সব রান্না তাঁর মা ফাতেমা বেগম করেছেন। মাসুরা বলেন, ঈদের পরের দিন ভোরে মা আর তাঁরা তিন বোন যান তালা উপজেলার জিয়ালা নলতা গ্রামের মামাতো বোনের বিয়েতে। সেখান থেকে ২৬ এপ্রিল বাড়ি ফিরে আসবেন। পরে ওই দিন ঢাকায় আসবেন।
কথায় কথায় মাসুরা পারভীন জানালেন, সরকারিভাবে তাঁরা একখণ্ড জমি পান। সেখানে মাটি তুলে প্রায় ১০ লাখ টাকা খরচ করে ঘর করার পর জানতে পারেন, সেই জমি সড়ক ও জনপথ বিভাগের। ঘর ভেঙে দেওয়ার জন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগ তাঁদের নোটিশ দেয়। পরে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপে ঘর ভাঙা বন্ধ আছে। তিনি আরও বলেন, এখানকার পানি মুখে দেওয়া যায় না। আশপাশে সব বিল এলাকা। ইতিমধ্যে বাবাকে কিনে দেওয়া ইঞ্জিনচালিত ভ্যানটি চুরি হয়ে গেছে।
ওই স্থানটি বসবাসের উপযোগী নয় উল্লেখ করে মাসুরা বলেন, অন্য স্থানে জমি দিয়ে ঘর বানিয়ে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন মহল প্রতিশ্রুতি দিলেও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না।
সকাল ১০টার দিকে সাতক্ষীরা শহরের মেহেদিবাগ এলাকায় জাতীয় নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুনের বাড়িতে গিয়ে জানা যায়, তিনি ঘুমিয়ে আছেন।
মিনিট দশেক পরে কুশল বিনিময়ের পর সাবিনা খাতুন জানালেন, ১৪ এপ্রিল ঢাকা থেকে বাড়িতে এসেছেন। বাড়ি এসে ঈদ উপলক্ষে মা ও বোনদের জন্য জামাকাপড় ও বাজার করেছেন। বাড়িতেই শুয়ে-বসে এবং মা ও বোনের সঙ্গে গল্প করে সময় কাটাচ্ছেন। প্রচণ্ড গরম ও বৈরী আবহাওয়া, তাই বাইরে যাওয়ার পরিবেশ নেই। ঈদের দিন বাড়িতেই ছিলেন।
কিছু বন্ধুবান্ধবী বাড়িতে আসতে পারেন, তাঁদের সঙ্গে আড্ডা দেন বলে জানান সাবিনা। তাঁদের পাল্লায় পড়ে সন্ধ্যার পর বাড়ির বাইরে যাওয়া হতেও পারে। তবে তিনি সারা দিন বাড়িতেই থাকতে চান। সাবিনা বললেন, ঈদের জন্য বাড়িতে সাধারণ খাবার তৈরি হয়েছে। ঈদের পরের দিন বিকেলে বাড়ির সবাই মিলে যান গ্রামের বাড়ি আশাশুনি উপজেলার শ্রীউলা ইউনিয়নের ত্রিমোহিনী গ্রামে। সেখানে চাচাদের বাড়িতে থাকবেন ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত। ২৭ এপ্রিল ফিরবেন সাতক্ষীরার বাড়িতে। ২৮ এপ্রিল ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবেন।