॥ মনসুর আহমদ ॥
বাংলা সাহিত্যে সৃষ্টির এক শ্রেষ্ঠ উপহার- ‘ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ…।’ ঈদের খুশি সৃষ্টির প্রেরণা জোগায় প্রকৃতিতে, জীবনের সর্বস্তরে। রমজানের কৃষ্ণপক্ষের চাঁদ আকাশে বিলীন হয়ে গেলে আবার নতুন চাঁদ দেখা দেয় পশ্চিম আসমানে ঈদের খুশির বার্তা নিয়ে। সৃষ্টির নতুন প্রেরণা নিয়ে আগমন ঘটে ঈদের নতুন চাঁদের। কবি হাফিজ ঈদ স্মরণে বলেছেন, ‘ঈদাস্ত ও মওসুমে গুল ও ইয়ারা দর ইন্তেজার…’- ঈদ এলো, আনন্দের বসন্ত এলো, বন্ধু আমার অপেক্ষায়…।
মুসলিম জাহান ঈদের আগমনের অপেক্ষায় থাকে ঈদ-আনন্দ সবাই ভাগাভাগি করে নিতে। প্রকৃতি ও পুরুষের মিলনানন্দে ধরণীর কুল ছাপিয়ে ওঠে। ঠিক তেমনি প্রিয় মাহবুবের হুকুম পালনের সফলতার কারণে একইভাবে মুসলিম জাহানের শিশু-কিশোর, যুবক-যুবতী কৃষক-শ্রমিক, মজুর-কুলি, ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ, কবি-সাহিত্যিকদের চিত্তসাগরে জাগ্রত হয় খুশির মউজ। সবাই ঈদের চাঁদের অপেক্ষায় থাকে। তাদের অন্তরতলে গোপনভাবে আনন্দের সুর বাজতে থাকে সারা রমজান ধরে। আর ঈদের চাঁদ দেখে আনন্দে সবাই আকুল হয়ে ওঠে। এ আনন্দ শুধু রসনার তৃপ্তি ও কামনার বহ্নি জ্বালা মেটাবার আনন্দ নয়। এ উৎসবের সাথে জড়িয়ে আছে ধর্মীয় মূল্যবোধ।
ঈদ উৎসবের সূচনা হয় হিজরী দ্বিতীয় সন থেকে। জাহেলি যুগে আরবের মক্কায় ‘উকায’ মেলা এবং মদীনায় ‘নওরোজ’ ও ‘মেহেরজান’ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে অশ্লীল আনন্দ-উল্লাস করা হতো। রাসূল [সা.] এসবের মোকাবিলায় মুসলমানদের মধ্যে নির্মল আনন্দ উপভোগের জন্য ঈদ-উৎসবের আয়োজন করেন। এই আনন্দ শুরু হয় ঈদগাহে দু’রাকাত নামাজ আদায়ের মাধ্যমে।
ঈদের আনন্দে বর্তমানে কিছুটা বিবর্তন এসেছে। আজ আনন্দের আমেজ ওঠে চাঁদ দেখার পরেই নয়, বরং আনন্দের জোয়ার বইতে শুরু করে রমজানের চাঁদ দেখার আগে থেকেই। বিশেষ করে ব্যবসায়ী সমাজ ঈদের চাহিদা মেটাতে পণ্যের সৃষ্টি ও সরবরাহের কাজে লিপ্ত হয়ে পড়ে রমজান শুরুর আগে থেকেই। ভোক্তারাও ব্যস্ত হয়ে যায় ঈদের জন্য নতুন নতুন পণ্য সংগ্রহে। এ সুযোগে অসৎ ব্যবসায়ীরা দ্রব্যমূল্য চড়াতে এমন দুর্নীতির আশ্রয় নেয় যে, ভোক্তাদের ঈদের আনন্দ পানসে হয়ে যায়। রাজনীতিবিদরাও অপেক্ষায় থাকে রমজানের জন্য, ঈদের জন্য। তখন তারা ইফতার পার্টিতে এমন ব্যস্ত হয়ে পড়ে, যা সারা বছরেও চোখে পড়ে না। তাদের এ আয়োজনের পেছনে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার গোপন ইচ্ছা থাকলেও থাকতে পারে; কিন্তু তার মাধ্যমে সমাজে যে একটি ভিন্নতর পবিত্র ও মার্জিত সংস্কৃতির আবহ সৃষ্টি হয়, তাতে সন্দেহ নেই।
সাহিত্য-সংস্কৃতিজগতে ঈদ নিয়ে আসে নতুন নতুন সৃষ্টির উল্লাস। সৃষ্টি হয় নতুন নতুন নাটক, সিনেমা; রচিত হয় নতুন নতুন উপন্যাস, গল্প ও গান। তাই নিয়ে প্রকাশিত হয় বিভিন্ন সাময়িকী। আর এমন সৃষ্টির জন্য জন্য লেখক-লেখিকারা রমজান শুরুর আগ থেকেই ব্যতিব্যস্ত হয়ে ওঠেন, অপেক্ষায় থাকেন তাদের শ্রেষ্ঠ রচনাটি পত্রিকায় ছাপানোর জন্য। এই সৃষ্টির অনুপ্রেরণার পেছনে তাদের নীতি আদর্শ ও সমাজ সংস্কারের যে মহান উদেশ্য থাকার প্রয়োজন ম্লান হয়ে হয়ে যায় অনেকের অর্থ প্রাপ্তির লোভে।
ধর্মীয় চেতনাবোধ সৃষ্টিতে সাময়িকী কেমন অবদান রাখতে পারে, তা সহজেই অনুমান করা যায় বিভিন্নকালের রচিত বিভিন্ন সাময়িক পত্রিকার দিকে তাকালে। উনিশ শতকের শেষার্ধে বাংলা গদ্য সাহিত্যের বিকাশ এবং জ্ঞান-বিজ্ঞান, ধর্ম ও দর্শনতত্ত্বের চর্চা এবং রস-সাহিত্য সৃষ্টিতে গদ্যভাষার ব্যাপক প্রয়োগের ক্ষেত্রে বাংলা সাময়িক পত্রপত্রিকার ভূমিকা অসামান্য।… বাংলা সাময়িক পত্রিকা প্রকাশনার ইতিহাসে শ্রীরামপুর মিশনরীদের প্রচেষ্টা সর্বাগ্রে স্মরণীয়। প্রথম বাংলা সাময়িক পত্রিকা প্রকাশের এই কৃতিত্ব এ মিশনারিদের প্রাপ্য। মিশনারি মার্শম্যানের সম্পাদনায় ১৮১৮ খ্রিষ্টাব্দে দিগদর্শন মাসিক পত্রিকা প্রকাশিত হয়। মার্শম্যান সম্পাদিত অপর উল্লেখযোগ্য পত্রিকা ‘সমাচার দর্পণ’।
সমাচার দর্পণ একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা। দেশীয় পণ্ডিত-মুনীষীগণ এই পত্রিকা দুটির প্রধান লেখক ছিলেন। ভাষা সাহিত্য, শিক্ষা-সমাজ সম্পর্কিত বাঙালি সমাজের বিভিন্ন দিকের পূর্ণাঙ্গ বিবরণ এই পত্রিকায় প্রকাশিত হতো।.. ‘সমাচার দর্পণ’ পত্রিকার মাধ্যমে খ্রিষ্টান মিশনারিগণ হিন্দু ধর্মের প্রতি যে আক্রমণ পরিচালনা করে ছিলেন তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ধ্বনিত করার উদ্দেশ্য রাজা রামমোহন রায় এবং ভবানীচরণ মুখোপাধ্যায় সম্মিলিতভাবে ১৮২১ খ্রিষ্টাব্দে ‘সম্বাদ কৌমুদী’ নামে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা প্রকাশ করেন।…
ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের সম্পাদনায় ১৮৩১ খ্রিষ্টাব্দে ‘সংবাদ প্রভাকর’ পত্রিকা প্রকাশের মাধ্যমে বাংলা সাময়িক পত্রিকার ইতিহাসে এক নতুন যুগের উদ্বোধন হয়। সমকালীন শ্রেষ্ঠ সাময়িক হিসেবে ‘সংবাদ প্রভাকর’ পত্রিকার খ্যাতি সুপ্রসিদ্ধ। পত্রিকাটি প্রথমে সাপ্তাহিক রূপে এবং পরে ১৮৩৯ খ্রিষ্টব্দে দৈনিক রূপে প্রকাশিত হতে থাকে। বাংলা তথা ভারতীয় ভাষায় প্রকাশিত ইহাই প্রথম দৈনিক পত্রিকা। এই পত্রিকার মাধ্যমে সৃজনশীল সাহিত্য সৃষ্টিই ছিল ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের মুখ্য উদ্দেশ্য।…
বাংলা সাময়িক পত্রিকার ইতিহাসে ১৮৪৩ খ্রিষ্টাব্দে ব্রাহ্মসমাজের মুখপত্র ‘তত্ত্ববোধিনী’ পত্রিকার প্রকাশ এক তাৎপর্য পূর্ণ ঘটনা। তত্ত্ববোধিনী সভার আদর্শ ও উদ্দেশ্য প্রচারকল্পে পত্রিকাটি আত্মপ্রকাশ করলেও সাম্প্রদায়িক উদ্দেশ্যেও সংকীর্ণ গণ্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি। এই পত্রিকায় ধর্ম, সাহিত্য ও বিজ্ঞান আলোচনাদি মুখ্যত প্রকাশিত হতো।’
এভাবে বঙ্কিমচন্দ্র সম্পাদিত বঙ্গদর্শন এবং সর্বশেষ পর্যায়ে ঠাকুর পরিবারের সংস্কৃতি চর্চার বাহন হিসেবে ‘ভারতী’ পত্রিকার নাম স্মরণযোগ্য। পরবর্তীকালে প্রকাশিত ‘সাধনা’ সাহিত্য পত্রিকায় সাহিত্যচর্চার মাধ্যমে রবীন্দ্র প্রতিভার পূর্ণ পরিণতি লাভ করে এবং ‘সবুজ পত্রের’ সাহিত্য আন্দোলনের ফলে বাংলা কথ্য রীতি সাহিত্যচর্চার মাধ্যম হিসেবে সর্বপ্রথম স্বীকৃতি অর্জন করে।
হিন্দু ধর্মীয় উপাচার ও সংস্কৃতি বেশ আগে থেকে এভাবে সাময়িক পত্রিকার মাধ্যমে প্রচারিত হলেও মুসলিম ধর্মীয় উপাচার, আদর্শ ও সংস্কৃতি সাময়িক পত্রিকার মাধ্যমে প্রচার হতে বেশ সময় নিয়েছে। মুসলিম ঐতিহ্য ও ইসলামের ইতিহাসের কাহিনী সম্পর্কিত বিষয়বস্তু অবলম্বন করে বহু সাহিত্যিকই বাংলা সাহিত্যের বিভিন্ন দিক সমৃদ্ধ করে তুলেছেন। বিশেষত কারবালার কাহিনীকে কেন্দ্র করে গদ্য, পদ্যে বহু রচনা হয়েছে। কিন্তু মুসলিম জাতির প্রধান আনন্দ উৎসব ঈদ নিয়ে তেমন পরিমাণ সৃষ্টি হয়নি। ঈদ শুধু মানুষের হৃদয় তলে আনন্দের, ফল্গুধারাই বইয়ে দেয় না এর মধ্যে রয়েছে সৃজনশীল মানুষের অপার প্রেরণার উৎস।
১৯০৩ সালে প্রথম প্রকাশিত সৈয়দ এমদাদ আলী সম্পাদিত ‘নবনূর’ পত্রিকা-ই খুব সম্ভবত প্রথমবার ঈদ সংখ্যা প্রকাশ করে। এই ‘নবনূর’ পত্রিকাতেই সৈয়দ এমদাদ আলী, কায়কোবাদ ও বেগম রোকেয়া ঈদ নিয়ে কবিতা রচনা করেন। তা ছাড়া ঈদকে কেন্দ্র করে কবিতা ও প্রবন্ধ রচনা করেন মৌলভী মোহাম্মদ নইমুদ্দীন, মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী, মোজাম্মেল হক শান্তিপুরী, শেখ ফজলল করিম প্রমুখ। নজরুলের অব্যবহিত দুই পূর্বসূরি শাহাদত হোসেন ও গোলাম মোস্তফা-ও ঈদ বিষয়ক কবিতা লিখেছেন। তবে নজরুল ইসলামই ঈদকে অসাধারণ সাহিত্যিক রূপ দান করেছিলেন। ঈদকে নিয়ে নজরুল ইসলাম রচিত কবিতাÑ কৃষকের ঈদ, ঈদ মোবারক, ঈদের চাঁদ, সর্বহারা, বকরীদ, শহীদী ঈদ, কোরবানি প্রভৃতি। আর তার গান আছে প্রচুর। এছাড়া নাটক, অভিভাষণ তো আছেই। নজরুল পরবর্তীকালে ঈদের কবিতা-গান লিখেছেন সিকান্দার আবু জাফর, ফররুখ আহমদ, আহসান হাবীব, সানাউল হক, আবুল হোসেন, তালিম হোসেন, কবি সূফিয়া কামাল প্রমুখ অনেক কবি।
‘আমাদের ধর্মীয় ও অন্য উপাচারগুলো সাহিত্য-সংস্কৃতি-নিষিক্ত হতে কয়েকশো বছর লেগে গেল। এখনো তা সম্পূর্ণ হয়েছে বলে মনে করি না আমরা। কয়েকশো বছর ধরে বাঙালি-মুসলমান ঈদ উদযাপন করলেও মাত্র এই শতাব্দীর শুরু থেকে ঈদ সম্পৃক্ত সত্যিকার সাহিত্য রচনা শুরু করেছে। কাজী নজরুল ইসলাম আমাদের দুই ঈদ তথা ধর্মীয় উপাচারগুলোকে অসাধারণ সৌন্দর্য ও তাৎপর্যে মণ্ডিত করে এক যুগান্তর সৃষ্টি করেছিলেন। দেশ বিভাগের পরে ঢাকা যখন বাংলা সাহিত্যের দ্বিতীয় রাজধানী হয়ে ওঠে, তখন স্বাভাবিকভাবে অন্যান্য অনেক কিছুর মতো ঈদ উদযাপনে সাহিত্যিক-সাংস্কৃতিক তাৎপর্যও গরিয়ান ও বলীয়ান হয়ে ওঠে। ঈদ বিষয়ক কবিতা ও গদ্য রচনা, পত্রপত্রিকার ঈদ সংখ্যার প্রকাশ, রেডিও-টেলিভিশনে ঈদ উদযাপনের আনন্দের সংখ্যা সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে মিলিয়ে দেয়। স্বাধীন সার্বভৌম বাংলা দেশের অভ্যুদয়ের পর পত্রপত্রিকার পুষ্টকায় ঈদ সংখ্যার প্রকাশ তাকে আরো একটু গতি দেয়। তবে কথা সাহিত্যে এই বাস্তবতার পুরোপুরি ছাপ যে পড়েনি, তাও স্বীকার করা ভালো। বাঙালি-মুসলমানের যে- বিশিষ্ট জীবনযাপন, আমাদের তথা কথিত বাস্তববাদী কথাসাহিত্য তাকে অস্বীকার করে অনেক সময় এক কল্পিত বাস্তবতার দাবি তুলে এনেছে। কিন্তু তারপরও গত শত বর্ষ ধরে ঈদের কবিতা-গান-কথা সাহিত্য আমাদের ধর্মীয় আনন্দের সঙ্গে সাংস্কৃতিক আনন্দকে একটু একটু করে মিশিয়ে তুলেছে। এই শতাব্দীর সূচনায় যার সূত্রপা, শতাব্দীর শেষে এসে দেখতে পাচ্ছি তার পরিণত রূপ। ঈদ ধর্মীয় উৎসব তো বটেই, আজ সাংস্কৃতিক উৎসবেও পরিণত হয়েছে। আমাদের গৃহ ও সাহিত্যকে, খানিকটা হলেও আনন্দময় করে তুলেছে।’
বাংলাদেশের স্বাধীনতা-উত্তর কালে ঈদকে নিয়ে যা কিছু সৃষ্টি হচ্ছে, তা মৌসুমি সৃষ্টি। রচনার আঙ্গিকের দিক থেকে এসব ঈদ সংকলনমালা বিচিত্র। প্রচলিত নিয়মে অধিকাংশ সংকলনই বিভিন্ন আঙ্গিকের রচনার সংগ্রহ। এগুলোর প্রধান উপজীব্য গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ আর কবিতা এবং সেসবের সঙ্গে নাতিদীর্ঘ সম্পাদকীয় রচনা। অধিকাংশ সংকলনমালার রচনায় বাঙালি-মুসলমানের যে জীবন বৈশিষ্ট্য তা অনুপস্থিত। অধিকাংশ ঈদ সাময়িকীগুলো বের হয় মৌসুমি ও বাণিজ্যিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে। মুসলমানী জীবনবোধ প্রকাশের যে মূল চেতনা, তা সাময়িকীগুলোয় ধর্মনিরপেক্ষতা ও অসাম্প্রদায়িতার জটাজালে আটকে পড়ায় সমাজ সংস্কার ও পবিত্র সংস্কৃতি সৃষ্টিতে এসবের অবদান নগণ্য ও গৌণ হয়ে পড়েছে। লোভী মানুষের নির্বুদ্ধিতার কারণে ঈদের পবিত্র আনন্দ যেমন হারিয়ে যায় নিরানন্দের স্রোতে, কবি কণ্ঠে ধ্বনিত হয়Ñ
‘নগরে ও গ্রামে জমেছে ভিড়,
ভগ্ন -নীড়,-
ক্ষুধিত জনতা আজ নিবিড়।’
অসৎ ব্যবসায়ীদের স্বার্থপরতা ও অর্থগ্রন্ধুতার কারণে যেমন সাধারণ মানুষের ঈদ আনন্দ উবে যায়; তেমনি উদ্দেশ্যপরায়ণ অসাধু দুর্বৃত্তদের হাতে সৃষ্টি চেতনাও রূপান্তরিত হয় অনাসৃষ্টিতে। যে কারণে তখন কবি কণ্ঠে জেগে ওঠে বিদ্রোহের সুরে-
‘বেলাল বেলাল
হেলাল উঠেছে পশ্চিম আসমানে
লুকাইয়া থাক লজ্জায় কেন মরুর গোরস্থানে…’
মৌসুমি সংকলনের গুরুত্ত্ব তার রচনাবলীর বা ভাবনাধারার গুরুত্ত্বের জন্যই শুধু নয়, পরিমাণের জন্যও। ঈদের মৌসুমি সংকলন প্রচুর, তাই ঈদের মৌসুমি সংকলন সাহিত্য সৃষ্টির এক বড় প্রেরণা-উৎসাহের এক প্রবল উৎস। তাই ঈদের সব সৃষ্টিকে অনাসৃষ্টির হাত থেকে বাঁচাতে প্রয়োজন প্রত্যয়ের দৃঢ়তা ও মজবুত মনোবল নিয়ে শিল্প-সাহিত্যসহ সমাজের সর্বস্তরে কাজ করে যাওয়া। আর এ ব্যাপারে দুর্বলতার ফল আল্লামা ইকবালের ভাষায়-
‘তকদীর কি কাজী কা ইয়ে ফতোয়া হায় আজাল সে,
হায় জরমে জয়িফী কি সাজা মরগে মাফাজাত’
-আদিকাল থেকে তকদীরের কাজী এ ফতোয়া দিয়ে রেখেছেন, দুর্বলতার যে অপরাধ এর শাস্তি হচ্ছে মৃত্যু। তাই ঈদ সাময়িকীতে মুসলিম বিশ্বাস ও সুস্থ সংস্কৃতির দুর্বল উপস্থাপনায় যেন জাতির মৃত্যু না ঘটেÑ এই হোক ঈদের কামনা।
তথ্য সূত্র :
১. বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস : অধ্যাপক সূফী মোতাহার হোসেন।
২. বাংলা সাহিত্যে মুসলমান : আবদুল মান্নান সৈয়দ।
Check Also
আশাশুনির খাজরা ইউনিয়নের খালিয়া রাস্তার বেহাল দশা।। বিপত্তিতে শতাধিক পরিবার।।দ্রুত সংস্কার দাবি
এস,এম মোস্তাফিজুর রহমান,আশাশুনি।।আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড খালিয়া গ্রামের সানাপাড়ার প্রায় শতাধিক পরিবার একটি …