তুরস্কের আসন্ন নির্বাচন : চ্যালেঞ্জের মুখে এরদোগানের নেতৃত্ব

॥ মুহাম্মদ লোকমান হোসাইন॥
আগামী ১৪ মে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে তুরস্কের বহুল আলোচিত প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচন। আর মাত্র দুই সপ্তাহ সময় বাকি। ভোটারদের মন জয়ে জোর প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলো। এবারের নির্বাচন খুবই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গত দুই দশক ধরে তুরস্কের নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়ব এরদোগান। তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতা নিশ্চিত করতে লড়ছেন তিনি। তবে অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও সম্প্রতি ভয়াবহ ভূমিকম্পের প্রেক্ষিতে এবারের নির্বাচনে উৎরানো তার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হবে বলে মনে করা হচ্ছে। তাছাড়া এবার তার বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে লড়ছেন প্রভাবশালী নেতা কামাল কিলিচদারুগলু।
তুরস্কের নির্বাচন এত গুরুত্বপূর্ণ কেন? : তুরস্ক একসময় ছিল ঐতিহ্যগতভাবে মুসলিম উম্মাহর অভিভাবক। উসমানীয় সালতানাতের কেন্দ্রভূমি। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে, বিশেষত হাঙ্গেরি, ভিয়েনা, ক্রিমিয়া, বুলগেরিয়া, সার্বিয়া, বসনিয়া, পোল্যান্ড, ভেনিস, আলবেনিয়া, সাইপ্রাস ও ফ্রান্সে ইসলামের ক্রমবিকাশ ধারায় তুর্কি খলিফাদের অবদান ছিল অবিস্মরণীয়। প্রায় ৬শ’ বছর ধরে মুসলমানদের অভিভাবক ছিলেন তারা। ক্ষমতার ভারসাম্য থাকায় প্রতিপক্ষ শক্তি কোনো অঞ্চলে মুসলমানদের নির্যাতন করার দুঃসাহস দেখাতে পারেনি। ১৯২৩ সালে উসমানীয় সালতানাতের পতনের পর থেকে মুসলিম উম্মাহ অভিভাবকহীন হয়ে পড়ে। ১৯২৩ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত তুরস্কে ইসলামপন্থীদের চরম দুর্দিন ছিল। ২০০২ সালের নির্বাচনে একে পার্টির মহাবিজয়ের মধ্য দিয়ে তুরস্কে ইসলামপন্থীদের নব-উত্থান ঘটে। সেই থেকে ধারাবাহিকভাবে ২০ বছর মুসলিমবান্ধব সরকার ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত রয়েছে। তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগান মুসলিম উম্মাহর হারানো গৌরব ও ঐতিহ্য পুনরুদ্ধারে ভূমিকা রাখছেন। তিনি নিজ দেশে ক্রমান্বয়ে ইসলামাইজেশনের কাজ করছেন। ফিলিস্তিনের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন। সিরিয়ার যুদ্ধ, শরণার্থী ইস্যু, রোহিঙ্গা সংকট, কাতার অবরোধ, লিবিয়া সংকটসহ মুসলিম উম্মাহর স্বার্থে সাহসী ভূমিকা পালন করেছেন। এরদোগান নির্বাচিত হলে তিনি মুসলমানদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে আরো জোরালো ভূমিকা রাখতে সমর্থ হবেন।
এরদোগানের বিরুদ্ধে মহাজোট : ছয়টি দল নিয়ে গঠিত এবং ‘টেবল অব সিক্স’ নামে পরিচিত এই জোট নিজেদের মতবিরোধ কাটিয়ে শেষ পর্যন্ত এ নির্বাচনে একক প্রার্থী দিতে সমর্থ হয়েছে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এরদোগানের বিরুদ্ধে যিনি বিরোধী জোটের প্রার্থী হয়েছেন, তিনি জোটের সবচেয়ে বড় ও ধর্মনিরপেক্ষ দল পিপলস পার্টি বা সিএইচপির প্রধান ৭৪ বছর বয়সি কামাল কিলিচদারুগলু। বিভিন্ন জনমত সমীক্ষা বলছে, এরদোগানের সঙ্গে তার তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে। কামাল কিলিচদারুগলু ২০১২ সাল থেকে বিরোধী সিএইচপি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন এবং তিনি এ দল সম্পর্কে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির আমূল পরিবর্তন ঘটাতে সক্ষম হয়েছেন। তিনি সিএইচপিকে কট্টর বামপন্থী কিংবা শুধুমাত্র ধর্মনিরপেক্ষ দল অথবা শুধু আতাতুর্কের দল, এই ধারণা থেকে বের হয়ে এসে সবাইকে একত্রিত করার চেষ্টা করেছেন। এখানে সব ধরনের মতাদর্শের লোক রয়েছে। এমনকি ইসলামপন্থীরাও তার সঙ্গে রয়েছে।
চ্যালেঞ্জের মুখে এরদোগানের নেতৃত্ব : তুরস্কের বর্তমান প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়ব এরদোগান। তিনবার প্রধানমন্ত্রী এবং দুই দফায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। তার এই ক্ষমতা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়বেন তিনি। তুরস্ক যখন বিধ্বংসী ভয়াবহ ভূমিকম্প-পরবর্তী বিপর্যয় মোকাবিলার চেষ্টা করছে, তখনই প্রেসিডেন্ট এরদোগানকে এ কঠিন রাজনৈতিক পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। বিগত ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহের এ ভূমিকম্পে তুরস্কে প্রায় অর্ধলক্ষ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, গৃহহীন হয়েছে ১৫ লাখের মতো মানুষ। এই দুর্যোগ মোকাবিলায় ব্যর্থতার অভিযোগ উঠেছে প্রেসিডেন্ট এরদোগানের বিরুদ্ধে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০১৬ সালে সেনাবাহিনীর অভ্যুত্থানচেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে রাজনৈতিকভাবে একচ্ছত্র আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে সমর্থ হয়েছিলেন এরদোগান। কিন্তু বিপর্যস্ত অর্থনীতি ও ভূমিকম্প-পরবর্তী পরিস্থিতিতে আসন্ন নির্বাচনী বৈরিতা পার হতে পারবেন কিনা, সন্দেহ। তুরস্কের টালমাটাল অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে তার জনপ্রিয়তা কিছুটা হলেও কমেছে। দেশটিতে মুদ্রাস্ফীতি এমন চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, জীবনযাত্রার খরচ মেটাতে মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। চরম মুদ্রাস্ফীতি এবং জীবনযাত্রার খরচের লাগামহীন বৃদ্ধির কারণে দেশটির অর্থনৈতিক অবস্থা এখন করুণ। ডলারের বিপরীতে তুর্কি লিরার দাম কমেছে রেকর্ড পর্যায়ে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকগণ বলছেন, এসব ইস্যুই মে মাসে অনুষ্ঠেয় নির্বাচন এরদোগানের জন্য বড় ধরনের রাজনৈতিক পরীক্ষা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিলিচদারুগলুর নেতৃত্বে বিরোধীরা যে প্রচারণা চালাচ্ছে তাতে মূল কথা হচ্ছে- তুরস্কে এক ব্যক্তির শাসনের অবসান ঘটানো, আইনের শাসন ও সবার জন্য সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা। কিলিচদারুগলু প্রেসিডেন্ট শাসিত সরকার ব্যবস্থা থেকে সংসদীয় পদ্ধতিতে ফিরে যাওয়ারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। অন্যদিকে এরদোগানের নেতৃত্বে ক্ষমতাসীন জোট তাদের প্রচারণায় বলছে, বিরোধী জোটের জোড়াতালির সরকার যদি ক্ষমতায় আসে, তাহলে তারা রাষ্ট্র পরিচালনায় ব্যর্থ হবে। তারা বলছে, বিরোধীরা তাদের প্রার্থী দিতেই এক বছর সময় নিয়েছে। কখনো জোট ভেঙে গেছে, পরে আবার জোড়া লেগেছে। এরকম মতবিরোধ নিয়ে তারা কীভাবে দেশ পরিচালনা করবে? ফলে এ ধরনের কোয়ালিশন সরকার বেশি দিন টিকতে পারবে না। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিরোধী জোটের প্রার্থী কামাল কিলিচদারুগলুর চেয়ে এরদোগানের জনপ্রিয়তা অনেক বেশি। কিন্তু বিরোধীরা যদি তাদের নির্বাচনী প্রচারণায় প্রেসিডেন্ট এরদোগানের বিরুদ্ধে জনগণের ক্ষোভকে কাজে লাগাতে পারেন, তাহলে তার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়তে পারে।
সিএইচপির সাথে সাদাত পার্টির জোট : এবারের নির্বাচনে চরম ইসলামবিরোধী সেক্যুলার সিএইচপির সাথে জোট বেঁধেছে ইসলামপন্থী সাদাত পার্টি। এরদোগানের মতো ব্যক্তি এবং জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির মতো দলের বিরুদ্ধে সাদাত পার্টির এ অবস্থান ইসলামবিরোধী পক্ষের জন্য সুখবর হলেও ইসলামপন্থীদের জন্য এটা বিভেদ-বিভক্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আজকের একে পার্টি ও সাদাত পার্টি একই মূল থেকে পৃথক হওয়া দুটি দল। ২০০১ সালের ২০ জুলাই প্রতিষ্ঠা লাভ করে সাদাত পার্টি। যার চেয়ারম্যান হলেন রেজাই কুতান। অপরদিকে নবীনদের নেতৃত্বে ২০০১ সালের ১৪ আগস্ট গঠিত হয় একে পার্টি। যার চেয়ারম্যান হলেন এরদোগান। এরদোগান তার ক্যারিশমেটিক নেতৃত্বে এবং ইস্তান্বুলের মেয়র হিসেবে অভূতপূর্ব সফলতার কারণে ২০০২ সালের নির্বাচনে ৩৬৩টি আসন পেয়ে প্রধান দলে পরিণত হয়। আর সাদাত পার্টি ২.৫% ভোট পেয়ে অষ্টম দল হলো (ভোট পাওয়ার দিক থেকে)। ফলে পার্লামেন্টে আসন সংখ্যায় একে পার্টি দুই-তৃতীয়াংশের বেশি আসন পেয়ে সরকার গঠন করে ফেলল। ভোটের রাজনীতিতে ২০০২ সালের নির্বাচনের পর থেকে একে পার্টির ভোট ক্রমাগতই বেড়েছে, যেখানে সাদাত পার্টির ভোট কমেছে। ২০০৭ সালের নির্বাচনে একে পার্টির ভোট ১২.২% বেড়ে ৪৬.৬% এ দাঁড়ায়, যেখানে সাদাত পার্টির ভোট কিছুটা কমে ২.৩% এ নেমে আসে। এভাবে ২০১১ সালের নির্বাচনে একে পার্টি ৪৯.৮%, সাদাত পার্টি ১.৩%; ২০১৫ সালের জুনের নির্বাচনে একে পার্টি ৪১, সাদাত পার্টি ২.২% (আরেকটি ছোট দলের সাথে জোট করে); ২০১৫ সালের নভেম্বরের নির্বাচনে একে পার্টি ৪৯.৫%, সাদাত পার্টি ০.৭০% ভোট পায়। ২০১৮ সালের সর্বশেষ নির্বাচনে একে পার্টি ৫০.৩৮%, সাদাত পার্টি ১.৩% ভোট পায়।
একে পার্টির ধারাবাহিক সাফল্য : একে পার্টি তুরস্কের সবচেয়ে বৃহত্তম রাজনৈতিক দল। ২০০২ সাল থেকে দলটি ধারাবাহিকভাবে ক্ষমতায় রয়েছে। দলটির ইংরেজিতে নাম জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (Justice and Development Party)। তুর্কিতে Adalet ve Kalkınma Partisi, (অক বা অক) পার্টি। ২০০২ সাল থেকে সাধারণ নির্বাচনের রেকর্ড নিম্নরূপ- ২০০২ সালের ৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ৫৫০ আসনের পার্লামেন্টে দলটি ৩৬৩টি আসন লাভ করে। প্রাপ্ত ভোট ৩৪.৪২ শতাংশ। ২০০৭ সালের ২২ জুলাই অনুষ্ঠিত নির্বাচনে দলটি ৩৪১টি আসনে জয়লাভ করে। বিগত নির্বাচনের চেয়ে আসন কমলেও প্রাপ্ত ভোট ৪৬.৫৮ শতাংশে উন্নীত হয়। ২০১১ সালের ১২ জুন অনুষ্ঠিত নির্বাচনে দলটি ৩২৭টি আসনে জয়লাভ করে। এবারো বিগত নির্বাচনের চেয়ে আসন কমলেও প্রাপ্ত ভোট বেড়ে ৪৯.৮৩ শতাংশে উন্নীত হয়। ২০১৫ সালের ৭ জুন অনুষ্ঠিত নির্বাচনে দলটি ২৫৮টি আসনে জয়লাভ করে। প্রাপ্ত ভোট ৪০.৮৭ শতাংশ। ২০১৫ সালের ১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে পার্লামেন্টে দলটি ৩১৭টি আসনে জয়লাভ করে। এবারে বিগত নির্বাচনের চেয়ে আসন বৃদ্ধি পায়। প্রাপ্ত ভোট ৪৯.৫০ শতাংশ। আর সর্বশেষ ২০১৮ সালের ২৪ জুন অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ৬০০ আসনের পার্লামেন্টে দলটি ২৯৫টি আসনে জয়লাভ করে। প্রাপ্ত ভোট ৪২.৫৬ শতাংশ। অন্যদিকে ২০১৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে একে পার্টির প্রার্থী রজব তৈয়ব এরদোগান ৫২.৫৯ শতাংশ ভোটে জয়ী হন।
সিএইচপির সাফল্য-ব্যর্থতা : সিএইচপি তুরস্কের সবচেয়ে পুরাতন রাজনৈতিক দল। মোস্তফা কামাল পাশা কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত এই দলটির ইংরেজি নাম Republican People’s Party সংক্ষেপে সিএইচপি। ১৯২৩ সালের ৯ সেপ্টেম্বর সিএইচপি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ইসলাম ও ইসলামী রীতিনীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় দলটি। মোস্তফা কামাল পাশা ছিলেন চরম ধর্মবিদ্বেষী। আধুনিকতার নামে দেশের জনগণকে ইসলামের বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়েছেন। খেলাফত ব্যবস্থা বিলুপ্ত করেন, ধর্মীয় শিক্ষা বন্ধ করে ইউরোপীয় শিক্ষা চালু করেন, হিজাব-পর্দা নিষিদ্ধ করেন, ধর্মীয় পোশাক বন্ধ করেন, আরবী ভাষায় আযান বন্ধ করেন, তুর্কি ভাষার আরবী বর্ণমালা পরিবর্তন করে লাতিন হরফ চালু করেন, ইসলামী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের আদেশ জারি করেন এবং শরিয়া আদালতগুলো বন্ধ করে দিয়ে বিজাতীয় দণ্ডবিধির ওপর ভিত্তি করে নতুন আইন প্রবর্তন করেন। হজব্রত পালনেও বাধার সৃষ্টি করা হয়। কামাল আতাতুর্ক প্রবর্তিত ধর্মদ্রোহিতা বহু বছর তুরস্কে কার্যকর ছিল। ১৯৩৮ সালের ১০ নভেম্বর কামাল পাশার মৃত্যুর পর ১১ নভেম্বর ইসমত ইনোনু প্রেসিডেন্ট পদে অধিষ্ঠিত হন। তিনি ১৯৫০ সালের ২৭ মে পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার পর মোস্তফা কামাল পাশার সিএইচপি ক্ষমতা হারায়। পরবর্তীতে সিএইচপি আর ক্ষমতা লাভে সমর্থ হয়নি। ২০০২ সালে ১৭৮ আসন (প্রাপ্ত ভোট ১৯.৪২ শতাংশ), ২০০৭ সালে ১১২ আসন (প্রাপ্ত ভোট ২০.৮৮ শতাংশ), ২০১১ সালে ১৩৫ আসন (প্রাপ্ত ভোট ২৫.৯৮ শতাংশ), ২০১৫ সালে ১৩২ আসন (প্রাপ্ত ভোট ২৪.৯৫ শতাংশ), সর্বশেষ ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত পার্লামেন্ট নির্বাচনে ১৪৬টি আসন লাভ করে (প্রাপ্ত ভোট ২২.৬৫ শতাংশ)। অন্যদিকে ২০১৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সিএইচপির প্রার্থী ৩০.৬৪ শতাংশ ভোট পান। উল্লেখ্য যে, মোস্তফা কামাল পাশা প্রতিষ্ঠিত সিএইচপি দলটি একসময় তুরস্কের রাজনীতিতে গুরুত্ব হারাতে বসেছিল। এ প্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের সাধারণ নির্বাচনে একে পার্টিকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য ইয়ি পার্টি, সাদাত পার্টি ও ডেমোক্র্যাট পার্টিকে নিয়ে সিএইচপি জাতীয় জোট গঠন করে। এই জোট গঠনের আগে সিএইচপির ভোট ২২ শতাংশে নেমে গেলেও অন্য দলগুলোর ভোট যোগ হওয়ায় প্রেসিডেন্ট পদে তাদের প্রার্থী মুহাররেম ইনজে ৩০.৬৪% ভোট লাভে সমর্থ হন।
জনমত জরিপে এরদোগানই এগিয়ে : তুরস্কের ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট রজব তৈয়ব এরদোগান নিজের দীর্ঘ শাসনামলে এবারের নির্বাচনে সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হয়েছেন। তবে জয়-পরাজয়ের এ খেলায় শেষ হাসি এরদোগানই হাসবেন- এমনটাই আভাস পাওয়া যাচ্ছে। নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর পর থেকে জনমত জরিপে কিছুটা এগিয়ে ছিলেন এরদোগান বিরোধী জোটের প্রার্থী। কিন্তু নির্বাচন যতই এগিয়ে আসছে, ততই জনমত জরিপে এগিয়ে যাচ্ছেন ক্ষমতাসীন একে পার্টির নেতা এরদোগান। গত ১২ থেকে ১৪ এপ্রিলের মধ্যে একটি জরিপ করে আরেদা নামে একটি জরিপ সংস্থা। ১০ হাজারের বেশি মানুষ অংশ নেন ওই জরিপে। জরিপে দেখা গেছে, এরদোগানের পক্ষে ভোট দিয়েছেন প্রায় ৫০.৮ শতাংশ অংশগ্রহণকারী। এরদোগানের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কিলিচদারুগলুর পক্ষে ভোট দিয়েছেন ৪৩.১ শতাংশ মানুষ। নির্বাচন দ্বিতীয় দফায় গড়ালে সেক্ষেত্রে এরদোগানই এগিয়ে থাকবেন বলে জরিপে উঠে এসেছে।

Check Also

আশাশুনির খাজরা ইউনিয়নের খালিয়া রাস্তার বেহাল দশা।। বিপত্তিতে শতাধিক পরিবার।।দ্রুত সংস্কার দাবি 

এস,এম মোস্তাফিজুর রহমান,আশাশুনি।।আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড খালিয়া গ্রামের সানাপাড়ার প্রায় শতাধিক পরিবার একটি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।