সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তুরস্ক নিয়ে নানা ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করে আসছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান ও তার প্রশাসনের কর্মকর্তারা। এক্ষেত্রে ২০১৬ সালে এরদোগান সরকারকে ফেলে দিতে ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থান তো সেটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে।
এ ছাড়া বিভিন্ন সময়ে বড় বড় সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটানো হয়েছে। আর সর্বশেষ আগামী ১৪ মের নির্বাচনে এরদোগানকে পরাজিত করতে বিরোধী ধর্মনিরপেক্ষ প্রার্থী কামাল কিলিকদারোগ্লুকে সমর্থন দিচ্ছে দেশি ও বিদেশি চক্র। খোদ তুর্কি নেতা এ অভিযোগ করে আসছেন। কোনো রাগঢাক না করে তিনি বলেছেন, এদের নাটাই সাম্রাজ্যবাদীদের হাতে। এরা তাদের দাবার গুটি।
কিন্তু কেন এরদোগানকে হটানোর জন্য মরিয়া আন্তর্জাতিক শক্তি ও তাদের দেশীয় দোসররা? কেনই বা বার বার তুরস্ককে টার্গেট করা হচ্ছে। এর কারণ জানিয়েছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট নিজেই।
তুর্কি সংবাদমাধ্যম হুরিয়াত ডেইলি জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট এরদোগান মঙ্গলবার দেশটির আন্তালিয়া প্রদেশে এক নির্বাচনি সমাবেশে ভাষণ দেন।
সেখানে তিনি বলেন, ‘আমরা যদি তুরস্ককে আজকের পর্যায়ে না আনতাম, আপনারা নিশ্চিত থাকুন, কেউ আমাদের ব্যাপারে কোনো আপত্তি করতো না। আমরা টার্গেটে (লক্ষ্য) পরিণত রয়েছি এ কারণে যে, আমরা লড়াই করাকে বেছে নিয়েছি, আত্মসমর্পণ নয়।’
আগামী ১৪ মে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচন। আসন্ন এই নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট পদে চারজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও মূল লড়াই হবে ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান ও বিরোধী জোট নেশন অ্যালায়েন্সের প্রার্থী কামাল কিলিকদারোগ্লুর মধ্যে।
কামাল পাশা আতাতুর্কের উত্তরসূরী ধর্মনিরপেক্ষ দল সিএইচপির নেতার বিরুদ্ধে আগে থেকেই নানা অভিযোগ করে আসছেন ইসলামপন্থি দল একে পার্টির নেতা এরদোগান। বিশেষ করে, কিলিকদারোগ্লুরা আবারো তুরস্ককে সেই অরাজকতার যুগে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চায় বলে অভিযোগ তুর্কি নেতার।
এরদোগানের অভিযোগ, কিলিকদারোগ্লু নিষিদ্ধঘোষিত সন্ত্রাসী সংগঠন পিকেকে-এর সমর্থক। এমনকি তাদের লক্ষ্য হলো পিকেকে-এর সমর্থক এইচডিপির ভোট পেতে দলটির সাবেক কো-চেয়ারম্যান সেলহাতিন ডেমিরতাসকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া।
এ প্রসঙ্গে কিলিকদারোগ্লুকে চ্যালেঞ্জ দিয়ে এরদোগান বলেন, ‘আপনি যদি সত্যিকারের রাজনীতিবিদ হন, তাহলে আপনি এর ব্যাখ্যা দিবেন। কিন্তু তার জীবন মিথ্যায় ভরপুর। আমার প্রিয় জাতি আগামী ১৪ মে এই মিথ্যাবাদীদের প্রত্যাখ্যান করবে।’
পিকেকে-এর প্রতি সমর্থন করার বিষয়ে কিলিকদারোগ্লুকে অভিযুক্ত করে তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘কারা মি. কামালকে সমর্থন করে? এই সন্ত্রাসীরা (পিকেকে), যাদের কোনো ধর্ম নেই, কোনো পতাকা নেই, কোনো প্রার্থনা (ইবাদত) নেই।’
এরদোগান বলেন, ‘নেশন অ্যালায়েন্সের লক্ষ্য হলো- তুরস্ককে এমন একটি গর্তের মধ্যে ফেলে দেওয়া, যেখান থেকে অন্তত আগামী ৫০ বছরে উঠে দাঁড়ানো সম্ভব না হয়।’