সাতক্ষীরায় রসুলপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের জরাজীর্ণ ঝুঁকিপূর্ণ কক্ষে চলছে পাঠদান, শ্রেণীকক্ষ সংকটে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম

নিজস্ব প্রতিনিধি : বিদ্যালয়ের জরাজীর্ণ ঝুঁকিপূর্ণ কক্ষে চলছে পাঠদান। বিদ্যালয়টির ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ছে। দেয়ালের ইট বের হয়ে গেছে। শিক্ষার্থীরা ভয়ে ক্লাসে বসছে না। এমন করুণ দশা সাতক্ষীরা সদর উপজেলার রসুলপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের। জানা গেছে, ১৯৮৮ সালে একুশে পদক ও মহান স্বাধীনতা পুরস্কার প্রাপ্ত জাতীয় অধ্যাপক মরহুম ডা. এম.আর খান তার নিজ গ্রাম রসুলপুরে রসুলপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত করেন। অত্র এলাকাসহ স্থানীয় ৫৫০ জন শিক্ষার্থী বিদ্যালয়টিতে পড়াশোনা করছে। শ্রেণীকক্ষ সংকটে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম। ফলে ঝুঁকিপূর্ণ পুরনো ভবনে চলছে বিদ্যালয়টির পাঠদান। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, রসুলপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে রয়েছে ছোট আকারে পাকা ভবন। ভবনের প্রায় সব কক্ষই মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। রীতিমতো জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলছে পাঠদান ও পাঠগ্রহণ। যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থী সুরাইয়া, মুর্শিদা, লামিয়া, শাওন ও সাকিব এবং ৮ম শ্রেণির ‘খ’ শাখার ক্লাস চলাকালে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা হলে শিক্ষার্থী রিমি খাতুন, রাকিবা ইসলাম, মেহেরিন ও রুবাবা খাতুন জানায়, শ্রেণিকক্ষের ছাদের পলেস্তারা খসে প্রায়ই নিচে পড়ে। ক্লাস শেষ করে স্যার চলে গেলেই আমরা ক্লাস থেকে বের হয়ে যাই। কেননা আমরা সব সময় ভয়ে থাকি, কখন ছাদের পলেস্তারা ভেঙে মাথায় পড়ে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুলতানা নারগিস জানান, আমাদের বিদ্যালয়টির ভবন বেশ পুরনো। এর অবস্থা জরাজীর্ণ। শ্রেণিকক্ষ পাঠদানের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে এবং বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। তিনি আরো জানান, ভবনের এমন সমস্যার কারণে সাইকেল সেডের টিনের ঘরে গাদাগাদি করে কয়েকটি ক্লাস নিতে হচ্ছে। বিদ্যালয়ের ভবন জরাজীর্ণ হওয়ায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা চরম আতঙ্কে আছি। পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। ক্লাস শেষ হলেই শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষ থেকে বের হয়ে যায়। অনেক শিক্ষার্থী ভয়ে বিদ্যালয়ে আসছেনা।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মকসুমুল হাকিম জানান, দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়টি অযতেœ অবহেলায় রয়েছে। পুরনো জরাজীর্ণ ভবনে পাঠদান করা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। ঝড়-বৃষ্টিতে শিক্ষার্থীদের ক্লাস করানো যায় না। পাঠদানসহ শিক্ষা কার্যক্রম ভালোভাবে অব্যাহত রাখতে দ্রুত বিদ্যালয়ে বহুতল ভবন নির্মাণের দাবি জানান। সেই সাথে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জরাজীর্ণ ভবন ভেঙ্গে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য আবেদন পত্র পাঠানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান।’
এ বিষয়ে সাতক্ষীরা জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার অজিত কুমার সরকার জানান, শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন জরাজীর্ণ বিদ্যালয় ভবনগুলি চিহ্নত করে তালিকা তৈরী করতে। আমরা খুব শিগগিরই তালিকা করবো এবং রসুলপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় সেই তালিকায় অবশ্যই থাকবে।
এব্যাপারে রসুলপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক/শিক্ষার্থী ও অভিভাবকসহ এলাকাবাসীর দাবী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সাতক্ষীরাতে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বহুতল ভবন নির্মাণ হলেও রসুলপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আজো কোন নতুন ভবন হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে রয়েছে অবহেলিত। তাই অতিদ্রুত পুরনো জরাজীর্ণ ঝুকিপূর্ণ ভবন ভেঙ্গে নতুন বহুতল ভবন নির্মাণ করা হোক।

Check Also

যশোর বেনাপোল দিয়ে ভারতে প্রবেশের সময় কলারোয়ার আ’লীগ কাউন্সিলর গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিনিধি :- সাতক্ষীরা: যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।