ক্রাইমবাতা রিপোট: কালিগঞ্জ:
চাঁদাবাজি ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে কালিগঞ্জের ১১ নং রতনপুর ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য বাবু গাজীসহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে। কালীগঞ্জ উপজেলার রতনপুর ইউনিয়নের গোয়ালপোতা গ্রামের মৃত : গফ্ফার গাজীর ছেলে । তাছাড়া অন্যরা হলেন একই গ্রামের মৃত- গফুর সরদারের ছেলে মুনসুর সরদার সহ আরো অজ্ঞাতনামা ৪-৫ জন। এই মর্মে গত ০৭-০৫-২০২৩ তারিখ রবিবার একই ইউনিয়নের মহেশকুড় গ্রামের শেখ আমিনুর রহমানের ছেলে শেখ ফিরোজ আহমেদ কালিগঞ্জ থানায় একটি এজাহার দায়ের করেছেন।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত ইউপি সদস্য বাবু গাজীর নেতৃত্বে অন্যান্য অভিযুক্তরা কালীগঞ্জ থানার মহেশকুড় ব্রিজের দক্ষিণ পার্শ্বে প্রবহমান খালে অবৈধ ভেড়ীবাঁধ নির্মাণ করে পানি প্রবাহ বন্ধ করে এবং উক্ত পানি খালের দুই পাশে অবস্থিত মৎস্য ঘেরে সরবরাহের নিমিত্তে ঘের মালিকদের ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে মোটা অংকের চাঁদা আদায় করে থাকে ইউপি সদস্য বাবু । মহেশকুড় ব্রিজের দক্ষিণ পার্শ্বে খালে অবস্থিত অবৈধ বেড়িবাঁধের পশ্চিম পাশে এজাহার-কারীর একটি পুকুর আছে। অভিযুক্তদের অবৈধ ভেড়ি বাঁধের কারণে একপাশে পানির চাপ সৃষ্টি হয়।
ফলে এজাহারকারীর পুকুরের পাড় ভেঙ্গে আনুমানিক ১,৫০,০০০ টাকার ক্ষতি হয়। অবৈধ ভেড়িবাঁধ উচ্ছেদের জন্য এজাহারকারি গত ইংরেজি ১১-০৮-২০২২ তারিখে ইউএনও অফিসে একটি অভিযোগ দায়ের করেন, যার রিসিভ নম্বর -১০১৩। পরবর্তীতে সহকারী কমিশনার ভূমি সরেজমিনে তদন্ত করিয়া ঘটনার সত্যতা পান এবং অবৈধ বাঁধ উচ্ছেদের জন্য স্থানীয় জনগণকে অনুমতি দেন।
ঘটনার দিন সকাল আনুমানিক ১২.০০ ঘটিকার সময় স্থানীয় ৩০/৪০ জন উক্ত খালের অবৈধ ভেড়িবাঁধ উচ্ছেদ করাকালীন সময় উল্লেখিত অভিযুক্তরা এজাহারকারীকে কথা বলার জন্য ডাকে এবং ভুক্তভোগী তাদের কাছে পৌঁছানো মাত্রই অভিযুক্তরা বলেন যে, “আমরা প্রতিবছর এইখান থেকে ঘের মালিকদের নিকট থেকে ৩০০০০০০(ত্রিশ লক্ষ )টাকা চাঁদা আদায় করে থাকি, তুই কেন বাঁধ কাটলি? তুই এখন সমগ্র ঘেরের চাঁদা বাবদ ৩০০০০০০ (ত্রিশ লক্ষ) টাকা আমাদের দিবি।” ভুক্তভোগী চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে, অভিযুক্তরা ভুক্তভোগী ফিরোজ আহমেদকে এলোপাতাড়ি মারপিট শুরু করে এবং বাবু গাজী ভুক্তভোগী কে হত্যার উদ্দেশ্যে গলা চেপে হত্যা চেষ্টা করে।
তখন স্থানীয় জনগণ ধাওয়া করলে অভিযুক্ত বাবু গাজীসহ সকল অভিযুক্তরা দ্রুত মোটরসাইকেল যোগে পালিয়ে যায়। এ সময় অভিযুক্তরা এজাহার কারীকে হত্যা করা সহ বিভিন্ন ক্ষয়ক্ষতি ও মিথ্যা মামলায় হয়রানি করার হুমকি প্রদর্শন করে। এরপর স্থানীয়দের সহযোগিতায় আহত ফিরোজ আহমেদ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়ে থানায় হাজির হয়ে এই এজাহার দায়ের করে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ফিরোজ আহমেদ বলেন,”বাবু গাজীর নেতৃত্বে খালে অবৈধ ভেড়িবাঁধ দেয়া হয়,এই বাঁধের কারণে প্রতিবছর শত শত বিঘা জমির ফসল বন্যায় প্লাবিত হয়। অথচ বাবু গাজীসহ তার সঙ্গীরা প্রতিবছর ঘের মালিকদের নিকট থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা চাঁদাবাজি করে থাকে। আমার কারণে তাদের এই চাঁদাবাজি বিঘ্নিত হচ্ছে। সেজন্য তারা আমার কাছে ৩০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেছে ও আমাকে হত্যা করার চেষ্টা করেছে। আমি বাবু গাজীসহ সকল অভিযুক্তদের দ্রুত সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
এব্যাপারে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য বাবু বলেন, আমি কিছুই জানিনা কোথায় কি হয়েছে, আমার বিরুদ্ধে এধরনের অভিযোগ মিথ্যা ।
এ বিষয়ে কালীগঞ্জ থানার এস,আই আবুল হাসান এই প্রতিবেদককে জানান, খালে বাঁধ দেওয়ার নিয়ম নেই এটার জন্য কিছু মানুষের সমস্যা হচ্ছিলো এবং তদন্তে যতোটা সত্যতা পেয়েছি আমি স্যারকে জানিয়েছি।
এদিকে স্থানীয়রা জানান, ইউপি সদস্য বাবু এই খালে বাধ দিয়ে ঘের মালিকদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করে আসছে । কেউ কিছু বলতে গেলে তার ক্যাডার বাহিনী দিয়ে তাকে মারধর সহ বিভিন্ন ভাবে তার ক্ষতি করে থাকে । বাবুর কাছে চাঁদাবাজি বা গুন্ডামি নতুন নয়, সে এসিড মামলা সহ একাধিক মামলার আসামী।
দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির বিধান না করলে একের পর এক এমন ঘটনা ঘটতেই থাকবে। এমন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক যেন এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ হয় বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী ।