তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে বিদেশি কোনো চাপ নেই: ওবায়দুল কাদের

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে বিদেশি বন্ধুরা সরকারের কাছে কোনো প্রস্তাব করেনি, চাপও সৃষ্টি করেনি বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, বিএনপি তিনটি দাবি নিয়ে মাঠে নেমেছে। সরকারের পদত্যাগ, পার্লামেন্ট বিলুপ্তি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার। এ তিনটির কোনোটির ব্যাপারে বিদেশি বন্ধুরা সরকারের কাছে কোনো প্রস্তাবও করেনি, কোনো চাপও সৃষ্টি করেনি।

ওবায়দুল কাদের বুধবার সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বৈদ্যুতিক গাড়ি রূপান্তর সংক্রান্ত বৈঠক ও সক্ষমতা বৃদ্ধি বিষয়ক এক কর্মশালা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার, সরকারের পদত্যাগ এবং পার্লামেন্টের বিলুপ্তি নিয়ে বিএনপি কথা বলছে। বিদেশি বন্ধুরা এটা নিয়ে কিছু বলেনি। তবে হ্যাঁ, বাংলাদেশে তারা ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশন চায়। বিএনপির যেসব দাবি সেগুলোর বিষয়ে বিদেশিরা একটি শব্দও উচ্চারণ করেনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপিকে সংলাপ এবং নির্বাচনকালীন সরকারে ডাকা হয়নি। এখানে প্রলোভনের ফাঁদের প্রশ্ন আসে কেন? রাজনৈতিক দল হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ বিএনপির গণতান্ত্রিক অধিকার, সুযোগ নয়। আওয়ামী লীগ কেন তাদের অনুগ্রহ করবে? ডেকে আনবে। আওয়ামী লীগ তাদের কোন ফাঁদে ফেলছে না।

তিনি বলেন, বিএনপি কেন আওয়ামী লীগকে বিশ্বাস করছে না? আওয়ামী লীগ কী প্রতিশ্রুতি তাদের দিয়েছিল? নির্বাচন হবে দেশের সংবিধান অনুযায়ী, পৃথিবীর গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয় বাংলাদেশে সেভাবে নির্বাচন হবে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, গণতান্ত্রিক অধিকার তাদের (বিএনপি) নিজেদের প্রয়োগ করা উচিত, ইলেকশনে আসাটা তাদের নিজেদের বিষয়। আওয়ামী লীগ তাদের অনুগ্রহ করবে কেন? আওয়ামী লীগ কেন তাদের ডেকে আনবে? এর মানে বুঝি না, তারা কী বলতে চায়?

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, জাহাঙ্গীর আলম আওয়ামী লীগ থেকে মেয়র হয়েছিলেন, তার মা আওয়ামী লীগের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত কিনা জানা নেই। আর নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের।

এর আগে কর্মশালায় সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী বলেন, উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ঢাকার রাস্তায় চলবে বৈদ্যুতিক গণপরিবহণ। সেই লক্ষ্যে চলতি বছরের শেষদিকে বিআরটিসি বহরে ১০০টি দোতলা বৈদ্যুতিক বাস যুক্ত হতে যাচ্ছে। এর মধ্যে ৮০টি ঢাকা নগরীতে আর ২০টি ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে চলবে। তিনি বলেন, কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ কমানোই হবে এর লক্ষ্য। বিআরটি প্রকল্পেও চলবে বৈদ্যুতিক গণপরিবহণ।

প্রকল্পটি বিশ্বব্যাংক ও সড়ক পরিবহণ মন্ত্রণালয় যৌথভাবে বাস্তবায়ন করবে। কর্মশালায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ১২টি দেশের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বড় বড় দেশগুলো কার্বন নিঃসরণের জন্য দায়ী, বাংলাদেশের মতো ছোট ছোট দেশগুলো ভোগান্তির শিকার। তাই আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে, অ্যাকশনে যেতে হবে। পাশাপাশি সবাইকে সচেতন হতে হবে।

সেতুমন্ত্রী বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে ৪ মিলিয়ন টন কার্বন নিঃসরণ কমাতে হবে। সড়ক-পরিবহণ খাতে ন্যূনতম ৩০ শতাংশ পরিবহণকে বৈদ্যুতিক গণপরিবহণে রূপান্তর করতে হবে।

সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নুরীর সভাপতিত্বে কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব হাবিবুর রহমান ও বিশ্বব্যাংকের কো-অপারেশন ম্যানেজার দানদান চেন।

Check Also

ভোমরা বন্দরে চার মাসে ৪০০ কোটি টাকা আয়

দক্ষিণবঙ্গ সাতক্ষীরার আধুনিক নিরাপদ ও পরিবেশ বান্ধব বাণিজ্যিককেন্দ্র ভোমরা স্থল বন্দর। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।