তুরস্কে প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। রোববার (১৪ মে) স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। দেশটির ইতিহাসে এটিকে ঐতিহাসিক নির্বাচন হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে। এই প্রতিবেদনে দেশটির এবারের নির্বাচন নিয়ে থাকছে টুকিটাকি কিছু তথ্য।
তুরস্কের সরকারি বার্তা সংস্থা আনাদুলু জানিয়েছে, রোববার স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় রাষ্ট্রপতি ও সংসদ নির্বাচন শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে লক্ষ লক্ষ ভোটার ভোট দিতে শুরু করেছেন।
খবরে বলা হয়েছে, এ বছর দেশটিতে ৬৪ দশমিক ১ মিলিয়নেরও বেশি লোক তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। এর মধ্যে প্রবাসে থাকা ১ দশমিক ৭৬ মিলিয়নেরও বেশি ভোটার ইতোমধ্যে তাদের ভোট দিয়ে ফেলেছেন। তুরস্কের এই নির্বাচনে নতুন ভোটার ৪ দশমিক ৯ মিলিয়নের বেশি। আর এই নতুন ভোটাররাই দেশটির এবারের নির্বাচনে ফলাফল নির্ধারণে বড় ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে।
আনাদুলু জানিয়েছে, সুষ্ঠুভাবে ভোট সম্পন্ন করতে তুরস্কের নির্বাচন কমিশন সারা দেশে ভোটারদের জন্য মোট ১ লাখ ৯১ হাজার ৮৮৫টি ব্যালট বাক্স স্থাপন করা হয়েছে।
প্রত্যেক ভোটার দুটি ভোট দেবেন। এর একটি প্রেসিডেন্ট এবং অন্যটি সংসদ সদস্য নির্বাচনের জন্য। উভয়েরই মেয়াদ পাঁচ বছর।
প্রেসিডেন্ট পদে লড়ছেন- প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান, যিনি পুনঃনির্বাচন হতে চাইছেন, প্রধান বিরোধী প্রার্থী কামাল কিলিকদারোগ্লু এবং সিনান ওগান। এই পদের আরেক প্রতিদ্বন্দ্বী মুহাররেম ইনসে বৃহস্পতিবার প্রতিযোগিতা থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।
৩০টিরও বেশি রাজনৈতিক দল এবং ১৫০টিরও বেশি স্বতন্ত্র সংসদীয় প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
তবে নির্বাচনে পাঁচটি বহুদলীয় ব্লক তথা জোট রয়েছে। সেগুলো হলো- পিপলস অ্যালায়েন্স, নেশন অ্যালায়েন্স, অ্যান্সেস্ট্রাল অ্যালায়েন্স, লেবার অ্যান্ড ফ্রিডম অ্যালায়েন্স এবং ইউনিয়ন অব সোশ্যালিস্ট ফোর্সেস অ্যালায়েন্স৷
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই নির্বাচনের ফলাফলের ওপর নির্ভর করছে- দেশটির চলমান উন্নয়ন ও প্রভাব অব্যাহত থাকবে, নাকি তা নতুন অবস্থার দিকে মোড় নিবে। অর্থাৎ বর্তমান প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান পুনঃনির্বাচিত হলে দেশটির উন্নয়ন এবং একটি মুসলিম দেশ হিসেবে বর্তমান বিশ্বে প্রভাব বিস্তারের ধারা অব্যাহত থাকবে।
বিপরীতে প্রধান বিরোধী নেতা কামাল কিলিকদারোগ্লু নির্বাচিত হলে দীর্ঘ ২০ বছর ধরে চলা ইসলামিক ধারা ধর্মনিরপেক্ষ রূপ পরিগ্রহ করতে পারে। সেই সঙ্গে টানা দুই দশকের শাসনে এরদোগান তুরস্ককে বিশ্ব দরবারে যে প্রভাবশালী রাষ্ট্রে পরিণত করেছেন, সেখানেও ছেদ পড়তে পারে।