ভোটের লড়াইয়ে বিএনপি-জামায়াত নেতারা

কক্সবাজার পৌরসভা নির্বাচনে ভোটের মাঠে সরব রয়েছে বিএনপি-জামায়াত। মেয়র পদে বিএনপি থেকে কেউ প্রার্থী না হলেও জামায়াত সমর্থিত একজন হেভিওয়েট প্রার্থী রয়েছেন। ৯ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও ১টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে জেলা মহিলা দলের সভানেত্রীসহ ১৭ জন বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা লড়ছেন। যাদের অধিকাংশই মূলদল বিএনপি ও অংগসংগঠনের জেলা কমিটির দায়িত্বশীল পদে রয়েছেন।

এ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা। তবে নির্বাচনে যারা লড়ছেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জেলা ও কেন্দ্রীয় বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দ।
কক্সবাজার জেলা নির্বাচন কমিশন কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, আগামী ১২ই জুন কক্সবাজার পৌরসভা নির্বাচন। ১৬ই মে ছিল মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময়। এতে মেয়র পদে বিএনপির কোনো নেতা না থাকলেও জামায়াত নেতা সাবেক পৌর মেয়র সরওয়ার কামালসহ ৭ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। ১২টি সাধারণ ওয়ার্ডে ৬৫ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন, যার মধ্যে ১৬ জন বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী। সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরের ৪টি ওয়ার্ডে ১৬ জন লড়ছেন। এর মধ্যে ১টি ওয়ার্ডে সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে লড়ছেন জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী ও কাউন্সিলর নাছিমা আকতার বকুল।

নির্বাচন কমিশন ও বিএনপির তৃণমূলের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, কক্সবাজার পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জেলা বিএনপির সদস্য ও বর্তমান কাউন্সিলর এস আই এম আক্তার কামাল আজাদ নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

২ নম্বর ওয়ার্ডে জেলা যুবদল নেতা শাহেদুল আলম ও শহর মৎস্যজীবী দলের সভাপতি এম জাফর আলম হেলালী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। ৩ নম্বর ওয়ার্ডে জেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম মুকুল ও শহর জামায়াতের নেতা আমিনুল ইসলাম হাসান নির্বাচনে লড়ছেন। ৪ নম্বর ওয়ার্ড থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন পৌর বিএনপির নেতা ও সাবেক কাউন্সিলর সিরাজুল হক, জেলা যুবদলের সদস্য মিজানুল করিম, শহর যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আবদুল্লাহ আল মামুন রিয়া। ৫ নম্বর ওয়ার্ড থেকে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের কেউ নির্বাচনে না থাকলেও ৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর পদে লড়ছেন জেলা যুবদলের সদস্য বর্তমান কাউন্সিলর ওমর সিদ্দিক লালু ও শহর যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মোহাম্মদ শাহজাহান। ৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের ৪ জন নেতা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। তারা হলেন জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক ও বর্তমান কাউন্সিলর আশরাফুল হুদা সিদ্দিকী জামশেদ, শহর শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক সরওয়ার ওসমান টিপু, জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. জাহেদুল হক ও কক্সবাজার সিটি কলেজ ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক শামশুল আলম। ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড থেকে বিএনপি-জামায়াতের কোনো নেতাকর্মী নির্বাচনী মাঠে না থাকলেও ১০ নম্বর ওয়ার্ড থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন শহর শ্রমিক দলের সভাপতি আবছার কামাল। ১১ নম্বর ওয়ার্ডে শহর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম রিটন ও ছাত্রদল নেতা মো. মাইন উদ্দীন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। এ ছাড়া ১২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ও কক্সবাজার পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র জিসান উদ্দিনের ছোট ভাই যুবদল নেতা শহিদুল ইসলাম শহিদ মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। তা ছাড়া কক্সবাজার পৌরসভার ১০, ১১ ও ১২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন জেলা মহিলাদলের সভানেত্রী ও বর্তমান কাউন্সিলর নাছিমা আকতার বকুল।
এ বিষয়ে পৌর বিএনপির সভাপতি রফিকুল হুদা চৌধুরী বলেন, কেন্দ্র থেকে সব ধরনের নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা রয়েছে। এই ঘোষণা সবার জন্য প্রযোজ্য। দলের সিদ্ধান্ত না মেনে কেউ যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, যারা মনেপ্রাণে জিয়ার আদর্শ, বিএনপির আদর্শ ধারণ করে, তারা নির্বাচন থেকে অবশ্যই সরে দাঁড়াবেন।

কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি শাহাজাহান চৌধুরী বলেন, ‘কক্সবাজার পৌর নির্বাচনে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের কতজন নেতাকর্মী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন, আমার জানা নেই। তবে আমি বিষয়টি ব্যক্তিগত ও দলীয়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে তালিকা করছি। নির্বাচনে যারাই লড়ছে, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

কক্সবাজার জেলা বিএনপির দায়িত্বপ্রাপ্ত চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান শামীম বলেন, কক্সবাজার পৌর নির্বাচনে বিএনপির নেতাকর্মীরা লড়ছেন এমন তথ্য তার জানা নাই। যদি কেউ নির্বাচনে থাকে তাদের বিরুদ্ধে গাজীপুর সিটি বিএনপি নেতাদের বেলায় যেমন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, ঠিক একই ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

কক্সবাজার জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এস এম শাহাদাত হোসেন বলেন, পৌর নির্বাচনে ৭ জন মেয়র পদে, কাউন্সিলর পদে ৬৫ ও নারী কাউন্সিলর পদে ১৬ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। এসব মনোনয়নপত্র ১৮ মে বাছাই করা হবে এবং ২৫ মে পর্যন্ত প্রত্যাহারের শেষ সময় রয়েছে। ভোট হবে ইভিএমে ১২ই জুন। তিনি আরও বলেন, পৌরসভার ১২ ওয়ার্ডের বর্তমান ভোটার সংখ্যা ৯৪ হাজার ৮০২। যার মধ্যে পুরুষ ৪৯ হাজার ৮৭৯ ও নারী ভোটার ৪৪ হাজার ৯২৩ জন। সর্বশেষ নির্বাচন হয় ২০১৮ সালের ২৫ জুলাই।

Check Also

ভোমরা বন্দরে চার মাসে ৪০০ কোটি টাকা আয়

দক্ষিণবঙ্গ সাতক্ষীরার আধুনিক নিরাপদ ও পরিবেশ বান্ধব বাণিজ্যিককেন্দ্র ভোমরা স্থল বন্দর। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।