প্রেবিজ্ঞপ্তিঃ ইসলাম প্রতিষ্ঠায় যেকোন ধরনের বিপদ-আপদে সবর ও সাহসিকতার সাথে মোকাবেলা করে আগামী দিনের পথ চলতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি ও খুলনা অঞ্চল পরিচালক মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক। তিনি বলেন আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস, আন্তরিকতা, আমলে সালেহ ও আর্ত-মানবতার কল্যাণ সাধনের মাধ্যমে ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তি অর্জনের জন্য ইসলামী আন্দোলনের সর্বস্তরের জনশক্তিকে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাতে হবে।
তিনি ২৯ মে সোমবার বিকাল ০৩.১৫ মি: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী শ্যামনগর উপজেলা আয়োজিত দিনব্যাপী ভার্চুয়াল রুকন শিক্ষা শিবিরের প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
জেলা মজলিশে শূরার সদস্য ও শ্যামনগর উপজেলা আমীর মাওলানা মু. আবদুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং উপজেলা সেক্রেটারি মাওলানা গোলাম মোস্তফার সঞ্চালনায় শিক্ষাশিবিরে বিষয় ভিত্তিক আলোচনা রাখেন, সংগঠনের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা আজিজুর রহমান, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও জেলা আমীর মুহাদ্দিস রবিউল বাশার, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও জেলা সেক্রেটারি মাওলানা আজিজুর রহমান, জেলা মজলিশে শুরা ও কর্মপরিষদ সদস্য, নমিনী, সাতক্ষীরা- ০৪ (শ্যামনগর-কালিগঞ্জ আংশিক) জনাব গাজী নজরুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে দারসুল কুরআন পেশ করেন জেলা মজলিশে শুরা ও কর্মপরিষদ সদস্য ডাঃ মাহমুদুল হক। উপস্থিত ছিলেন জেলা মজলিশে শুরা সদস্য ও উপজেলা নায়েবে আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা গোলাম বারী, জেলা মজলিশে শুরা সদস্য ও উপজেলা নায়েবে আমীর মাওলানা মইনুদ্দিন মাহমুদ, উপজেলা মজলিশে শুরা ও কর্মপরিষদ সদস্য, নায়েবে আমীর অধ্যাপক ফজলুল হক, উপজেলা মজলিশে শুরা ও কর্মপরিষদ সদস্য উপজেলা সহকারী সেক্রেটারী মাওলানা আমিনুর রহমান, রেজাউল ইসলাম প্রমূখ।
মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক বলেন, ইসলামী আন্দোলনের জন্য ঘর-বাড়ী ছাড়তে হতে পারে কিন্তু কোন অবস্থায় দ্বীন ছাড়া যাবে না। দ্বীন প্রতিষ্ঠায় আমাদের অর্থের কুরবানী করতে হবে। পবিত্র কালামে হাকীমে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, প্রকৃত ব্যাপার এই যে, আল্লাহ মুমিনদের থেকে তাদের প্রাণ ও ধন-সম্পদ জান্নাতের বিনিময়ে কিনে নিয়েছেন৷ মূলত, ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে সাহাবীদের মতই উদারতার পরিচয় দিতে হবে এবং আমাদের মোয়ামেলাত তথা আচার-আচরণ সর্বোচ্চ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে; চরিত্র মাধূর্যকে করতে হবে আল্লাহর রঙে রঙীন। আর এ পথ কখনোই কুসুমাস্তীর্ণ ছিল না; এখনো নয় বরং বাধা-প্রতিবন্ধকতাই নিত্যসঙ্গী। তাই দ্বীন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে যেকোন ধরনের বিপদ-আপদ আসলে তা সবর ও সাহসিকতার সাথে মোকাবেলা করতে হবে। তাহলেই দ্বীনকে বিজয়ী আদর্শ হিসাবে প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, মুমিনের পক্ষে কোন অবস্থায় হতাশ হওয়ার সুযোগ নেই। যেকোন অনুকূল ও প্রতিকূল পরিবেশে মুমিনকে খুশী থাকতে হবে এবং ধৈর্য, সাহসিকতা, প্রজ্ঞা ও দুরদর্শিতার সাথে ময়দানে অকূতভয় সৈনিক ও অতন্ত্র প্রহরীর মত কাজ করে যেতে হবে। আল্লাহ এক্ষেত্রে আমাদের জন্য বিজয়ের সুসংবাদ দিয়েছেন। তিনি অধঃস্তনদের সাথে আচার-আচরণ প্রসঙ্গে বলেন, ঊর্ধ্বতনের উচিত অধঃস্তনদের আগে সালাম দেয়ার অভ্যাস করা। এতে ব্যক্তির অহঙ্কার দূরিভূত হয় এবং জান্নাতের নিশ্চয়তা পাওয়া যায়। তিনি ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদেরকে জীবনের সকল ক্ষেত্রে বিনয়ী ও নম্র হওয়ার আহবান জানান।
মাওলানা আজিজুর রহমান বলেন, সদস্যরা (রুকন) এই সংগঠনের মূলস্তম্ভ। বাইয়াতের মাধ্যমে আমরা জীবন পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা মৃত্যু পর্যন্ত ধরে রাখতে হবে। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় দেশ থেকে ইসলাম ও ইসলামী আদর্শ উৎখাত করার গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। সমাজের সকল স্তর ও পর্যায় থেকে ইসলামী মূল্যবোধের চর্চায় নানাবিধ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। তাই এই দেশ, জাতি ও ইসলাম বিরোধী ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় দ্বীনকে বিজয়ী আদর্শ হিসাবে প্রতিষ্ঠার জন্য প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা চেষ্টা চালাতে হবে। মূলত, দুনিয়ায় শান্তি ও আখেরাতে মুক্তির জন্য দ্বীন বিজয়ী করার কোন কোন বিকল্প নেই। তিনি দ্বীন বিজয়ের লক্ষে সকলকে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা ও সর্বোচ্চ কোরবানী পেশের আহবান জানান।
মুহাদ্দিস রবিউল বাসার বলেন, আখেরাত মুমিন জীবনের প্রকৃত সফলতা সুতরাং আখেরাতের জবাবদিহি সদা জাগ্রত থাকা প্রত্যেকের একান্ত করণীয়। পরকালীন সফলতা অর্জনে সর্বাত্মক প্রচেষ্টার মাধ্যমে দুনিয়ায় শান্তি ও আখেরাতে মুক্তির জন্য আমাদেরকে কুরআনের রজ্জুকে শক্তভাবে ধারণ করতে হবে।
মাওলানা আজিজুর রহমান (জেলা সেক্রেটারি) বলেন, ইসলামী আন্দোলনের কাজে আনুগত্যের বিকল্প নেই। আনুগত্যহীন জীবন জাহেলিয়াতের পথে পরিচালিত করে। পরামর্শ ভিত্তিক সংগঠন পরিচালনা আমাদের ঐতিহ্য।
গাজী নজরুল ইসলাম বলেন, দাওয়াত ইলাল্লাহ হচ্ছে মুমিন জীবনের অত্যাবশ্যকীয় অনুসঙ্গ। সকল নবী-রাসুল (সা.) মিশনই ছিল এটি। ইসলামী আন্দোলনের পথে বিপদ-আপদ আসবে আমাদের দৃঢ় থেকে সামনে এগিয়ে যেতে হবে আর উত্তম দাওয়াত দিতে হবে উত্তম কথা, হেকমত ও প্রজ্ঞার সাথে। তিনি দ্বীনকে বিজয়ী করতে প্রতিটি ঘরে ঘরে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছানোর জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান।
সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা মু. আবদুর রহমান বলেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের জান-মাল জান্নাতের বিনিময়ে ক্রয় করে নিয়েছেন। তাই আমাদের জীবনের প্রতিটি পদে পদে আল্লাহর পক্ষ থেকে পরীক্ষা আসবে। আর সেসব পরীক্ষায় কৃতকার্য হওয়ার জন্য রুকনদেরকে শপথের আলোকে ময়দানের সর্বশক্তি দিয়ে কাজ এবং রাতের আধারে মহান প্রভুর দরবারে ধরনা দিতে হবে। তিনি দ্বীন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সকলকে ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তোলার আহবান জানান।