শ্যামনগরে জেলে-বাওয়ালীদের মাঝে চাউল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিনিধি :
সাতক্ষীরার শ্যামনগরে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এর বিরুদ্ধে জেলে-বাওয়ালীদের মাঝে চাউল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। পাশাপাশি এই সময়েও জেলে বাওয়ালীদের কাছ থেকে জন প্রতি ২শ টাকা আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অসীম কুমার মৃধা উপস্থিত থেকে ইউপি সদস্যদের উপস্থিতিতে চাউল বিতরণ কার্যক্রম শুরু করা হয়।

সরকারের পক্ষ থেকে তিন মাস সুন্দরবন জেলেদের প্রবেশ বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে জেলেরা কর্মহীন হয়ে পড়ায় তাদের মাথাপিছু ৫৬ কেজি চাউল বরাদ্দ করে সরকার। যা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাধ্যমে বিতরণ করা চলছে।

জেলে বাওয়ালীরা অভিযোগ বলেন, সুন্দরবনে মাছ মধু ও কাঁকড়া ধরেই জীবিকা নির্বাহ করি আমরা। কিন্তু জুন- আগস্ট তিন মাস আমাদের সরকারি ভাবে সুন্দরবনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার। এই তিন মাস আমাদের জীবিকা নির্বাহের জন্য সরকারের নির্ধারিত ৫৬ কেজি চাউল বিতরণ না করে বালতির মাধ্যমে হাতে কেটে ২৬ থেকে ৩০ কেজি চাউল বিতরণ করছেন বলে অভিযোগ করেছে চাউল নিতে আসা ভুক্তভোগীরা।

মুন্সিগঞ্জ ইউপির ৪ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য কাজল সরদার জানান, আমার ওয়ার্ডে ২ শ’ জন জেলে চাউল পাবে। পরে আবার ৭৫ জন বেশি করে ২৭৫ জন করা হয়েছে। জেলেদের কাছ থেকে আপনারা চরম দুর্দিনের সময় টাকা নিয়েছেন জানতে চাইলে বলেন, চেয়ারম্যান সাহেবের বাইরে আমরা কথা বলতে পারি? তিনি আমাদের যদি টাকা নিতে না বলেন তাহলে আমরা কেন টাকা নিতে যাব।
তিনি কাদের সাথে সমন্বয় করে এভাবে চাউল দিচ্ছে আমার জানা নেই। দেখেন আমরা তো চাউল বাড়ি নিয়ে যাচ্ছি না ভেঙে ভেঙে দিলেও তো দিচ্ছি সবাইকে।
২ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলাম পল্টু বলেন, আমাদের কাছে না শুনে আপনি চেয়ারম্যান সাহেবের কাছে শুনেন তিনি কিভাবে দিচ্ছেন, রশিদ দিয়ে কিভাবে টাকা নিচ্ছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরও ২ ইউপি সদস্য বলেন ভাই আমাদের উপরে যে জুলুম চালায় সেটা তো আর আপনাকে বুঝিয়ে বলতে পারবোনা তিনি পুরনো চেয়ারম্যান বলেন আমি যা বলছি তাই কর বাকিটা আমি দেখব।

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা তুষার কান্তি মজুমদার জানান, মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের চাউল পাবে ১১৯৩ জন জেলে। ওখানে জেলে আছে ৩৩ শ’ জন, প্রতিজন জেলে চাউল পাবে ৫৬ কেজি, চেয়ারম্যান বাবুর সাথে আমার কথা হয়েছে, তিনি জানালেন অনেক জেলে দুজন তিনজনরে ভাগ করে করে দিচ্ছে, আমি বলেছি এমনটা নিয়ম নেই, আপনি নিয়ম মেনে দেওয়ার চেষ্টা করেন।
মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের ট্যাগ অফিসার, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার মিনা হাবিবুর রহমান জানান, আমি ছুটিতে আছি ছুটির মাঝে চাউল বিতরণ করলে আমার কিছু করার নাই। আমাকে ফোন দিয়েছিল আমি চেয়ারম্যান কে বলে দিয়েছি চাল যেন কম না দেওয়া হয়। ফেয়ার প্রাইজের যে ডিলার আছে ওটাতে আমি সই করি, ভিজিএফ, ভিজিডি কাগজপত্র চেয়ারম্যান কখনো আমার কাছে আনে নাই, মেম্বারও আমার কাছে আনে নাই স্বাক্ষরের জন্য। বরং চেয়ারম্যানের যেখানে হাত দেওয়ার এখতিয়া নাই । ট্যাগ অফিসারদের স্বাক্ষরে মনে করেন যে ফেয়ার প্রাইসের সেখানে তাকে কার্ড দেখাতে হয় সিগনেচার নিতে হয় যেখানে এখতিয়ার নাই। যেখানে সুযোগ নাই হাত দেওয়ার সেখানে হাত বসায়। যেখানে সুযোগ আছে সেখানে তো বসাবেই।

মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অসীম কুমার মৃধা মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ফোন রিসিভ করে সাংবাদিকের পরিচয় শুনে বলেন, আমি নিয়ম মেয়ে চাউল দিচ্ছি বলে সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে দেন।

Check Also

যশোর বেনাপোল দিয়ে ভারতে প্রবেশের সময় কলারোয়ার আ’লীগ কাউন্সিলর গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিনিধি :- সাতক্ষীরা: যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।