রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত শুরু হয়েছে: মির্জা ফখরুল

মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে বিরোধী দলের রাজনীতিকদের রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দিতে সরকার চক্রান্ত শুরু করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আদালতকে ব্যবহার করে বিরোধী দলের নেতাদের যদি সরিয়ে দেওয়া যায়, তাহলে আসন্ন নির্বাচনে সরকারি দল একটা ফাঁকা মাঠ পেয়ে যাবে। এই লক্ষ্য থেকে চক্রান্ত করা হচ্ছে।

রাজধানীর নয়াপল্টনে শনিবার বিকেলে এক বিক্ষোভ সমাবেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম এ অভিযোগ করেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমান উল্লাহ আমানের বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা মামলায় সাজা দেওয়ার’ প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি এ সমাবেশ করে।

মির্জা ফখরুল সরকারি দলের উদ্দেশে বলেন, বিরোধী দলের নেতাদের সরিয়ে দিয়ে নির্বাচনে ফাঁকা মাঠ পাওয়ার সেই আশার গুঁড়ে বালি, সেটা হবে না। এ দেশের মানুষ সেটা কখনোই করতে দেবে না। মানুষ এখন জেগে উঠেছে। যতই অত্যাচার-নির্যাতন চালানো হোক, জনগণ সব রকম ত্যাগ স্বীকার তাদের অধিকার আদায় করে নেবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপির শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে ১ হাজার ২৭৫টি মামলা তারা (সরকার) নির্ধারণ করেছে। সেই মামলাগুলোতে দ্রুত সাজা দিয়ে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত শুরু করেছে। ইকবাল হাসান মাহমুদ ও আমান উল্লাহ আমানের বিরুদ্ধে সাজার রায় তারই প্রতিফলন এবং প্রথম পদক্ষেপ।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, এই হাইকোর্ট থেকেই ইকবাল হাসান মাহমুদ, আমান উল্লাহ আমান বেকসুর খালাস পেয়ে গিয়েছিলেন। সেই রায় বাতিল করে পুনরায় সে মামলা পুনরুজ্জীবিত করে অতি দ্রুত তাঁদের আবার সাজা দেওয়া হলো। অথচ একই ধরনের মামলায় আওয়ামী লীগের মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী, মহীউদ্দীন খান আলমগীর, মোহাম্মদ নাসিম বেকসুর খালাস হয়ে গেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, বিচার বিভাগকে সম্পূর্ণ দলীয়করণ করা হয়েছে। ফলে বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদতে শুরু করেছে।

বাজেটে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গরিব মানুষ
বিএনপির মহাসচিব বলেন, সরকার যে বাজেট দিয়েছে, এই বাজেটে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সাধারণ মানুষ, গরিব মানুষ, এমনকি পা কাটা ভিক্ষুকও। যার অন্য কোনো উপায় নেই, তাকে পর্যন্ত বাদ দেওয়া হয়নি।

মির্জা ফখরুল বলেন, বাজেটে সাধারণ মানুষের, গরিব মানুষের চাল, ডাল, তেল ও কৃষকের সারের দাম কমানোর কথা নেই। তিনি অভিযোগ করেন, যাঁরা আওয়ামী লীগের লোক, যাঁরা আজ চুরি করে ডাকাতি করে টাকা বানিয়েছেন, তাঁদের কী রেয়াত দেওয়া যাবে, কী করে সুবিধা দেওয়া যাবে, সেই ব্যবস্থা করা হয়েছে।

একটা ব্যাপারে তাদের মাথা বেশ গরম হয়েছে
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতির প্রসঙ্গ তুলে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘একটা ব্যাপারে তাদের মাথা একটু গরম হয়েছে, বেশ গরম হয়েছে। বিভিন্নভাবে বলার চেষ্টা করছে, এটা নাকি তাদের (সরকার) কোনো সমস্যা নয়। তাদের যদি সমস্যা না হয়, তাহলে এল কেন? যুক্তরাষ্ট্র যে ভিসা নীতি দিয়েছে, তা জাতি হিসেবে আমাদের জন্য মর্যাদাকর নয়।’

মির্জা ফখরুল জনগণের দাবি মেনে নিয়ে অবিলম্বে পদত্যাগ করে সংসদ বিলুপ্ত করে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নেতা ফজলুল হক মিলন প্রমুখ।

Check Also

তাবলীগ জামায়াতের সাদপন্থীদের নিষিদ্ধের দাবিতে সাতক্ষীরায় বিক্ষোভ-সমাবেশ

মুহাম্মদ হাফিজ, সাতক্ষীরা : তাবলীগ জামাতে সাদপন্থীদের বর্বোরিচত হামলার প্রতিবাদ ও সাতক্ষীরা জেলা আ.লীগের সহসভাপতি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।