অনলাইন ডেস্ক: দেশের মানুষ বর্তমান জালেম সরকারকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান।
তিনি বলেন, দেশ এক কঠিন সময় অতিক্রম করছে। সরকার জুলুম-নির্যাতন, গুম, খুন, লুণ্ঠন, হামলা-মামলা, দমন-উৎপীড়ন এবং জনগণের ভোটাধিকার হরণ করে দেশে জুলুমতন্ত্র কায়েম করেছে। তারা দেশ পরিচালনায় চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি ও বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিংয়ে জনগণের নাভিশ্বাস। তারল্যের অভাবে ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে। বর্তমান জালেম সরকারের ১৫ বছরের শাসনামলে জামায়াতে ইসলামীর প্রায় সোয়া লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে সাজানো ও মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদের ওপর দমন-পীড়নের স্টিমরোলার চালানো হয়েছে। দেশের মানুষ বর্তমান জালেম সরকারকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না।
শুক্রবার (৯ জুন) সকাল ৬টায় বগুড়া পূর্ব জেলার উদ্যোগে জেলা আমির অধ্যাপক নাজিমুদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং জেলা সেক্রেটারি মাওলানা মানসুরুর রহমানের সঞ্চালনায় ভার্চুয়ালি আয়োজিত নির্বাচনী কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, পুলিশ প্রশাসন আমাদের বন্ধু, প্রতিপক্ষ নয়। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় তাদের বেতন হয়। অতএব, জনগণের অধিকারের প্রতি প্রশাসনের মূল্যায়ন থাকা দরকার। তারা জনগণের নিরাপত্তা বিধানের দায়িত্ব পালন করবেন- এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
তিনি বলেন, দাওয়াতের মাধ্যমে জনগণকে সংগঠিত করতে হবে এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদেরকে দক্ষ সংগঠক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। আমাদেরকে জীবনের সর্বক্ষেত্রে আল্লাহর কোরআন ও রাসূল সা:-এর জীবনী অনুসরণ করতে হবে। আমাদেরকে যেমন নিজের ওপর, পিতা-মাতার ওপর, স্ত্রী-সন্তানের ওপর ইনসাফ কায়েম করতে হবে, তেমনি একটি ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রের প্রতি ইনসাফ কায়েম করতে হবে।
বর্তমান প্রেক্ষাপট উল্লেখ করে তিনি বলেন, যদি আগামীতে বাংলাদেশে ইসলামবিরোধী সেকুলার সরকার প্রতিষ্ঠিত হয় এবং বর্তমানে দেশে যে শিক্ষাব্যবস্থা চালু আছে তা যদি অব্যাহত থাকে, তাহলে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ইসলামের ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং ইসলামের সৌন্দর্য সম্পর্কে তাদের কোনো ধারণা থাকবে না। এজন্য কেয়ারটেকার সরকার, কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের মুক্তি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, অসহনীয় লোডশেডিংসহ বিভিন্ন ইস্যুতে আগামীতে সময়, অর্থ ও সর্বোচ্চ ত্যাগের মাধ্যমে আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে।
বিশেষ অতিথি সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও বগুড়া অঞ্চল পরিচালক মাওলানা আবদুল হালিম বলেন, বগুড়া জেলা ইসলামী আন্দোলনের জন্য এক ঊর্বর ময়দান। এই ময়দানে শায়িত আছেন শহীদ আব্দুল মালেক। শহীদ আব্দুল মালেক যে চেতনা বুকে ধারণ করে বুকের তাজা রক্ত দিয়ে ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদেরকে প্রেরণা দিয়ে গেছেন, আপনারা তার উত্তরসূরী। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বেই আমাদেরকে সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে হবে এবং সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে হবে।
আরো বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও রাজশাহী অঞ্চল পরিচালক অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দিন, বগুড়া অঞ্চল টিম সদস্য অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ জেলা আমির মাওলানা শাহিনূর আলম, বগুড়া জেলা পশ্চিম শাখার আমির ও বগুড়া অঞ্চল টিম সদস্য মাওলানা আব্দুল হক সরকার, বগুড়া শহর শাখার আমির মাওলানা আবিদুর রহমান সোহেল, বগুড়া জেলা পূর্বের নায়েবে আমির অধ্যাপক আব্দুল বাসেদ ও শেরপুর উপজেলা আমির মাওলানা দবিবুর রহমান প্রমুখ।
পরিশেষে সম্মেলনের সভাপতি সকলকে ধন্যবাদ ও আগামী দিনে কর্মী হিসেবে কাঙ্ক্ষিত ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়ে সম্মেলনের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি