সন্ত্রাসী হামলায় মানবজমিন সাংবাদিক নিহত

সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হয়েছেন সাংবাদিক গোলাম রব্বানি নাদিম। দীর্ঘ ১৪ ঘণ্টা মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে হেরে যান তিনি। তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে জামালপুরে শোকের ছায়া নেমে আসে। সাংবাদিক সমাজ নাদিমের উপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।

সাংবাদিক গোলাম রব্বানি নাদিম দৈনিক মানবজমিন-এর জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি ছিলেন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়েছে। এর আগে বুধবার রাত ১০টার দিকে বকশীগঞ্জ উপজেলার পাটহাটি এলাকায় তিনি সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন।

নিহতের সহকর্মী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার রাত ১০টার দিকে পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে বাড়ি ফিরছিলেন নাদিম। পথিমধ্যে পাটহাট এলাকায় নাদিমের ওপর একদল সন্ত্রাসী হামলা চালায়। এ সময় তাকে ব্যাপক মারধর করা হয়। এক পর্যায়ে অচেতন হয়ে পড়লে সস্ত্রাসীরা তাকে ফেলে পালিয়ে যায়। স্থানীয় লোকজন গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।

অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য বুধবার রাত ১২টার দিকে তাকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

তার অবস্থা আরো সংকটাপন্ন হওয়ায় আজ সকালে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানে তার মৃত্যু হয়।
গোলাম রব্বানির স্ত্রী মনিরা বেগম সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেছেন, সংবাদ প্রকাশকে কেন্দ্র করে বকশীগঞ্জ উপজেলার সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম অসস্তুষ্ট হয়েছিলেন। তিনি এর আগেও নানাভাবে হেনস্তা করার চেষ্টা করেছেন। তার লোকজনই এই হামলা চালিয়েছেন। তিনি জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।

জামালপুরের পুলিশ সুপার নাছির উদ্দিন আহমেদ বলেন, পুলিশের পাঁচটি টিম মাঠে কাজ করছেন। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে হামলাকারীরা গ্রেপ্তার হবেন। ওই সাংবাদিকের চিকিৎসা ও পরবর্তীতে মৃত্যুর ঘটনায় পরিবারের সদস্যরা ব্যস্ত থাকায় এখনো থানায় মামলা হয়নি।

ঘটনার প্রতিবাদে বিকাল ৫ টায় বকশীগঞ্জ উপজেলা প্রেক্লাবসহ বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি শেষে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। সাংবাদিকরা বলেন, সাংবাদিক নাদিমকে যারা হত্যা করেছে তারা চিহ্নিত সন্ত্রাসী। তাদের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি জানান। অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন প্রেসক্লাবের সভাপতি শাহীন আল আমীন, জিএম বাবু, শাহ্ জামাল।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু দাবি করেন, তার সঙ্গে সাংবাদিক গোলাম রব্বানি নাদিমের কোনো শত্রুতা নেই। এ হামলায় তার কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা নেই। এরআগে গত ১১ই এপ্রিলও নাদিমের ওপর একবার হামলার ঘটনা ঘটে। সংবাদ প্রকাশকে কেন্দ্র করে তার ওপর ওই হামলা করা হয়েছিল।

Check Also

ভোমরা বন্দরে চার মাসে ৪০০ কোটি টাকা আয়

দক্ষিণবঙ্গ সাতক্ষীরার আধুনিক নিরাপদ ও পরিবেশ বান্ধব বাণিজ্যিককেন্দ্র ভোমরা স্থল বন্দর। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।