মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফর নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ‘ওখানে আমার ওকালতি করার প্রয়োজন নেই’

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে কী আলোচনা করবেন, সেটা তাঁদের বিষয়। সেখানে বাংলাদেশের ওকালতি করার প্রয়োজন নেই বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন। সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিজ দপ্তরে তিনি এ কথা বলেন।

মোদির আসন্ন যুক্তরাষ্ট্র সফর নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কোন দেশ কোথায় কী বিষয়ে আলাপ করবে, সেটা তাদের বিষয়। ওই দেশের কে কী নিয়ে আলাপ করবেন, এটা নিয়ে আপনার দুশ্চিন্তা কেন? ভারতের দেশপ্রেম অত্যন্ত পরিপক্ব ও অত্যন্ত সমৃদ্ধ। দেশটি পরিপক্ব একটি গণতান্ত্রিক দেশ। তাঁরা যেটা ভালো মনে করবেন, সেটাই আলাপ করবেন। ওখানে আমার (বাংলাদেশ) ওকালতি করার প্রয়োজন নেই।’

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২১ জুন নিউইয়র্ক পৌঁছাচ্ছেন। পরদিন হোয়াইট হাউসে তাঁকে অভ্যর্থনা জানাবেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। সেখানে দুই নেতার আলোচনায় সম্প্রতি বাংলাদেশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত নতুন ভিসা নীতির বিষয়ে কথা হবে বলে দিল্লি ও ঢাকার কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনকে দেশটির কংগ্রেস সদস্যদের দেওয়া চিঠির বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চিঠিতে কিছু তথ্যের গরমিল আছে, ভুল আছে। মিথ্যা তথ্য আছে। যাঁদের লবিস্ট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তাঁরা মিথ্যাচার করছেন। যেমন একটা মিথ্যা হলো তাঁরা বলছেন, গত কয়েক বছরে শেখ হাসিনার সরকারে হিন্দুরা নির্যাতিত হয়েছেন। ৬০ শতাংশ হিন্দু বাংলাদেশ থেকে পালিয়েছেন। এটা তো সত্য নয়। খ্রিষ্টানদের ওপর অত্যাচার হয়েছে। এটা তো সত্য নয়। এসব বিষয় গণমাধ্যমে তুলে ধরার আহ্বান জানান তিনি।

তাহলে সরকারের পক্ষ থেকে লবিস্ট নিয়োগ দেওয়া হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আমাদের লবিস্ট নেই। আমরা বাদ দিয়েছি; বরং যাঁরা লবিস্ট নিয়োগ দিয়েছেন তাঁদের বলছি, আল্লাহর ওয়াস্তে দেশটারে ধ্বংস করার তালে থাকবেন না।’

কারও নাম উল্লেখ না করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিদেশে লবিস্ট (তদবিরকারী) নিয়োগকারীদের প্রতি দেশে কীভাবে আরও জ্বালানি পাওয়া যায়, কীভাবে কর্মসংস্থান বাড়ানো যায়, কীভাবে বিনিয়োগ বাড়ানো যায়, এ জন্য লবিস্ট নিয়োগের অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, ‘তাতে দেশের মঙ্গল হবে। দেশ তো আমার আপনার সবার। সুতরাং দেশকে ধ্বংস করে লাভ নেই। যাঁরা লবিস্ট নিয়োগ দেবেন, তাঁরা যেন দেশের মঙ্গলের বিষয়টি মাথায় রাখেন।’

তাঁরা চিঠি লিখতে পারেন, উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, মিথ্যা তথ্য দেবেন কেন? তিনি বলেন, ‘আমি একজন শিক্ষক। সারা জীবন শিক্ষকতা করেছি। আমার দুঃখ লাগে, যখন দেখি মিথ্যা তথ্যের ছড়াছড়ি। যুক্তরাষ্ট্রকে বলেছি, “তোমরা তথ্য যাচাই-বাছাই করে দেখো। কোনটা সত্য, কোনটা মিথ্যা। তারপর সিদ্ধান্ত নাও। এটি না করলে ভুল হবে।” আমার শিক্ষার্থীদেরও বলেছি, “সত্য-মিথ্যা যাচাই করো।”’

Check Also

ভোমরা বন্দরে চার মাসে ৪০০ কোটি টাকা আয়

দক্ষিণবঙ্গ সাতক্ষীরার আধুনিক নিরাপদ ও পরিবেশ বান্ধব বাণিজ্যিককেন্দ্র ভোমরা স্থল বন্দর। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।