স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে দ্বিধা করবে না যুক্তরাষ্ট্র: মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর

যুক্তরাষ্ট্র নিজের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় ও ক্ষেত্রে পদক্ষেপ নিতে দ্বিধা করবে না বলে জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখ্য উপমুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল।

বুধবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা জানান।

প্রেস ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এখন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে আছেন। তার যুক্তরাষ্ট্র সফরের আগে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান সাক্ষাৎ করেছেন।

সেই সাক্ষাতে অজিত দোভাল বলেছিলেন, প্রতিবেশীদের ব্যাপারে অন্য দেশের এমন কোনো উদ্যোগ নেওয়া উচিত হবে না, যা ভারতের জাতীয় স্বার্থে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। শীর্ষস্থানীয় ভারতীয় দৈনিক তাকে উদ্ধৃত করে বলেছে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলে ভারসাম্য ও স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত করে, যুক্তরাষ্ট্রের এমন কিছু করা উচিত নয়।

উদাহরণ হিসাবে বলা হয়, বাংলাদেশে খালেদা জিয়ার শাসনামলে ১০ ট্রাক অস্ত্র ভারতের আসামের সন্ত্রাসী সংগঠন উলফার কাছে পাচার হওয়ার পথে ছিল। এটা ছিল সেই নিরাপত্তার মূল বিষয়। এ ব্যাপারে প্যাটেলের মন্তব্য জানতে চাওয়া হয়।

জবাবে প্যাটেল বলেন, আপনার কোন প্রশ্নের বিষয়ে মন্তব্য জানতে চান? তখন সাংবাদিক সুনির্দিষ্ট করে বলেন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ভারসাম্য ও স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত করে, যুক্তরাষ্ট্রের এমন কিছু করা উচিত নয়-এ ব্যাপারে তিনি পররাষ্ট্র দপ্তরের মন্তব্য জানতে চান।

তখন জবাবে প্যাটেল বলেন, এ বিষয়ে আমি দুটি কথা বলব। প্রথমত, যুক্তরাষ্ট্র নিজের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় ও ক্ষেত্রে নিজেকে জড়াতে এবং পদক্ষেপ নিতে দ্বিধা করবে না। তবে বিষয়টি যেহেতু ওই অঞ্চলের সঙ্গে সম্পর্কিত, সেক্ষেত্রে ভারত যুক্তরাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। আমি ইতোমধ্যেই বলেছি, উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক এলাকা বজায় রাখতে ভারতীয় অংশীদারদের সঙ্গে আমরা সহযোগিতার ভিত্তিতে কাজ করি।

পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখ্য উপমুখপাত্র আরও বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে সম্মিলিতভাবে বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করি এবং উন্মুক্ত, সমৃদ্ধ, নিরাপদ, স্থিতিশীল ও প্রাণবন্ত বিশ্ব ও ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল (দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াসহ) প্রতিষ্ঠায় কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে আমাদের ভারতীয় অংশীদারদের সঙ্গে আমরা সম্পর্ক আরও গভীর করতে চাই।’

প্রেস ব্রিফিংয়ে আরেকজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে ৭৫ কংগ্রেস সদস্য এবং ১৮ জন সিনেটর প্রেসিডেন্ট বাইডেনের কাছে চিঠি লিখেছেন।

বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী মোদির মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে মার্কিন আইনপ্রণেতারা চিঠি লিখেছেন। তিনি (মোদি) মুসলমানদের সঙ্গে যে আচরণ করেন, বিশেষ করে সাংবাদিকদের সঙ্গে যে আচরণ করেন, সে বিষয়ে তারা চিঠিতে লিখেছেন। কিন্তু মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরকে এ নিয়ে কখনো নিন্দা জানাতে শোনা যায়নি।

জবাবে প্যাটেল বলেন, আমরা বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশের মানবাধিকার নিয়ে কথা বলে আসছি। আমরা বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গেও এ নিয়ে কথা বলি। আমরা নিয়মিতভাবে ধর্মীয় স্বাধীনতা, বিশ্বাসের স্বাধীনতাসহ যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকারসংক্রান্ত উদ্বেগের বিষয়ে আমাদের উচ্চপর্যায়ে কর্মকর্তারা কথা বলে থাকেন। আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি হচ্ছে- সুরক্ষিত, সমৃদ্ধ, গণতান্ত্রিক ও বহুত্ববাদী ভারতই হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের স্বাভাবিক অংশীদার। আমি নিশ্চিত আমাদের ভারতীয় অংশীদারদের দৃষ্টিভঙ্গিও ঠিক আমাদের মতোই।

মোদির বর্তমান যুক্তরাষ্ট্র সফর কীভাবে অন্য সফরগুলোর চেয়ে আলাদা এমন প্রশ্নের জবাবে প্যাটেল বলেন, এটি রাষ্ট্রীয় সফর। তাই আগের দ্বিপক্ষীয় সফরগুলোর চেয়ে এই সফর একটু আলাদা। তবে সত্যিকার অর্থে, এই সফরকে অন্যান্য সফরের সঙ্গে তুলনা করা যায় না। এটি ভারতীয় অংশীদারদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ককে আরও গভীর, প্রসারিত ও শক্তিশালী করার সফর।

Check Also

ভোমরা বন্দরে চার মাসে ৪০০ কোটি টাকা আয়

দক্ষিণবঙ্গ সাতক্ষীরার আধুনিক নিরাপদ ও পরিবেশ বান্ধব বাণিজ্যিককেন্দ্র ভোমরা স্থল বন্দর। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।