এবার ঢাকায় এক চিকিৎসকের নিবন্ধন ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি)। এক শিশুর মৃত্যুতে চিকিৎসায় গাফিলতি প্রমাণিত হওয়ায় এ শাস্তির মুখে পড়লেন চিকিৎসক। বিএমডিসির রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মো. লিয়াকত হোসেন স্বাক্ষরিত গত বুধবারের অফিস আদেশে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়। বিষয়টি শনিবার জানাজানি হয়।
কেয়ার হাসপাতালে ২০২১ সালে ১১ মাসের এক শিশুর মুখে আংশিক তালু কাটার অস্ত্রোপচারের পর শিশুটির মৃত্যু হয়। গাফিলতি প্রমাণিত হওয়া অধ্যাপক ডা. বিজয় কৃষ্ণ দাস কেয়ার হাসপাতালের চিকিৎসক।
সম্প্রতি স্বাভাবিক সন্তান প্রসবের আশায় ঢাকার সেন্ট্রাল হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা তরুণী মাহবুবা রহমান আঁখি ও তার নবজাতকের অস্ত্রোপচারের পর মৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসায় অবহেলার বিষয়টি বেশ সমালোচিত হয়।
চিকিৎসকদের তদারকি সংস্থা বিএমডিসির আদেশ অনুযায়ী, গত বৃহস্পতিবার থেকে ডা. বিজয় কৃষ্ণ দাসের নিবন্ধন স্থগিত কার্যকর হবে। এতে করে নিয়ম অনুযায়ী তিনি আগামী ছয় মাস চিকিৎসা সেবা দিতে পারবেন না; এমনকি কোথাও চিকিৎসক হিসেবেও পরিচয় দিতে পারবেন না।
অভিযোগের বিষয়ে আদেশে বলা হয়েছে, ‘কাউন্সিল অভিযোগকারী এবং চিকিৎসক উভয়ের সাক্ষাৎকার গ্রহণ ও তদন্তে চিকিৎসাকার্যে চিকিৎসকের যথেষ্ট গাফিলতি ছিল তা প্রমাণিত হয়েছে।’ বলা হয়, ডা. বি কে দাসের (বিজয় কৃষ্ণ দাস) মাধ্যমে ১১ মাসের শিশু সন্তানের মুখে আংশিক তালু কাটার অস্ত্রোপচার করতে এসে শিশুটির মৃত্যু হয়। শিশুটির বাবা ও মা কাউন্সিলে অভিযোগ দেন।
এমতাবস্থায় বিএমডিসি আইন, ২০১০ (৬১ নং আইন) এর ২৩ (১) ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সংস্থা থেকে প্রদত্ত অধ্যাপক ডা. বি কে দাসের রেজিস্ট্রেশন (অ-১৬৮৮৬, ছয় মাসের জন্য স্থগিত করা হলো। স্থগিত আদেশ ২২ জুন ২০২৩ তারিখ থেকে কার্যকর হবে। উল্লেখিত সময়ে বিএমডিসি আইন, ২০১০ (৬১ নং আইন) এর ধারা ২২ (১) অনুযায়ী তিনি কোথাও কোনোরূপ চিকিৎসা সেবা দিতে পারবেন না। এমনকি ওই সময়ে তিনি নিজেকে চিকিৎসক হিসেবে পরিচয় দিতে পারবেন না।
অভিযোগ বলা হয়েছিল, ২২ আগস্ট দুপুরে অস্ত্রোপচারের পর পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ডে দেওয়া হয়েছিল আযানকে। অপারেশন থিয়েটার থেকে বের করার পর থেকে আযানের নাক-মুখ দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিল। ওই সময় ওয়ার্ডে কোনো চিকিৎসক ছিলেন না।
ওই সময় লিখিত ব্যাখ্যায় ওই চিকিৎসক অভিযোগ অস্বীকার করে শিশুটির মৃত্যুতে দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন। তবে নিবন্ধন স্থগিতের আদেশের পর ডা. বি কে দাসের বক্তব্য জানা যায়নি।