সচ্চিদানন্দ দে সদয়, আশাশুনি: আশাশুনি উপজেলার শোভনালী ইউনিয়নে কামালকাটি পূর্ব পাড়া হতে কাটাখালী গ্রাম পর্যন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ডে বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অনিয়মের প্রতিবাদ জানাতে গেলে চাঁদাবাজির অভিযোগ আনা হয় বলে এলাকাবাসী জানান। বাপাউবো, সাতক্ষীরা পওর বিভাগ-১ এ অধীন “সাতক্ষীরা জেলার পোল্ডার ১, ২, ৬-৮ এবং ৬-৮ (এক্সটেনশন) এর নিস্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন” শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় পোল্ডার-১ এর কাটাখালী নামক স্থানে বাঁধের কিঃ মিঃ ২৮.০০০ হতে ৩১.৭০০ পর্যন্ত ৩.৭০০ কিঃমিঃ বাঁধ পুনরাবতিকরণ কাজ চুক্তিমূল্য ৪ কোটি ২২ হাজার ৯৪১ টাকায় কাজ করছে ঢাকার এসবি-ইফবি জেভি) নামক প্রতিষ্ঠান। মাটির কাজের হাইট ১ মিটার থেকে ২ মিটার, টপ ১৭ ইঞ্চি এবং স্লোব ১.৩ ও ১.২। কাজ প্রায় শেষ পর্যায় রয়েছে। এলাকাবাসী জানান, কাজে মূল বাঁধের দু’পাশে নির্ধারিত স্থান দিয়ে মাটি না ফেলে কোন কোন স্থানে অনিয়ম করা হয়েছে। বাঁধের কমপক্ষে ১০ ফুট দূর থেকে মাটি কাটার কথা থাকলেও কোথাও কোথাও স্লোবের পাশ থেকেই স্টেমিটার মেশিন দ্বারা মাটি কেটে বাঁধে দেওয়া হয়েছে। ফলে অনেক স্থানে স্লোব খাড়া হয়ে গেছে। অনেকের যাতয়াত পথ, পুকুরের বাঁধ, মৎস্য ঘেরের বাঁধ থেকে মাটি নেওয়ায় হুমকীপূর্ণ বা একাকার হয়ে গেছে। যাতয়াত পথ, উঠান রক্ষা, সামান্য দূর থেকে মাটি আনতে হলে বাড়ির মালিকদেরকে ৫০০০ থেকে বড় অংকের টাকা দিতে হয়েছে বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেন। এছাড়া মূল বাধের মাঝখানে কয়েক ফুট মাটি কেটে গর্তের সৃষ্টি করে সেখানে মাটি ফেলান হয়েছে। এলাকাবাসীর দাবী বাঁধের মাঝে মধ্যে এমনভাবে মাটি কেটে গর্ত করে পুনরায় সেখানে বাইরের মাটি দ্বারা পুরন করা হয়েছে। এতে কাজে মাটির ব্যবহার বেশী দেখানোর পরিকল্পনা রয়েছে বলে তারা দাবী করেন। বাঁধে গর্ত করে মাটি কেটে নিয়ে সেখানে নরম মাটি ফেলে টোটাল কাজ বেশী দেখানোর ষড়যন্ত্র এলাকাবাসী বুঝতে পেরে কিছুদিন ধরে প্রতিবাদ জানালেও টালবাহনা ও কানে নিতে দেখা যায়নি। বাধ্য হয়ে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে শক্ত ভাবে প্রতিবাদ করলে প্রতিবাদকারীরা চাঁদা দাবী করেছে বলে অপপ্রচার করা হয়। স্থানীয় আমিরুল ইসলাম জানান, অনেক স্থানে মূল বেড়ী বাঁধের মাঝখানে মাটি কেটে ৬/৭ ফুট চওড়া ও ২/৩ ফুট গর্ত করে সেখানে নরম মাটি দিয়ে অনেক স্থানে বাধের কাজ করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ যখন ফাইনাল মাপ দিবেন তখন মাটির কাজ বেশী দেখানো পরিকল্পনা মাথায় রেখে একাজ করা হচ্ছে। সবশেষ বৃহস্পতিবার এভাবে গর্ত না করতে বলা হয়, ওয়াপদার একজন কর্মকর্তাও গর্ত না করতে বলে যান। কিন্তু তারপরও শুক্রবার গর্ত করা হয়। নিষেধ করলে পরবর্তীতে চাঁদা চাওয়া হয়েছে এমন মিথ্যাচার করে প্রতিবাদ রোধে অপচেষ্টা চালান হয়। খবর পেয়ে পুলিশ, সাংবাদিক ও এলাকার মানুষ ঘটনাস্থলে আসলে টাকা চাওয়ার কথা অস্বীকার করলেও ছলনাময়ী কথাবার্তা বলা হয়। স্থানীয় কার্ত্তিক মন্ডল, সিরাজুল ইসলামসহ অনেকে জানান, মেশিন দিয়ে ঘেরের বাঁধ, পথঘাট, স্লোবের গা ঘেষে মাটি কাটা হয়েছে। বাধ্য করে অনেকের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে বলে তারা জানান। কাজের দায়িত্বে থাকা সাব কন্ট্রাক্টর আছাদুল ইসলাম জানান, আমরা নিয়ম মত কাজ করে এসেছি। মাটি না থাকায় এবং মানুষের ক্ষতি না হয় সেদিকে খেয়াল রেখে কাজ করে যাচ্ছি। যেখানে মাটি নরম সেখানে মাটি ধরে রাখার জন্য গর্ত করে নরম মাটি ফেলান হয়েছে। যাদের মাটি নেই তারা দূর থেকে মাটি আনার জন্য স্বেচ্ছায় সামান্য খরচ দিয়েছেন। কোন অনিয়ম হয়নি, অনিয়ম হলে পাউবো কর্মকর্তাগণ অবশ্যই ব্যবস্থা নিতেন। সংশ্লিষ্ট শাখা কর্মকর্তা এসও এসএম সাইদুজ্জামান এর ০১৩১৮২৩৫৬৮৮ নম্বরে দীর্ঘ সময় রিং করেও বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেওয়া হয়নি। এলাকাবাসী অভিযোগ তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহন এবং বাঁধটি দীর্ঘস্থায়ী হয় সে জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
Check Also
যশোর বেনাপোল দিয়ে ভারতে প্রবেশের সময় কলারোয়ার আ’লীগ কাউন্সিলর গ্রেপ্তার
নিজস্ব প্রতিনিধি :- সাতক্ষীরা: যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভার …