সেপ্টেম্বরে জামায়াতের ‘আন্দোলন’ পরিকল্পনা

জুলাইয়ে সিলেট, চট্টগ্রাম ও কুমিল্লায়; আগস্টে রাজশাহী, খুলনা ও রংপুরে ছয় সমাবেশের অনুমতি চাইবে দলটি

বিএনপির সঙ্গে মিল রেখে মধ্য জুলাই থেকে সমাবেশ করতে চাইছে এক যুগ পর প্রকাশ্য রাজনীতিতে আসা জামায়াতে ইসলামী। এরই মধ্যে আগামী ১৫ জুলাই সিলেট শহরের রেজিস্টারি মাঠে সমাবেশ করার অনুমতি চেয়েছে। ২২ জুলাই চট্টগ্রাম ও ২৯ জুলাই কুমিল্লায় সমাবেশ করার পরিকল্পনা করছে।

আগস্টে রাজশাহী, খুলনা ও রংপুর মহানগরে সমাবেশের পর ঢাকায় ফের কর্মসূচি পালনের পরিকল্পনা রয়েছে আদালতের রায়ে নিবন্ধন হারানো জামায়াতের। দুই মাস প্রস্তুতিমূলক কর্মসূচি এবং সরকারের দিক থেকে কত বাধা আসে তা দেখে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে সেপ্টেম্বর থেকে চূড়ান্ত আন্দোলনে নামার কথা ভাবছেন জামায়াত নেতারা। বিএনপি একই সময় থেকে আন্দোলন জোরদার করার আভাস দিয়েছে। যদিও নানা ইস্যুতে দূরত্ব তৈরি হওয়া দল দুটির মধ্যে সমঝোতা বা যোগাযোগের খবর পাওয়া যায়নি। যুদ্ধাপরাধের বিচারে কোণঠাসা জামায়াত ২০১১ সালের পর প্রকাশ্য রাজনীতিতে ছিল না। ওই বছরের সেপ্টেম্বরের পর থেকে দলটির কেন্দ্রীয়সহ সব কার্যালয় বন্ধ রয়েছে। ২০১৩ সালের পর সভা-সমাবেশ করার অনুমতি পায়নি। তবে গত ২৪ মে যুক্তরাষ্ট্র নতুন ভিসা নীতি ঘোষণার পর পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে। গত ১০ জুন এক দশক পর রাজধানীতে সমাবেশ করার অনুমতি পায় জামায়াত।

গত বুধবার সিলেট মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি মোহাম্মদ শাহজান আলীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনারের কাছে সমাবেশের অনুমতি চেয়ে আবেদন করে। বিভাগীয় শহরে সমাবেশ করার পরিকল্পনা গত জুনেই নেয় জামায়াত। সিদ্ধান্ত ছিল, ১৫ জুলাই থেকে সমাবেশ শুরু হবে। প্রথমে কুমিল্লায় সমাবেশ করার অনুমতি চাওয়া হবে। কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব যোবায়ের সমকালকে বলেন, নানা দিক বিশ্লেষণ করে কুমিল্লার বদলে প্রথমে সিলেটে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সিলেটে রাজনৈতিক সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি অন্য শহরের তুলনায় ভালো।

গত বছর বিএনপি সিলেটের রেজিস্টারি মাঠে বিভাগীয় গণসমাবেশ করেছিল। এহসানুল মাহবুব যোবায়ের বলেছেন, বিএনপি বড় দল, বড় সমাবেশ করেছিল। অনুমতি পেলে জামায়াত শুধু মহানগর ও আশপাশের এলাকা নিয়ে সমাবেশ করবে। এখনও আন্দোলনের অনেক পথ বাকি। এত তাড়াতাড়ি কর্মীদের হয়রান করে লাভ নেই। কুমিল্লা মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি এমদাদুল হক মামুন বলেন, আগামী ২৯ জুলাই কুমিল্লার টাউন হলে মাঠে সমাবেশ করার অনুমতি চাওয়া হবে। ১৫ জুলাই সমাবেশ করার পরিকল্পনা ছিল। সেদিন সিলেটে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত   হওয়ায় কুমিল্লার সমাবেশ পেছানো হয়েছে। ২২ জুলাই চট্টগ্রামে সমাবেশের অনুমতি চাওয়া হবে। আগামী বছরের প্রথম সপ্তাহে সংসদ নির্বাচন হতে পারে। তপশিল ঘোষণা হতে পারে নভেম্বরের দ্বিতীয় থেকে তৃতীয় সপ্তাহে। এর আগেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে এক দফার আন্দোলন চূড়ান্ত করার কথা বলছে বিএনপি। যুগপৎ আন্দোলন নিয়ে দলটির সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হলেও জামায়াতও একই লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে বলে সূত্রের খবর। জামায়াত নেতাদের ভাষ্য, হরতাল-অবরোধের কর্মসূচি আসবে না। অনুমতি পেলে জুলাই-আগস্টে সভা-সমাবেশ করে তৃণমূলের নেতাকর্মীকে উজ্জীবিত করা হবে। এরপর আন্দোলনের দিকে যাওয়া হবে। তবে বিএনপি যদি আন্দোলনে না নামে, তাহলে জামায়াত আগ বাড়িয়ে কিছু করবে না। ঢাকা মহানগর জামায়াতের একজন নেতা সমকালকে জানিয়েছেন, দলটির নেতাকর্মীর তালিকা করছে প্রশাসন। ফলে ফের ধরপাকড়ের শঙ্কা রয়েছে।

জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল হালিম বলেন, দলীয় আমির ডা. শফিকুর রহমানসহ নেতাকর্মীর মুক্তি, তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা, দ্রব্যমূল্যের নিয়ন্ত্রণসহ প্রধান তিনি দাবিতে আন্দোলনে রয়েছে জামায়াত। তা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগের এক দফার আন্দোলনে পরিণত হবে।

Check Also

যশোর বেনাপোল দিয়ে ভারতে প্রবেশের সময় কলারোয়ার আ’লীগ কাউন্সিলর গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিনিধি :- সাতক্ষীরা: যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।