মাধ্যমিক শিক্ষা সরকারিকরণের দাবিতে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছেন শিক্ষকরা। বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বিটিএ) ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। সব মাধ্যমিক স্কুল ও উচ্চমাধ্যমিক কলেজ সরকারি করার ঘোষণা না আসা পর্যন্ত এ অবস্থান কর্মসূচি চলবে বলে দাবি করেছেন শিক্ষক নেতারা।
মঙ্গলবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়। অবস্থান কর্মসূচিতে শিক্ষকরা মাধ্যমিক শিক্ষা সরকারিকরণের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকেও শিক্ষকরা এ কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন।
বিটিএ নেতারা বলছেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা মাত্র ২৫ শতাংশ উৎসব ভাতা, ১ হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া ও ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান। একই কারিকুলামে একই সিলেবাসে পাঠদান করিয়েও সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতনে রয়েছে বিস্তর পার্থক্য। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রধানদের থেকে এক ধাপ নিচে বেতন দেয়া হচ্ছে। বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসরে যাওয়ার পর অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা পেতে বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয়। তাছাড়া বিগত কয়েক বছর যাবত অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্ট খাতে শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন থেকে অতিরিক্ত ৪ শতাংশ কেটে নেয়া হচ্ছে। এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করা হলেও প্রতিকার পাওয়া যায়নি। বর্তমান সরকার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছেন। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। শিক্ষাব্যবস্থা স্মার্ট করতে প্রয়োজন স্মার্ট শিক্ষক। তাই স্মার্ট শিক্ষক পেতে শিক্ষায় বিনিয়োগ বৃদ্ধিসহ মাধ্যমিক শিক্ষা সরকারিকরণের বিকল্প নেই।
শিক্ষক নেতারা দাবি করেন, মাধ্যমিক শিক্ষা (জাতীয় শিক্ষানীতি অনুযায়ী ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো প্রতিষ্ঠান) সরকারিকরণের ঘোষণা না আসা পর্যন্ত তারা অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন।
বৈশ্বিক অর্থনৈতিক দুরাবস্থার পরিস্থিতিতে সরকারিকরণের দাবি জানানোর যৌক্তিকতা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বিটিএর সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শেখ কাওছার আহমেদ বলেন, এখনই সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারিকরণ করতে হবে তা নয়। আমরা চাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিক তিনি মাধ্যমিক শিক্ষা সরকারিকরণ করবেন। আমরা সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণাটাই চাচ্ছি। আর এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আয় সরকারি কোষাগারে জমা নিয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা সরকারিকরণ করতে সরকারের খুব বেশি অর্থ ব্যয় করতে হবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বিটিএর সভাপতি অধ্যক্ষ মো. বজলুর রহমান মিয়াসহ ঢাকা মহানগরী ও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের শিক্ষকরা এ কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন।