জয়পুরহাটে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে পথচারীসহ উভয় দলের অন্তত ৩০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আজ মঙ্গলবার বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে শহরের রেলগেট এলাকায় বিএনপির কার্যালয়ের পেছনে এ ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষের সময় জেলা বিএনপির কার্যালয়ে ঢুকে আসবাব ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পুলিশ পাঁচটি ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় শহরে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে জেলায় জেলায় পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করে বিএনপি। জেলা বিএনপির ফয়সাল আলিম-গোলাম মোস্তফা গ্রুপ দলীয় কার্যালয়ের সামনে পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করে। এরপর বিকেল চারটায় শহরের নতুন হাট থেকে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলজার হোসেনের নেতৃত্বে পদযাত্রা শুরু হয়। সেখান থেকে বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী হাজী বদরুদ্দীন সড়ক হয়ে দলীয় কার্যালয়ে এসে জড়ো হন। এ সময় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ‘শান্তি শোভাযাত্রা’ শহর প্রদক্ষিণ শেষে দলীয় কার্যালয়ে ফিরছিল। এ সময় বিএনপির নেতা-কর্মীদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়া হয়। বিএনপির নেতা-কর্মীরাও পাল্টা ইটপাটকেল ছোড়েন। একপর্যায়ে দুই দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া শুরু হয়। একপর্যায়ে দুই দলের নেতা-কর্মীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় জেলা বিএনপির কার্যালয়ে ঢুকে আসবাব ও জানালা ভাঙচুর করা হয়। এ সময় পুলিশ সদস্যরা পাঁচটি ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ ঘটনায় শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক সরদার রাশেদ মোবারক জুয়েল প্রথম আলোকে বলেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ১২ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলজার হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ‘আমরা নেতা-কর্মীরা শহরের নতুনহাট থেকে পদযাত্রা নিয়ে জেলা বিএনপির কার্যালয়ে এসে জড়ো হয়েছিলাম। এ সময় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা অতর্কিতে আমাদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়ে দলীয় কার্যালয়ে ঢুকে ভাঙচুর করেছে। তাঁদের হামলায় আমাদের ২৫ জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছে। পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুড়েছে।’
তবে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন মণ্ডল বলেন, ‘আমরা শান্তি শোভাযাত্রা শেষে দলীয় কার্যালয়ে ফিরছিলাম। আমাদের শোভাযাত্রার পেছনে বিএনপির নেতা-কর্মীরা ইটপাটকেল ছুড়লে আমাদের ১৬ নেতা-কর্মী আহত হন। এ ঘটনার পর বিএনপি সন্ত্রাসীদের দল, সেটি প্রমাণিত হয়েছে। বিএনপির অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিএনপি আগে আমাদের ওপর হামলা করেছে। তার ভিডিও ফুটেজ আছে।’
গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহেদ আল মামুন প্রথম আলোকে বলেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সংঘর্ষের ঘটনায় ডিবি পুলিশ ৫টি ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
জয়পুরহাটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নুরে আলম বলেন, পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এখন পরিস্থিতি শান্ত আছে। ঘটনার পর শহরে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।