সাতক্ষীরা সংবাদদদাতাঃ মাওলানা আব্দুল খালেক কেমন লোক ছিলেন জানতে চাইলে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম বলেন, শাহাদাতের পর মরহুমের জানাযাই প্রমাণ করেন তিনি কেমন লোক ছিলেন। তিনি বলেন, আমরা জুলুমের শিকার। বাংলাদেশের মানুষের কাছে এমনকি বিশ^বাসির কাছে এই সত্যটা প্রমাণিত যে জামায়াতে ইসলামী একটি মজলুম দলের নাম। এই মজলুম দলের ১০জন শীর্ষ নেতা আল্লাহ তাআল্লার মেহমান হয়েছেন।
মাওলানা আব্দুল হালিম আরো বলেন, এই জানাযায় ছুটে আসতেন ডা.শফিকুর রহমান। তিনি সাত মাস ধরে কারাগারে আসেন। সূরা আহাযাবের ২৩ নং আয়াত এবং সূরা তওবার ১০৩ নং আয়াতের উদ্বৃত্ত দিয়ে তিনি বলেন,“আল্লাহ তালা বলেছেন, মুমিনদের মধ্যে এমন কিছু লোক আছে যারা আল্লাহর সাথে যে সত্যের চুক্তি ওয়াদা করে তার তা প্রমাণ করে দেখায়। অতএব তাদের মধ্যে কিছু লোক আছে যারা তাদের গন্তব্যে শাহাদাত বরণ করে আল্লাহকে দেখায়। আর কিছু লোক আছে যারা অপেক্ষ মান ” আর সূরা তওবার মধ্যে আল্লাহ তাআল্লাহ বলেন, হে ইমানদারগণ তোমরা আল্লাহকে ভয় কর আর সত্যবাদিদের আর্ন্তভূক্ত হও। তিনি বলেন, আমরা জুলুমের শিকার। বাংলাদেশের মানুষের কাছে এমনকি বিশ^বাসির কাছে এই সত্যটা প্রমাণিত যে জামায়াতে ইসলামী একটি মজলুম দলের নাম। এই মজলুম দলের পাঁচজন শীর্ষ নেতা আল্লাহ তাআল্লার মেহমান হয়েছেন। মেহমান হয়েছেন মাওলানা মতিউর রহমান নিজামি, আলি আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ, মুহাঃ কামরুজ্জামান, মীর কাশেম আলী ও আব্দুল কাদের মোল্লাহ। তিনি আরো বলেন জেল খানায় জালিমের জুলুমের শিকার হয়ে আল্লাহ তাআল্লার মেহমান হয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক নায়েবে আমীর শায়খুল হাদিস আবুল কালাম মোঃ ইউসুফ, জেল খানায় জুলুমের শিকার হয়ে আল্লাহ তাআল্লার মেহমান হয়েছেন বাংলাদেশের প্রিয় নেতা পাবনার ৫ আসন থেেেক ৫ বারের নির্বাচিত এমপি মাওলানা আব্দুস সুবহান, জেল খানায় জুলুমের শিকার হয়ে আল্লাহ তাআল্লার মেহমান হয়েছেন জামায়াতের নায়েবে আমীর অধ্যাপক একেএম নাজির আহম্মেদ। এই আট জনের পরে আল্লাহ তাআল্লার মেহমান হয়েছেন সাতক্ষীর জামায়াতের সাবেক আমীর,সাবেক সংসদ অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল খালেক। জেল খানায় উনার উপরে যে জুলুম ও কষ্ট দিয়েছে তার জবাব আগামি দিন সাতক্ষীরা মানুষ দিবে ইনশাল্লাহ। মাওলানা আব্দুল হালিম বলেন,তিনি ইউনিয়ন পরিষদেও চেয়ারম্যান ছিলেন, তিনি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন, যিনি একটি আলিয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল ছিলেন, যিনি সংসদ সদস্য ছিলেন, যিনি জেল খানায় গিয়ে হাফেজে কুরআন হয়েছেন। তিনি বলেন আমাদের বর্তমান আমিরে জামায়াত বলেছেন, তিনি যখন জেলে গেলেন তখন আব্দুল ভায়ের সাথে এক সঙ্গে থাকতেন। জেল খানায় তারাবির নামাজে আমার ইমাম হিসেবে আব্দুল খালেক তারিবর ইমামতি করেছেন। মাওলানা আব্দুল হালিম বলেন, সাতক্ষীরার মানুষ সাক্ষ্য দিচ্ছে মাওলানা আব্দুল খালেক একজন সৎমানুষ। তিনি দুর্নিতির বিরুদ্ধে অন্যােেয়র বিরুদ্ধে আপষহীন একজন নির্ভীক মানুষ। আল্লাহ তাঅল্লাহ তার শাহাদাতকে কবুল করুন। আল্লাহ তাকে জান্নাত বাসি করুন।
এদিকে গতকাল ২২ জুলাই বিকেলে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতা, সাবেক সংসদ সদস্য, অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল খালেকের কবর জিয়ারত করেছেন, বিশিষ্ট জনেরা। কবর জিয়ারত কালে তারা শহীদদের রুহের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত শেষে পরিবারের সার্বিক খোঁজ খবর নেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সাতক্ষীরা জেলা শাখার আমীর, মুহাদ্দিস রবিউল বাশার, জেলা সেক্রেটারী মাওলানা আজিজুর রহমান। মুনাজাতে অংশ নেন বাঁশদহা আলহাজ্ব মোহাম্মদ আলী দাখিল মাদ্র্াসার সহঃ সুপার মাওলানা মোঃ আবু ঈসা, কাথন্ডা আমিনিয়া আলিম মাদ্রাসার সহঃ সুপার মাওলানা জামাল উদ্দিন, মরহুমের ছেলে শামীম হাসান, মোঃ সাইফুল ইসলাম, মোহাম্মদ আনোয়ারুল ইসলাম, মোহাম্মদ নওশের আলী, মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন, আল-ফআরউক, মোহাম্মদ মহসিন, মোহাম্মদ কুরবান আলী, মোঃ কবিরুল ইসলাম, মোহাম্মদ মোর্তাজা হোসেনসহ অনেকে।
উল্লেখ্যঃ জামায়াত নেতা অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল খালেকের যুদ্ধাপধারী মামলায় ট্রাইমুনাল আমৃত্যু কারাদন্ড দিয়েছিল। ২০১৮ সালের ৫ মার্চ তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধি অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করেন ট্রাইব্যুনাল। ২০২২ সালের ২৪ মার্চ তাকে ফাঁশিতে ঝুলিয়ে মৃত্যু দন্ডের আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। সেই থেকে মৃত্যু পর্যন্ত তিনি জেল খানাতেই ছিলেন। ২০ জুলাই বৃহষ্পতিবার সন্ধা ৬টার দিকে খুলনার আড়াইশ বেড হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন। গত ২১ জুলাই তার জানাযায় লাখ মানুষের ঢল নামে। গতকালও মরহুমের কবর জিয়ারত করতে যান বিভিন্ন এলাকার মানুষ।