সরকার পতনের একদফা দাবিতে ঢাকায় গণমিছিল করেছে বিএনপি। আজ দুপুরে রাজধানীতে পৃথকভাবে এ গণমিছিল করে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি। এতে বৃষ্টি উপেক্ষা করে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। এসময় বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নেতারা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না। শেখ হাসিনা সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
বাড্ডার সুবাস্তু মার্কেটের সামনে থেকে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি গণমিছিল শুরু করে। মিছিলের আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এবার নির্বাচন নিয়ে কোন খেলা খেলতে দেয়া হবে না। এবার লড়াই জীবনপণ লড়াই। এবারের আন্দোলনে সরকারের পতন ঘটানো হবে। মানে মানে সরে না গেলে রাজপথেই সরকারের পতন ঘটানো হবে।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে ফখরুল বলেন, শেখ হাসিনার পদত্যাগের যে দাবি তা গণভবন এবং বঙ্গভবন পর্যন্ত পৌঁছাতে হবে।
ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ২০১৪-২০১৮ এর মত আবারও ক্ষমতায় যেতে চাইছে আওয়ামী লীগ। এবার জনগণ তা হতে দিবে না। সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ ভেঙ্গে দিতে হবে, শেখ হাসিনার অধীনে কোন নির্বাচন হবে না।
অন্যদিকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি কমলাপুর এলাকা থেকে গণমিছিল শুরু করে। এসময় মিছিলে যোগ দিয়ে বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস নির্বাচন প্রতিহত করার হুঁশিয়ারি দেন। তিনি বলেন, আপনারা যে নির্বাচন করতে চাচ্ছেন, সেই নির্বাচনকে অবশ্যই প্রতিহত করবো। আর এই সরকারের অধীনে কোন নির্বাচন হবে না। হতে দেয়া হবে না।
তিনি বলেন, আমাদের একটা মাত্র দাবি, এই সরকারের পদত্যাগ। তাই যতক্ষণ পদত্যাগ না করবে ততক্ষণ কর্মসূচি চলতে থাকবে। তফসিল ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু আমরা এই ইসি মানি না। এই ইসিকে নিশিরাতের ভোটের সরকার নির্বাচন করেছে। সুতরাং আমি নির্বাচন কমিশনকে বলবো, সরকারের আদেশে যে কাজ করছেন তা অন্যায় করছেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, গত ১৫ বছর ধরে লড়াই করছি। অনেক সাথীকে হারিয়েছি। অনেক গুম, পঙ্গু এবং অনেক নারী নির্যাতিত হয়েছেন। অনেকের জেল হয়েছে এবং এখনো জেল খাটছে। এই অবস্থায় একটা ফ্যাসিবাদি সরকারকে ক্ষমতায় রাখা দেশের জন্য ক্ষতি। তাই যত তাড়িতাড়ি সম্ভব তাদের বিদায় করতে হবে। তিনি বলেন, মৃত্যু হয় হবে কিন্তু এই সরকারকে বিদায় করতে হবে। আর যারা বাধা দিবে তাদের সেই বাধা ভাঙতে হবে। আর আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি। সুতরাং যারা অশান্তি সৃষ্টি করবে তাদের দাঁত ভাঙা জবাব দিতে হবে।
স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান বলেন, আমরা রাজপথে আছি। রাজপথে থাকবো। এই সরকার বিদায় না করা পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরে যাবো না। আর আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোন নির্বাচন হতে পারে না। সুতরাং এই সরকারকে বিদায় নিতে হবে। নিরপেক্ষ সরকার ও নিরপেক্ষ ইসির অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে।
গণমিছিল উপলক্ষে বেলা ১টা থেকে ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে বিএনপি ও দলটির অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মী আসতে শুরু করেন বাড্ডা ও কমলাপুরে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নেতাকর্মী বাড়তে থাকে। বিভিন্ন ইউনিট ও অঙ্গ-সংগঠনের ব্যানারে নেতাকর্মীরা আসেন দলে দলে। এসময় সরকার বিরোধী বিভিন্ন স্লোগানে গণমিছিল প্রাঙ্গণ মুখরিত করেন তোলেন ।
এদিকে ঢাকা দক্ষিণের কর্মসূচিতে বড় শোডাউন করেছে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক দল, কেন্দ্রীয় ছাত্রদল, যুবদল ও শ্রমিকদল। জহির উদ্দিন তুহিনের নেতৃত্বে প্রায় পাঁচ হাজার নেতাকর্মী গণমিছিলে অংশ নেন। বৃষ্টি উপেক্ষা করে এদিন ব্যানার, ফেস্টুন, মিছিল আর স্লোগানে প্রতিবাদ জানান তারা।