সুন্দরবন রক্ষায় বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগের প্রশংসা করেছে বিশ্ব ঐতিহ্য সংরক্ষণ-সংক্রান্ত ইউনেস্কোর সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পরিষদ। সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে চলমান ৪৫তম বর্ধিত সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এই স্বীকৃতি দেয়া হয়। প্যারিসের বাংলাদেশ দূতাবাস জানায়, ২০১৩ সালে সুন্দরবনসংলগ্ন এলাকা রামপালে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ উদ্যোগে নির্মিতব্য কয়লাভিত্তিক মৈত্রী সুপার তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট বিতর্কের পরিপ্রেক্ষিতে এই পরিষদ উদ্বেগ প্রকাশ করে। সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে চলমান উন্নয়ন কর্মকে টেকসই উন্নয়ন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে উন্নয়নের এই ধারা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি পরিবেশগত সংরক্ষণে সরকারের কর্মকাণ্ড বজায় রাখার বিষয়ে পরিষদ পরামর্শ দেয়। এ ব্যাপারে ফ্রান্সে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং ইউনেস্কোর স্থায়ী প্রতিনিধি খন্দকার এম তালহা তার প্রতিক্রিয়ায় বিশ্ব ঐতিহ্য পরিষদের সব সদস্যের প্রতি বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে ধন্যবাদ পৌঁছে দেন। তিনি আরও বলেন, এই অর্জন বিগত দেড় দশকে বৈশ্বিক জলবায়ু সংরক্ষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অগ্রণী ও নেতৃত্বের আরও একটি স্বীকৃতি। এই স্বীকৃতি বাংলাদেশকে তার টেকসই উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে।
এই সিদ্ধান্তের ফলে ২০২৯ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ সংরক্ষণ প্রতিবেদন প্রদানের বাধ্যবাধকতা থেকে অবমুক্তি লাভ করেছে। ২০১৩ সাল থেকে অদ্যাবধি বাংলাদেশ সাতবার এই প্রতিবেদন দিয়েছে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশের এই দর-কষাকষি প্রক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরীর (বীরবিক্রম) নেতৃত্বে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন সচিব ফারহিনা আহমেদ, নৌপরিবহন সচিব মোস্তফা কামাল, পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক ফাইয়াজ মুরশিদ কাজীসহ একটি কার্যকরী দল বাংলাদেশের কারিগরি অবস্থান নির্ধারণে নিরলস কাজ করেন এবং ইউনেস্কোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধিকে কূটনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য দায়িত্ব দেন।
বিজ্ঞাপন
ইউনেস্কোর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা এবং বিভিন্ন দেশের স্থায়ী প্রতিনিধিরা এই অর্জনকে বাংলাদেশের অনুকরণীয় কূটনৈতিক সাফল্য হিসেবে চিহ্নিত করেন।